শাবিপ্রবিতে ২০৫ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা
Published: 3rd, July 2025 GMT
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ২০৫ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন করেছে। গবেষণা ও উদ্ভাবনে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এবারের বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১০ কোটি ২৩ লাখ টাকা। গত বছরের তুলনায় এবার গবেষণা খাতে ৭৯ লাখ টাকা বরাদ্দ বেড়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন-১ এ আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড.
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএম সরওয়ার উদ্দিন চৌধুরী, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সাজেদুল করিমসহ বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক ও দপ্তর প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
শাবিপ্রবিতে প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু ৭ জুলাই
সিলেটে করোনায় আক্রান্ত ৪
২০৫ কোটি টাকার এ বাজেটে মূল খাতগুলোর মধ্যে বেতন-ভাতায় বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১১১ কোটি ৯০ লাখ টাকা, বিশেষ সুবিধাসহ মোট বেতন খাতে ৭১ কোটি টাকা, পণ্য ও সেবা খাতে ৪৫ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, পেনশন খাতে ১৫ কোটি টাকা, আইসিটি খাতে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা, প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবায় ২০ কোটি টাকা ও যন্ত্রপাতি অনুদানে ৯ কোটি ১৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
গবেষণা বরাদ্দের মধ্যে শিক্ষকদের গবেষণায় ৮ কোটি ২০ লাখ, পিএইচডি গবেষণায় ১ কোটি ৫০ লাখ, মাস্টার্স প্রোগ্রামে ৫০ লাখ, শিক্ষাবৃত্তি ৬৭ লাখ এবং উদ্ভাবনী কাজে ৩ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
বাজেটের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে আসবে ১৮৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব উৎস থেকে আসবে ২০ কোটি টাকা।
বাজেট উপস্থাপন শেষে উপাচার্য অধ্যাপক এএম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, “চলতি অর্থবছরের বাজেট আগের বছরের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা চেষ্টা করব এই বাজেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক অগ্রগতিতে সর্বোচ্চভাবে কাজে লাগাতে। বিশেষ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিকাশে গবেষণার গুরুত্ব আরো বাড়ানো হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন গবেষক তৈরি করা।”
তিনি বলেন, “বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এগুলো শেষ হলে বিদ্যমান নানা সংকট কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে। এজন্য সবার সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন।”
ঢাকা/ইকবাল/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
কাজে ফিরেছেন এনবিআর কর্মকর্তারা, সচল বন্দর
কয়েকদিনের অচলাবস্থার পর গতকাল সোমবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরেছে। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি প্রত্যাহার হচ্ছে খবর পেয়ে রোববার বিকেলেই বিভিন্ন বন্দরে কাস্টমস কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। গতকাল সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআরের প্রধান কার্যালয়সহ এর অধীন দেশের সব কর কার্যালয় এবং বন্দর, কাস্টমস ও শুল্ক ষ্টেশনে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্বাভাবিক সময়ে কাজে যোগ দেন।
এদিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান জানান, কাস্টম হাউসগুলো রোববার বিকেল থেকে স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করে। সোমবার সকালেই সব দপ্তরে কাজ শুরু হয়েছে। এর ফলে ব্যবসায়ী ও নীতিনির্ধারকসহ সবার মধ্যে স্বস্তি বিরাজ করছে। তিনি আশা করেন, ভবিষ্যতে এনবিআরকে আর এ ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে হবে না।
এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এনবিআরে যৌক্তিক সংস্কার ও এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে সংস্থাটির কর্মকর্তারা প্রায় দুই মাস আন্দোলন করেছেন। এতে রাজস্ব আদায় কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়ে। গত শনিবার থেকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’-এর পাশাপাশি ‘মার্চ টু ঢাকা’ ঘোষণার পর কাস্টমসসহ পুরো এনবিআরের কার্যক্রম স্থগিত হলে বিভিন্ন বন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। পরে সরকারের কঠোর অবস্থান ঘোষণা এবং ব্যবসায়ী নেতাদের মধ্যস্থতার কারণে আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়।
এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, গত প্রায় দুই মাসের আন্দোলনে রাজস্ব আদায় ব্যাহত হলেও আগের অর্থবছরের তুলনায় সমাপ্ত অর্থবছরের রাজস্ব আদায়ে কিছুটা হলেও প্রবৃদ্ধি থাকবে। তিনি জানান, গতকাল ১০টা পর্যন্ত ৩ লাখ ৬০ হাজার ৯২২ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়। সকালে এ তথ্য জানানোর সময় তিনি আশা প্রকাশ করেন, সোমবার ভালো অঙ্কের রাজস্ব সরকারের কোষাগারে জমা হবে। সরকারি বিলগুলো সমন্বয় হলে আগের অর্থবছরের চেয়ে রাজস্ব আয় বেশি হবে।
সচল সব বন্দর
‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি প্রত্যাহারের পর দেশের প্রধান দুই সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম ও মোংলায় স্বাভাবিক কার্যক্রম পুরোদমে সচল হয়েছে। পাশাপাশি বেনাপোলসহ সব স্থলবন্দরেও আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। রোববার রাতেই চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে রপ্তানি চালানের শুল্কায়ন শুরু হয়। এর পর সোমবার সকাল থেকে আমদানি পণ্যের শুল্কায়নসহ বিল অব এন্ট্রি, বিল অব এক্সপোর্ট, শুল্ক পরিশোধ, পরীক্ষণ, ডেলিভারিসহ সব ধরনের কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলছে।
চট্টগ্রাম বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, সব কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়েছে। রপ্তানি পণ্য নিয়ে চারটি জাহাজ ইতোমধ্যে বন্দর ত্যাগ করেছে। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এসএম সাইফুল আলম জানান, সোমবার সকাল থেকে আমদানি শুল্কায়নও পুরোদমে শুরু হয়েছে। বিকডার মহাসচিব মোহাম্মদ রুহুল আমিন সিকদার জানান, সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ১ হাজার ৯১৫টি রপ্তানি কনটেইনার জাহাজীকরণের জন্য পাঠানো হয়েছে।
বেনাপোল প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দু’দিনের কর্মবিরতিতে স্থবির হওয়া বেনাপোল স্থলবন্দরে সোমবার সকাল থেকে আমদানি-রপ্তানি ফের শুরু হয়েছে। কাস্টমস অফিসে শুল্কায়ন, পরীক্ষণ ও ডেলিভারির কাজ নিয়ে কর্মকর্তারা হিমশিম খাচ্ছেন। বেনাপোল আমদানি রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি আলহাজ মহসিন মিলন বলেন, প্রায় দুই হাজার পণ্যবাহী ট্রাক বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় আছে।
মোংলা কাস্টমস হাউসের কমিশনার ম. সফিউজ্জামান জানান, গত কয়েকদিনে কাস্টমসের লোকসান হয়নি, কারণ জাহাজ ছিল না। সকাল থেকে পণ্য ছাড় হচ্ছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক মো. মাকরুজ্জামান বলেন, আন্দোলনের সময়ও বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল। এখন ব্যবহারকারীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে।