সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা কে এম নূরুল হুদাকে প্রকাশ্যে লাঞ্ছনার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। এই ঘটনাকে দেশের সংবিধান, মানবাধিকার এবং আইনের শাসনের ওপর সরাসরি আঘাত হিসেবে অভিহিত করেছে সংস্থাটি।

সোমবার আসকের সিনিয়র সমন্বয়কারী আবু আহমেদ ফয়জুল কবিরের সই করা সংবাদ বিবৃতিতে এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২২ জুন রাজধানীর উত্তরা এলাকায় কে এম নূরুল হুদার ওপর কিছু উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি বেআইনি সমবেত হয়ে গলায় জুতার মালা পরিয়ে তাকে মারধর করে এবং পরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে ঘটনাটি স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।

বিবৃতিতে আসক জানায়, কারও বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ থাকলেও তার নিষ্পত্তির একমাত্র পথ হলো সংবিধান ও প্রচলিত আইনের নির্ধারিত প্রক্রিয়া। বিচারব্যবস্থার বাইরে গিয়ে কাউকে অপমান বা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা কেবল ব্যক্তি অধিকার লঙ্ঘনই নয়, বরং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ভিত্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

আসকের মতে, এই ধরনের ‘মব জাস্টিস’ বা গোষ্ঠীগত সহিংসতা যদি বিচারহীনতার সংস্কৃতির মধ্যে পড়ে নিয়মিত ঘটে, তাহলে তা ভবিষ্যতে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথকে আরও বিপণ্ন করবে এবং আইনের শাসনের বদলে সহিংস সংস্কৃতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার ইঙ্গিত বহন করে।

আসক আরও উল্লেখ করে, সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও অতীতে এ ধরনের অনেক ঘটনায় দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখা যায়নি।

আসক জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত উচ্ছৃঙ্খল জনতার হাতে অন্তত ৮৩ জন নিহত হয়েছেন। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে মাঝে-মধ্যে সতর্কতা উচ্চারণ করা হলেও সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ দৃশ্যমান নয়। বরং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নীরবতা এসব সহিংস গোষ্ঠীর অপকর্মে পরোক্ষ সহায়তা দিচ্ছে বলেই মনে করছে আসক।

বিবৃতিতে বলা হয়, কে এম নূরুল হুদা রাষ্ট্রের একজন নাগরিক এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা। তাকে এভাবে লাঞ্ছিত করা কেবল ব্যক্তিগত অপমান নয়, বরং এটি রাষ্ট্রীয় মর্যাদা এবং আইনের শাসনেরও লঙ্ঘন। এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি প্রতিরোধ করতে না পারলে তা গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং আইনের শাসনের ওপর গভীর আঘাত হানবে। রাষ্ট্রকে অবশ্যই কঠোর নজরদারি ও কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে এ ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধ করতে হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

কুষ্টিয়ায় র‌্যাবের অভিযানে বিলুপ্ত প্রজাতির ৬৭টি কচ্ছপ উদ্ধার

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলা থেকে বিলুপ্ত প্রজাতির ৬৭টি কড়িকাইট্টা কচ্ছপ উদ্ধার করেছে র‌্যাব। কচ্ছপগুলো বিক্রির খবর পেয়ে উপজেলার সাতবাড়িয়া বাজারে সোমবার বিকেলের দিকে ক্রেতা সেজে এই অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাব। র‌্যাব-১২ সিপিসি-১ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত সরকার প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

অভিযানে উদ্ধার হওয়া কচ্ছপগুলো ভেড়ামারা বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার উপস্থিতিতে কচ্ছপগুলো উন্মুক্ত জলাশয়ে অবমুক্ত করা হয় বলে জানিয়েছেন ভেড়ামারা উপজেলা বন কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম।

র‌্যাব কর্মকর্তা সুদীপ্ত সরকার জানান, দুপুরে গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারেন উপজেলার সাতবাড়িয়া বাজারে বিলুপ্ত প্রজাতির কচ্ছপ বিক্রি হচ্ছে। এরপর র‌্যাবের একটি দল ক্রেতা সেজে ওই বাজারে অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় ১১টি বড় ও ৫৬টি ছোট বিলুপ্ত প্রজাতির কড়িকাইট্টা কচ্ছপ উদ্ধার করা হয়। সাধারণত কড়িকাইট্টা কচ্ছপ ভারতে বেশি পাওয়া যায়। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে একত্র করে একই এলাকার মহিবুল ইসলামের ছেলে মাহি (২০) কচ্ছপগুলো স্থানীয় বাজারে বিক্রি করছিলেন। পরে বিক্রেতার কাছ থেকে কচ্ছপগুলো উদ্ধার করে বন বিভাগের কাছে হস্তান্তার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ