লালমনিরহাটে হিন্দু সম্প্রদায়ভুক্ত বাবা ও ছেলেকে ‘মব’ সন্ত্রাসের মাধ্যমে হেনস্তা ও পুলিশের কাছে সোপর্দ করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) ও নারীপক্ষ। একই সঙ্গে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার দাবি করেছে সংগঠনগুলো। 

মঙ্গলবার পৃথক বিবৃতিতে সংগঠনগুলো এ দাবি জানায়। 

গত শুক্রবার ধর্ম নিয়ে ‘অবমাননাকর’ মন্তব্যের অভিযোগ তুলে রোববার একদল লোক লালমনিরহাট শহরের একটি সেলুন থেকে বাবা-ছেলেকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

বিবৃতিতে মহিলা পরিষদ বলেছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে মব ভায়োলেন্স, সাম্প্রদায়িক উসকানির মতো ঘটনাগুলো ঘটছে এবং এই ঘটনাগুলোর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আইনের আওতায় আনার ব্যাপারে সে রকম জরুরি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যাচ্ছে না। বিবৃতিতে ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানিয়েছে মহিলা পরিষদ। একই সঙ্গে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সরকার, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ মনোযোগ আকর্ষণ করেছে তারা।

‘মব’-এ জড়িতদের বিচার দাবি আসকের

ধর্মীয় অনুভূতি বা অবমাননার অভিযোগকে অত্যন্ত স্পর্শকাতর উল্লেখ করে এ ধরনের অভিযোগের তদন্তের স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা এবং প্রমাণভিত্তিক বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। আসক জানায়, অপরাধের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার আগে কাউকে সামাজিকভাবে হেয় করা, নিপীড়নের মুখে ঠেলে দেওয়া বা সহিংসতার দিকে ঠেলে দেওয়া নিন্দনীয়। ‘মব’ এ জড়িত ব্যক্তিদের বিচার দাবি করে বিবৃতিতে আসক বলেছে, এ বিচারহীনতার সংস্কৃতি সামাজিক সম্প্রীতি ও আইনের শাসনের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ক্ষুব্ধ ও হতাশ নারীপক্ষ

ধর্ম অবমাননাসহ নানা অজুহাতে দেশব্যাপী ক্রমাগতভাবে ‘মব’ সন্ত্রাস করে অত্যাচার-নির্যাতনের ঘটনায় নারীপক্ষ ভীষণভাবে ক্ষুব্ধ, হতাশ ও উদ্বিগ্ন। এসব ঘটনা বন্ধে সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর উদ্যোগ নেই উল্লেখ করে বিবৃতিতে নারীপক্ষ বলেছে, এ ধরনের প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং যাতে এ ধরনের আর একটি ঘটনাও না ঘটে, তার জন্য এখনই কঠোর ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এ ধরন র ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

শাকসু নির্বাচন : ক্যাম্পাসে রাজনীতি চালুর পর ‘যৌক্তিক সময়’ চায় ছাত্রদল, পরে নির্বাচন

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ (শাকসু) নির্বাচন আগামী নভেম্বরের প্রথমার্ধে আয়োজনের কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ ঘোষণার পর থেকেই ক্যাম্পাসজুড়ে ছাত্রসংগঠনগুলোর তৎপরতা বেড়েছে।

ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি চালুর খবরে শাকসু নির্বাচন নিয়ে অবস্থান জানিয়েছে ছাত্রদল। সংগঠনটির নেতা–কর্মীরা জানিয়েছেন, দীর্ঘ ১০ মাস ধরে দলীয় ব্যানারে কার্যক্রম চালাতে পারেনি তারা। তাই নির্বাচনের আগে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নের সুযোগ প্রয়োজন। এ জন্য প্রশাসনের কাছে ‘যৌক্তিক সময়’ দাবি করেছে ছাত্রদল।

আরও পড়ুনশাকসু নির্বাচন সামনে রেখে একাধিক শর্তে ছাত্ররাজনীতি চালুর সুপারিশ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

গত বছরের ৬ নভেম্বর থেকে দলীয় ব্যানারে রাজনৈতিক কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরপর থেকেই ছাত্রসংগঠনগুলো দলীয় ব্যানারে রাজনীতি চালুর দাবি জানিয়ে আসছে। পরে প্রক্টরিয়াল বডি নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে সীমিত আকারে দলীয় রাজনীতি চালুর সুপারিশ করে। শিগগিরই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হতে পারে বলে প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে শাকসু নিয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি ছাত্রদল। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ীই তারা নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হবে বলে জানিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা। তবে সম্ভাব্য প্রার্থী নিয়ে অভ্যন্তরীণ আলোচনা চলছে।

আরও পড়ুনশাকসু নির্বাচন : দলীয় প্রভাবমুক্ত শিক্ষকদের নির্বাচন কমিশনে রাখার দাবি শিক্ষার্থীদের১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে নিয়মিতই প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে ছাত্রদল। তারা বলছে, নির্বাচনের আগে অন্তত কিছুদিন কার্যক্রম চালানোর সুযোগ প্রয়োজন। ইতিমধ্যে সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে নানা কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে দেখা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাঈম সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্রদলের ব্যানারে আমরা তেমন কোনো শিক্ষার্থীবান্ধব কর্মসূচি পালন করতে পারিনি। এ জন্য আমরা উপাচার্যের কাছে দাবি জানিয়েছি। পাশাপাশি ছাত্রসংগঠনগুলো নিয়ে এক বৈঠকেও তা জানিয়েছি।’ সব সংগঠনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণের দাবি জানান তিনি।

সংগঠনের সভাপতি রাহাত জামান বলেন, ‘ক্যাম্পাসে রাজনীতি বন্ধের পর আমরা তেমন কার্যক্রম করতে পারিনি। শাকসুর নেতৃত্ব নির্বাচনের আগে অন্তত কিছু সময় প্রয়োজন। তবে নির্বাচন পিছিয়ে যাক, সেটা চাই না। কর্মসূচির জন্য যৌক্তিক সময় চাইছি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শাকসু নির্বাচন : ক্যাম্পাসে রাজনীতি চালুর পর ‘যৌক্তিক সময়’ চায় ছাত্রদল, পরে নির্বাচন