বাতিল করা ৩৭ সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প পুনর্মূল্যায়নের পরমার্শ
Published: 1st, July 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের বাতিল করা ৩৭টি সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা উচিত। প্রাথমিক অনুমোদনের এলওআই বা সম্মতিপত্র ইস্যুকৃত সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কোনো কোনোটিতে ইতোমধ্যে ৩০ কোটি ডলারের মতো বিনিয়োগ করা হয়েছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা না নিলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নেতিবাচক বার্তা যাবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বিনিয়োগ উন্নয়নের চেয়ে এ-সংক্রান্ত সেবা নিশ্চিত করার বিষয়ে সরকারকে মনোযোগ দিতে হবে।
সোমবার রাজধানীর গুলশানের লেকশোর হোটেলে ‘বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে চীনের বিদেশি বিনিয়োগের সাম্প্রতিক চ্যালেঞ্জ : অগ্রগতির পথ’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব পরামর্শ দেন। যৌথভাবে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ও বাংলাদেশ-চীন নবায়নযোগ্য জ্বালানি ফোরাম এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
রাজনৈতিক বিবেচনা ও অনিয়মের অভিযোগে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অনুমোদন দেওয়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ৩৭টি প্রকল্পের এলওআই (লেটার অব ইনটেন্ট) অর্থাৎ ইস্যুকৃত প্রাথমিক অনুমতিপত্র বাতিল করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। ১৪টি দেশের অর্থায়নের এসব প্রকল্পের মধ্যে চীনের চারটি, সিঙ্গাপুরের সাতটি এবং ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে একটি করে। এসব প্রকল্পে ছয় বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগের কথা ছিল। ইতোমধ্যে ৩০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ, চীনের ব্যবসায়ী সংগঠন চাইনিজ এন্টারপ্রাইজ অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশের সভাপতি হান কুন, সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষক আবরার আহমেদ।
প্রবন্ধে বলা হয়, প্রযুক্তিগত মূল্যায়নের পরে প্রস্তাবগুলো নিয়ে বিপিডিবি, মন্ত্রণালয়, সরকারি কেনাকাটা সম্পর্কিত মন্ত্রিপরিষদ কমিটির মাধ্যমে এগোতে হয়। এই বাড়তি ছাড়পত্রের সময়সীমা বিনিয়োগকারীদের অনুৎসাহিত করে। ভারতে এসব বাস্তবায়নে যেখানে তিন-চার মাস সময় লাগে, সেখানে বাংলাদেশে এক বছরের বেশি সময় লেগে যায়। ফলে আর্থিক ঝুঁকি সৃষ্টি হয়। নানান ধরনের নথি, একাধিক লাইসেন্স সার্টিফিকেট, তথ্যপ্রাপ্তিতে বাধা নবায়নযোগ্য বিনিয়োগের বড় চ্যালেঞ্জ।
বিইআরসির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ বলেন, নতুন নীতিমালা অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে মোট বিদ্যুতের ২০ শতাংশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে মোট বিদ্যুতের ৩০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। যদি এই খাতের বাধাগুলো দূর করা যায় তাহলে লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব। অন্তর্বর্তী সরকার এলওআই ইস্যুকৃত সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো যে বাতিল করেছে, সেগুলো পুনর্মূল্যায়ন করা উচিত। কারণ ইতোমধ্যে বিনিয়োগকারীরা এখানে ৩০ কোটি ডলারের মতো বিনিয়োগ করেছেন।
খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের বিনিয়োগ আকর্ষণে বিনিয়োগ উন্নয়নের চেয়ে বিনিয়োগ সুবিধা বাড়ানোর দিকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। এ-সংক্রান্ত সব বাধা দূর করা দরকার। এ সমস্যার সমাধানে বিডাকে এগিয়ে আসতে হবে। বিনিয়োগকারীদের সব সুবিধা নিশ্চিতে বিডা সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করতে পারে। একাধিক লাইসেন্স জটিলতা নিরসনে সরকারকে কাজ করতে হবে। না হলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে নেতিবাচক বার্তা যাবে।
চাইনিজ এন্টারপ্রাইজ অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশের সভাপতি বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে এশিয়ায় প্রায় ৫৫ শতাংশ চীনা বিনিয়োগ রয়েছে। বাংলাদেশেও উল্লেখযোগ্য তাদের বিনিয়োগ আছে। ২০৩০ সাল নাগাদ মোট বিদ্যুতের ২০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাত থেকে উৎপাদনের যে লক্ষ্য, তা অর্জনে বাংলাদেশকে বিনিয়োগ পরিবেশ আরও উন্নত করতে হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স রব দ য ৎ ব ত ল কর প রকল প সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ফায়ারফক্সে আসছে এআই উইন্ডো
কৃত্রিমবুদ্ধিমত্তা বা এআইকেন্দ্রিক ব্রাউজারের বাজার দিন দিন বিস্তৃত হচ্ছে। এই প্রতিযোগিতার মধ্যেই ফায়ারফক্সে নতুন এআই উইন্ডো নামের বিশেষ সুবিধা যুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে মজিলা। সুবিধাটির মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা ওয়েবসাইট ব্রাউজ করার সময় প্রয়োজন অনুসারে একটি সমন্বিত এআই সহকারীর সাহায্য নিতে পারবেন। পুরো প্রক্রিয়াই থাকবে ব্যবহারকারীর নিয়ন্ত্রণে।
এক ব্লগ বার্তায় মজিলা জানায়, এআই উইন্ডো ব্রাউজিংয়ে ক্ষেত্রে এআই নির্দেশনা ও ব্যক্তিগত সহায়তার সুবিধা দেবে। সুবিধাটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সক্রিয় থাকবে না। আগ্রহী ব্যবহারকারীরা চাইলে নিজে থেকেই চালু করবেন। যেকোনো সময় বন্ধ করা যাবে। এআইনির্ভর এই সুবিধা ওপেন সোর্স প্রযুক্তির ভিত্তিতে তৈরি করা হচ্ছে।
ফিচারটি পরীক্ষামূলক সংস্করণ কিছু ব্যবহারকারীর কাছে উপলব্ধ হয়েছে। মজিলা জানিয়েছে, যে কেউ চাইলে আগের মতোই ফায়ারফক্স ব্যবহার করে নিজের পছন্দমতো কাস্টমাইজড অভিজ্ঞতা পাবেন। আরও বেশি গোপনীয়তা চাইলে প্রাইভেট উইন্ডো ব্যবহার করতে পারবেন। এআই উইন্ডো ব্রাউজিংকে আরও ব্যক্তিগত উপায়ে ব্যবহারের সুযোগ দেবে।
এআই চালিত ব্রাউজারের ব্যবহার বাড়তে থাকায় বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানি এখন সার্চবারের জায়গায় চ্যাটবট যুক্ত করা বা সম্পূর্ণ এআইনির্ভর ব্রাউজার তৈরিতে মনোযোগ দিচ্ছে। ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটি অ্যাটলাস বা পারপ্লেক্সিটির কমেট পুরোপুরি এআই এজেন্টকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়েছে।
ভবিষ্যতে লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলনির্ভর ব্রাউজারের বড় সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিযোগিতার মধ্যেও ভিন্ন অবস্থান তৈরি করতে চেষ্টা করছে মজিলা। তারা বলছে, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও ব্যবহারকারীর স্বাধীনতা—এই তিন নীতি সামনে রেখে ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা দেওয়া হচ্ছে। ওয়েবকে সবার জন্য উন্মুক্ত, মুক্ত ও নিরাপদ রাখতে চায় মজিলা। মজিলার ভাষ্য অনুযায়ী, ফায়ারফক্সে কোনো একক ইকোসিস্টেমে ব্যবহারকারীকে আটকে রাখা হবে না। এআই ব্যবহারের ওপর কোনো বাধ্যবাধকতাও থাকবে না। কখন, কীভাবে বা আদৌ এটি ব্যবহার করবেন কি না, এমন সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ ব্যবহারকারীর।
এ বছরের জুনে ফায়ারফক্সের অ্যাড্রেসবারে থাকা ইউনিফায়েড সার্চ সুবিধায় সরাসরি পারপ্লেক্সিটি এআইয়ের মাধ্যমে অনুসন্ধানের অপশন যুক্ত করে মজিলা। নতুন এআই উইন্ডো ফিচার যুক্ত হলে ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা আরও বহুমাত্রিক হয়ে উঠবে বলে মনে করছে সংস্থাটি।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস