বাংলাদেশের পাট খাতকে টেকসই ও বৈচিত্র্যময় করে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশাধিকার সহজতর করতে শুরু হলো ‘টেকসই বাজার প্রবেশ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি’।

বুধবার (২ জুলাই) ঢাকায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের জেনেভা-ভিত্তিক বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) উন্নত সমন্বিত কাঠামো (ইআইএফ) এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কেন্দ্রের (আইটিসি) সহযোগিতায় এ কর্মসূচির উদ্বোধন হয়।

ইআইএফ ও আইটিসির যৌথ কারিগরি সহায়তায় বাস্তবায়িত এ কর্মসূচিতে জাতীয় বাস্তবায়ন ইউনিট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও অনুবিভাগ।

আরো পড়ুন:

জুলাই আন্দোলন নিয়ে ছাত্রশিবিরের ৩৬ দিনব্যাপী কর্মসূচি

দাবি না মানলে এনবিআরের সব দপ্তর হবে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’

পাটখাতভিত্তিক ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের রপ্তানি সক্ষমতা বৃদ্ধি, পাটজাত পণ্যের বৈচিত্র্য আনয়ন, মানের টেকসই রক্ষা, পণ্যের পরিচিতি ও বিপণন কৌশল বিষয়ে দক্ষতা বৃদ্ধি- এই তিন মাসব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মূল লক্ষ্য।

জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত চলমান এ কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ধারাবাহিক অনলাইন প্রশিক্ষণ, একক পরামর্শ প্রদান সেশন এবং একটি তিন দিনব্যাপী সরাসরি ও ব্যবহারিক কর্মশালা।

কর্মসূচির অংশ হিসেবে ‘শিল্পের বর্তমান অবস্থা’ শীর্ষক প্রথম সেমিনারটি পাটজাত পণ্য বৈচিত্র্যকরণ প্রচার কেন্দ্রের (জেডিপিসি) অডিটরিয়ামে সরাসরি এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মে একযোগে অনুষ্ঠিত হয়। সরাসরি ১০০ জন এবং অনলাইনে ১৪৫ জন অংশগ্রহণকারী এতে যুক্ত হন।

অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন উদ্যোক্তা, রপ্তানিকারক ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও অনুবিভাগের প্রধান ও ইআইএফ এর বাংলাদেশ ফোকাল পয়েন্ট ড.

নাজনীন কাউসার চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য দেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং ইআইএফ এর প্রতিনিধিরা।

প্রশিক্ষণ কর্মসূচি সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কেন্দ্রের প্রকল্প সমন্বয়কারী মি. ডুক ড্যাং। পাট খাতের বর্তমান চিত্র এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে মূল উপস্থাপনা দেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যবসা কৌশল বিশেষজ্ঞ মিস টারা মুলহেয়ার।

আয়োজকরা আশা করছেন, এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলাদেশের পাটখাতভিত্তিক উদ্যোক্তারা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় টিকতে আরো বেশি সক্ষম হবেন এবং দেশের রপ্তানি সম্ভাবনা আরো বাড়বে।

ঢাকা/এএএম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট কসই

এছাড়াও পড়ুন:

‘ভাতের পাতে স্বস্তি ফেরাও’ দাবিতে খানির কর্মসূচি

পবিত্র ঈদুল আজহার পরপরই অস্বাভাবিক হারে চালের দাম বাড়া এবং সার্বিক মূল্যস্ফীতির কারণে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক—খানি। সংকট নিরসনে জরুরি পদক্ষেপের দাবিতে আজ সোমবার ঢাকাসহ আটটি বিভাগীয় শহরে মানববন্ধন করেছে নেটওয়ার্কটির সদস্য সংগঠনগুলো।

'ভাতের পাতে স্বস্তি ফেরাও' স্লোগানে অনুষ্ঠিত এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা চালের মূল্য নিয়ন্ত্রণ, কৃষকের স্বার্থরক্ষা এবং রেশনিং ব্যবস্থাসহ একাধিক দাবির কথা তুলে ধরেন।

পরিকল্পনা কমিশনের সর্বশেষ (জুন ২০২৫) হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, মে মাসের খাদ্য মূল্যস্ফীতির মধ্যে চালের একক প্রভাব প্রায় ৪০ শতাংশ। অথচ বোরো মৌসুমে উৎপাদন ও সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলেও বাজারে কোনো স্বস্তি মিলছে না।

ময়মনসিংহের ফুলপুরে থানার সামনে আয়োজিত মানববন্ধনে কৃষক জহর আলী বলেন, ‘যে ভাত আমরা ফলাই, তাই আবার চড়া দামে কিন্না খাই। আমাদের দেখার কেউ নাই?’ রিকশাচালক সিকান্দার বললেন, সারাদিনে যা আয় করি, তার অর্ধেক যায় চাল কিনতে। আমরা ৪০ টাকা কেজিতে চাল চাই।

নোয়াখালীর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত কর্মসূচিতে খানির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম মাসুদ বলেন, আয় ও ব্যয়ের ভারসাম্যহীনতার কারণে সাধারণ মানুষ এখন মাছ, মাংস, ডাল বাদ দিয়ে কেবল ভাতনির্ভর খাদ্য গ্রহণ করছে। যা দীর্ঘমেয়াদে পুষ্টিহীনতা ও স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে।

জাতিসংঘ খাদ্য সংস্থার একটি প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে তিনি জানান, দেশের প্রায় ২০ শতাংশ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে এবং প্রতি ১০ জনে ৩ জন প্রয়োজনীয় খাদ্য সংস্থান করতে পারছেন না। নিম্ন আয়ের মানুষের ক্ষেত্রে এই হার ৩৬ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে।

সংগঠনটি সংকট উত্তরণে পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করে। দাবিগুলো হলো- কৃষকের কাছ থেকে সরকারের সরাসরি চাল ক্রয়ের আওতা বৃদ্ধি, দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য রেশনিং ব্যবস্থা চালু; ক্ষুদ্র কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় বাজার, উৎপাদন ও ভোগক্ষমতা বৃদ্ধিমূলক উদ্যোগ; টিসিবি ও ওএমএস কর্মসূচির আওতা বাড়িয়ে প্রয়োজনভিত্তিক সহায়তা সিন্ডিকেট রোধ ও কার্যকর বাজার মনিটরিংয়ের মাধ্যমে চালের মূল্য নিয়ন্ত্রণ করা।

বরিশালের অশ্বিনী কুমার টাউন হলে আয়োজিত মানববন্ধনে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সম্পাদক রণজিৎ দত্ত বলেন, মিল পর্যায়ে খরচ বৃদ্ধি, ধানের দামে অস্থিরতা, মজুতদারির অপচেষ্টা ও বাজার নজরদারির ঘাটতির কারণে চালের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে। এতে কৃষক ন্যায্য দাম পাচ্ছে না, আবার ভোক্তা কিনছেন অতিরিক্ত দামে।

তিনি বলেন, খাদ্যে ব্যয় কমিয়ে এনে মানুষের মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত পুষ্টিহীনতায় না পড়ে।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা আশা প্রকাশ করেন, সরকার দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিয়ে চালের বাজার স্থিতিশীল করবে এবং দেশের সাধারণ মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন আয়োজনে ৪৮ লাখ ডলার দিচ্ছে জাপান
  • আইডিই বাংলাদেশের প্রাইভেট সেক্টর এনগেজমেন্ট স্ট্র্যাটেজি উন্মোচিত
  • আদিবাসী তরুণদের জন্য সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ
  • ফুলেফলে, লতাগুল্মে ছাওয়া সবুজের ডাক
  • ‘ভাতের পাতে স্বস্তি ফেরাও’ দাবিতে খানির কর্মসূচি