বর্ষা মৌসুমে রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যেতে দুর্ভোগে পড়েছে তাহিরপুর উপজেলার হাওরপারের অর্ধশতাধিক গ্রামের শিক্ষার্থী। নিয়মিত বিদ্যালয়ে যেতে না পেরে অনেকেই গৃহস্থালি কাজে জড়িয়ে পড়ছে। এতে বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার বাড়ছে। 
উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ২৪৯ গ্রামের ১৩৪টিতে প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। অবশিষ্ট ১১৫ গ্রামে কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। এর মধ্যে তাহিরপুর, বাদাঘাট, বালিজুরী ও উত্তর বড়দল ইউনিয়নে সড়ক যোগাযোগ কিছুটা ভালো। এসব এলাকায় এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামের বিদ্যালয়ে গিয়ে লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। অপরদিকে শ্রীপুর দক্ষিণ, শ্রীপুর উত্তর ও দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়ন হাওরবেষ্টিত। এসব ইউনিয়নে বর্ষাকালে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে হেঁটে যাওয়ার সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়। বর্ষা মৌসুম এলেই যেসব গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই সেসব গ্রামের শিশুরা বিদ্যালয় বিমুখ হয়ে পড়ে। বর্ষার পানি নামতেই অনেক শিশু বাবা-মার সঙ্গে কৃষি কাজে জড়িয়ে পড়ে। এতে প্রায় ৬ মাস পড়াশোনার বাইরে থাকে শিক্ষার্থী। পড়াশোনায় আগ্রহ হারিয়ে এক পর্যায়ে বিদ্যালয় থেকে ঝরে যায় অনেক শিশু। 
গত শনি ও রোববার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের মন্দিয়াতা নতুন হাটি, মুজরাই, পানিয়াখালিসহ কয়েকটি গ্রামে গিয়ে দেখা যায় শিশুরা বিদ্যালয়ে না গিয়ে খেলাধুলা করছে। একই অবস্থা এ ইউনিয়নের বেতাগড়া, জামালপুর, তেলিগাঁও পশ্চিমপাড়া, কৃষ্ণতলা গ্রামে। 
জানা গেছে, বর্ষায় রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের ও দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের ৪০টিরও বেশি গ্রামের শিক্ষার্থী নিয়মিত বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না। এ দুই ইউনিয়নের গোপালপুর, রাজধরপুর, উজ্জ্বলপুর, জগদীসপুর, সাহসপুর, নিশ্চিন্তপুর, লতিবপুর, গোবিন্দপুর, টুকেরগাঁও গ্রামের শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা। 
উপজেলার শাহগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুবাশ্বির আলম বলেন, বর্ষাকালে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কমে যায়। অনেক অভিভাবক সন্তানদের নৌকায় করে স্কুলে পাঠাতে আগ্রহী নয়। 
রাজধরপুর গ্রামের অভিভাবক হাদিছনূর মিয়ার ভাষ্য, নিজ গ্রামে বিদ্যালয় এবং যোগাযোগ 
ব্যবস্থা না থাকায় অন্য কোনো গ্রামের বিদ্যালয়ে শিশুদের পাঠানো হয় না। 
তাহিরপুর উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অজয় কুমার দে বলেন, বর্ষাকালে উপজেলার যেসব গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই, সেসব গ্রামের শিশুদের লেখাপড়ায় বিঘ্ন ঘটে। এ সমস্যা সমাধানে বিদ্যালয়বিহীন গ্রামগুলোতে বিদ্যালয় স্থাপনের দাবি জানান তিনি।
ইউএনও মো.

আবুল হাসেম বলেন, বর্ষাকালে এ উপজেলার এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে যেতে চাইলে ঢেউ আর জলরাশি ভেঙে যেতে হয়। এ অবস্থায় উপজেলার প্রতি গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্থাপন করা প্রয়োজন। বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দেন তিনি। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বর ষ ক ল বর ষ ক ল সব গ র ম উপজ ল র

এছাড়াও পড়ুন:

বিদ্যালয়ে যেতে দুর্ভোগে হাওরের অর্ধশত গ্রামের শিক্ষার্থী

বর্ষা মৌসুমে রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যেতে দুর্ভোগে পড়েছে তাহিরপুর উপজেলার হাওরপারের অর্ধশতাধিক গ্রামের শিক্ষার্থী। নিয়মিত বিদ্যালয়ে যেতে না পেরে অনেকেই গৃহস্থালি কাজে জড়িয়ে পড়ছে। এতে বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার বাড়ছে। 
উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের ২৪৯ গ্রামের ১৩৪টিতে প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। অবশিষ্ট ১১৫ গ্রামে কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই। এর মধ্যে তাহিরপুর, বাদাঘাট, বালিজুরী ও উত্তর বড়দল ইউনিয়নে সড়ক যোগাযোগ কিছুটা ভালো। এসব এলাকায় এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামের বিদ্যালয়ে গিয়ে লেখাপড়ার সুযোগ পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। অপরদিকে শ্রীপুর দক্ষিণ, শ্রীপুর উত্তর ও দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়ন হাওরবেষ্টিত। এসব ইউনিয়নে বর্ষাকালে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে হেঁটে যাওয়ার সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়। বর্ষা মৌসুম এলেই যেসব গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই সেসব গ্রামের শিশুরা বিদ্যালয় বিমুখ হয়ে পড়ে। বর্ষার পানি নামতেই অনেক শিশু বাবা-মার সঙ্গে কৃষি কাজে জড়িয়ে পড়ে। এতে প্রায় ৬ মাস পড়াশোনার বাইরে থাকে শিক্ষার্থী। পড়াশোনায় আগ্রহ হারিয়ে এক পর্যায়ে বিদ্যালয় থেকে ঝরে যায় অনেক শিশু। 
গত শনি ও রোববার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের মন্দিয়াতা নতুন হাটি, মুজরাই, পানিয়াখালিসহ কয়েকটি গ্রামে গিয়ে দেখা যায় শিশুরা বিদ্যালয়ে না গিয়ে খেলাধুলা করছে। একই অবস্থা এ ইউনিয়নের বেতাগড়া, জামালপুর, তেলিগাঁও পশ্চিমপাড়া, কৃষ্ণতলা গ্রামে। 
জানা গেছে, বর্ষায় রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের ও দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের ৪০টিরও বেশি গ্রামের শিক্ষার্থী নিয়মিত বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না। এ দুই ইউনিয়নের গোপালপুর, রাজধরপুর, উজ্জ্বলপুর, জগদীসপুর, সাহসপুর, নিশ্চিন্তপুর, লতিবপুর, গোবিন্দপুর, টুকেরগাঁও গ্রামের শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা। 
উপজেলার শাহগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুবাশ্বির আলম বলেন, বর্ষাকালে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কমে যায়। অনেক অভিভাবক সন্তানদের নৌকায় করে স্কুলে পাঠাতে আগ্রহী নয়। 
রাজধরপুর গ্রামের অভিভাবক হাদিছনূর মিয়ার ভাষ্য, নিজ গ্রামে বিদ্যালয় এবং যোগাযোগ 
ব্যবস্থা না থাকায় অন্য কোনো গ্রামের বিদ্যালয়ে শিশুদের পাঠানো হয় না। 
তাহিরপুর উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অজয় কুমার দে বলেন, বর্ষাকালে উপজেলার যেসব গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই, সেসব গ্রামের শিশুদের লেখাপড়ায় বিঘ্ন ঘটে। এ সমস্যা সমাধানে বিদ্যালয়বিহীন গ্রামগুলোতে বিদ্যালয় স্থাপনের দাবি জানান তিনি।
ইউএনও মো. আবুল হাসেম বলেন, বর্ষাকালে এ উপজেলার এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে যেতে চাইলে ঢেউ আর জলরাশি ভেঙে যেতে হয়। এ অবস্থায় উপজেলার প্রতি গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্থাপন করা প্রয়োজন। বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দেন তিনি। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ