সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) দুই শিক্ষার্থীসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অচেতন করে ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামলা করেছেন এক ছাত্রী। শুক্রবার বিকেলে সিলেট কোতোয়ালি থানায় মামলাটি করেন ভুক্তভোগী।

পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী শান্ত তারা আদনান ও স্বাগত দাস পার্থকে গ্রেপ্তার করে। ভুক্তভোগী তাদের সহপাঠী।

এদিকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে শুক্রবার ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর থেকে মিছিল ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। একই দাবিতে বিবৃতি দিয়েছে ছাত্রদলসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও আঞ্চলিক সংগঠন।

কোতোয়ালি থানার ওসি জিয়াউল হক জানান, ভুক্তভোগী বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানানোর পর সন্ধ্যায় দু’জনকে হাজির করা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাদের হেফাজতে নেয় পুলিশ। শুক্রবার ভুক্তভোগী মামলা করলে তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।

এজাহারে বলা হয়, গত ২ মে সন্ধ্যায় শান্ত তারা আদনান ও স্বাগত দাস পার্থের সঙ্গে ভুক্তভোগী শহরের উদ্দেশে বের হন। কিন্তু কৌশলে সুরমা এলাকার একটি মেসে নিয়ে তাঁকে অচেতন করে ধর্ষণের পর নগ্ন ছবি এবং ভিডিও ধারণ করে তারা। ঘটনা প্রকাশ করলে ছবি-ভিডিও অনলাইনে ছেড়ে দেওয়ার হুমকিও দেয় অভিযুক্তরা।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগীর অভিযোগ পেয়ে প্রক্টর অধ্যাপক মোখলেছুর রহমান তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা হিসেবে পুলিশকে জানান। পুলিশ আদনান ও পার্থকে আটক করে প্রক্টর কার্যালয়ে হাজির করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সত্যতা পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বডির নির্দেশে দু’জনকে হেফাজতে নেয় পুলিশ।

প্রক্টর জানিয়েছেন, অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন। আইন অনুসারে যা প্রয়োজন, সে ব্যবস্থা তারা নিয়েছেন।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা অব্যাহত, শুক্রবারের হামলায় আরও ৮২ ফিলিস্তিনি নিহত

ইরানের সঙ্গে যুদ্ধের মধ্যেও ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় বর্বরতা অব্যাহত রেখেছে দখলদার ইসরায়েল। স্থানীয় সময় শুক্রবার উপত্যকাটিতে আরও ৮২ জন নিহত হয়েছেন।

এরমধ্যে মধ্য গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩৭ জন। তাদের ২৩ জন ত্রাণ আনতে গিয়ে দখলদারদের হাতে নিহত হয়েছেন। গাজা সিটিতে নিহত হয়েছেন আরও ২৩ জন। আর দক্ষিণ গাজায় প্রাণ গেছে ২২ জনের। এদের মধ্যে ১১ জন ত্রাণ আনতে গিয়েছিলেন।

এদিকে গাজা যুদ্ধ চলমান থাকায় টানা দ্বিতীয় বছরের মতো শিশুদের বিরুদ্ধে গুরুতর সহিংসতার কারণে ইসরায়েলকে ‘কালো তালিকাভুক্ত’ করেছে জাতিসংঘ। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০২৪ সালে যুদ্ধপীড়িত অঞ্চলে শিশুদের ওপর সহিংসতা ‘চরম মাত্রায়’ পৌঁছেছে। এর মধ্যে গাজা এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে সবচেয়ে বেশি সহিংসতা চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

‘সশস্ত্র সংঘাতে শিশু’বিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের তুলনায় গত বছর বিশ্বব্যাপী শিশুদের বিরুদ্ধে গুরুতর সহিংসতার ঘটনা ২৫ শতাংশ বেড়েছে। ২০২৪ সালে মোট ৪১ হাজার ৩৭০টি গুরুতর সহিংসতা যাচাই করে দেখা গেছে, এর মধ্যে শিশুদের হত্যা, শারীরিকভাবে আহত করা, যৌন সহিংসতা এবং স্কুল-হাসপাতালে হামলার মতো ঘটনা রয়েছে।

এর মধ্যে শুধু ফিলিস্তিন ভূখণ্ড ও ইসরায়েলে ২ হাজার ৯৫৯ শিশুর বিরুদ্ধে ৮ হাজার ৫৫৪টি গুরুতর সহিংসতার ঘটনা নিশ্চিত করেছে জাতিসংঘ। এই সংখ্যা অনুযায়ী, গাজায় গত এক বছরে  ১ হাজার ২৫৯  ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়েছে এবং ৯৪১ জন আহত হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, নিহত শিশুর সংখ্যা আরও অনেক বেশি। জাতিসংঘ জানিয়েছে, ২০২৪ সালে গাজায় আরও ৪ হাজার ৪৭০ শিশু নিহতের তথ্য যাচাই চলছে। অধিকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ৯৭ ফিলিস্তিনি শিশুর মৃত্যুর তথ্যও নিশ্চিত করেছে জাতিসংঘ। সেখানে ৩ হাজার ৬৮৮টি শিশু অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে।

সূত্র: আলজাজিরা

সম্পর্কিত নিবন্ধ