বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে, তাই বলে তো ঘরে থাকার উপায় নেই। কাজের প্রয়োজনে বাইরে বের হতে হয়। এই সময় স্নিকার্স ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে। নারী-পুরুষ উভয়ই প্রিয় অনুসঙ্গ এটি। এই অনুসঙ্গটি ভালো রাখার জন্য কয়েকটি নিয়ম মেনে চলতে পারেন। 

ওয়াটারপ্রুফ স্প্রে
বৃষ্টিদিনে স্নিকার্স ভিজে যায়, কাদা লেগে যায়। এই সময় ওয়াটারপ্রুফ স্প্রে দিয়ে স্নিকার্স-এর যত্ন নিতে পারেন। পানি থেকে সুরক্ষিত রাখার এই প্রোডাক্ট এই সময়ে ভীষণ জরুরি।ওয়াটারপ্রুফ স্প্রে আপনার স্নিকারে দাগ পড়তে দেবে না। ৪৫০-৮০০ টাকার মধ্যে ওয়াটারপ্রুফ স্প্রে পাওয়া যায়।

কুইক ড্রাই ইনসার্ট
স্নিকার্স ভালো রাখার আরেকটি উপায় হলো কুইক ড্রাই ইনসার্ট ব্যবহার করা। কুইক ড্রাই ইনসার্ট হলো ছোট ছোট প্যাড। যা স্নিকার্স-এর মধ্যে রেখে দিলে স্নিকার্স থাকবে সুরক্ষিত।

আরো পড়ুন:

গর্ভাবস্থায় চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্ত হলে কী করবেন, কী করবেন না

বর্ষায় ত্বকের যত্নে ঘরোয়া যেসব উপায় মানতে পারেন

ওয়াটারপ্রুফ কভার
এখন প্রয়োজন হলো যেকোন উপায়ে স্নিকার ভালো রাখা। এই প্রয়োজনকে ফ্যাশন অনুষঙ্গ বানিয়ে ফেললে কেমন হয়? –খারাপ হয় না কিন্তু। বাজারে নানা ধরনের ওয়াটারপ্রুফ জুতার কভার পাওয়া যায়। এই কভার আপনার জুতাকে সুরক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি ফ্যাশন অনুষঙ্গ হিসেবেও কাজ করবে। অনলাইনে ‘শু রেইনকোট’ ও ‘ড্রাই স্টেপারস’ নামে খুঁজলেই পেয়ে যাবেন এগুলো। 

পরিষ্কার ও যত্নের রুটিন
দিন শেষে ঘরে ফিরে স্নিকার্স- জোড়া পরিষ্কার করে নিন।  নরম ধরনের একটি ব্রাশ দিয়ে ঘষলেই স্নিকার্স-এর ময়লা দূর হয়ে যাবে। তারপর প্রাকৃতিক বা ফ্যানের বাতাসে শুকিয়ে নিন। তাপ প্রয়োগ করে শুকাতে গেলে আপনার স্নিকার্স নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

স্টোর করার জন্য সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করুন

স্নিকার ভালোভাবে শুকানোর পর, সুতি কাপড়ে মুড়িয়ে রাখতে পারেন।  এভাবে রাখলে আর্দ্রতা থেকে রক্ষা পাবে। 

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর যত ন প য় র যত ন

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাইয়ে আহতরাও ঢাকায় ফ্ল্যাট পাচ্ছেন

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গুরুতর আহত ব্যক্তিদের জন্য এবার বিনা মূল্যে ঢাকায় ফ্ল্যাট দেওয়ার প্রকল্প হাতে নিয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। আহত ব্যক্তিদের জন্য দেড় হাজারের বেশি ফ্ল্যাট তৈরিতে ব্যয় হবে ১ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা। সরকারের কোষাগার থেকে এই টাকা দেওয়া হবে। গুরুতর আহত ব্যক্তিদের জন্য ফ্ল্যাট বানানো হবে মিরপুর ৯ নম্বরে সরকারি জমিতে। ফ্ল্যাট তৈরি করবে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ।

এসব ফ্ল্যাটের নকশাও তৈরি করেছে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ। তাতে দেখা যায়, আহত ব্যক্তিদের পরিবারের জন্য তৈরি করা ফ্ল্যাটের আয়তন হবে ১ হাজার ২৫০ বর্গফুট। প্রতিটি ফ্ল্যাটে দুটি শয়নকক্ষ (বেডরুম), একটি ড্রয়িংরুম (বসার ঘর), একটি লিভিং রুম (বিশ্রাম ঘর), একটি খাবার কক্ষ, রান্নাঘর ও তিনটি শৌচাগার বা টয়লেট থাকবে। একটি কক্ষ থাকবে শুধু আহত ব্যক্তির জন্য, যিনি পঙ্গু বা দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। ওই কক্ষে তাঁদের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকবে।

এর আগে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবারকে বিনা মূল্যে ফ্ল্যাট দিতে আলাদা একটি প্রকল্প নিয়েছিল গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। তাঁদের জন্য মোট ৮০৪টি ফ্ল্যাট তৈরিতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৬২ কোটি টাকা। প্রতিটি ফ্ল্যাটের আয়তন হবে ১ হাজার ৩৫৫ বর্গফুট। রাজধানীর মিরপুর ১৪ নম্বরে সরকারি জমিতে শহীদ পরিবারগুলোর জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে।

আহত ব্যক্তিদের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পের বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. নুরুল বাসির আজ বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের এখন অগ্রাধিকার হচ্ছে অবকাঠামো নির্মাণ। ভবন নির্মাণে চার বছর সময় লাগবে। ফ্ল্যাট কারা পাবেন, সেটি পরে নির্ধারিত হবে। জুলাই অধিদপ্তর, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় বসে এ তালিকা ঠিক করবে। আহত ব্যক্তিদের ভয়াবহতা অনুসারে ফ্ল্যাট দেওয়া হবে। তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলনে অনেকে পঙ্গু হয়েছেন। অনেকে কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন। তাঁদের সরকার ফ্ল্যাট দেবে।

৭ জুলাই পরিকল্পনা কমিশনে ‘ঢাকার মিরপুর ৯ নম্বর সেকশনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কর্মক্ষমতা হারানো জুলাই যোদ্ধা পরিবারের স্থায়ী বাসস্থান প্রদানে এক হাজার ৫৬০টি আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ’ শিরোনামে প্রকল্পের ওপর প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা হয়। ওই বৈঠকে প্রকল্পটি অনুমোদনে সবুজ সংকেত দেওয়া হয় বলে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তা জানান। জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা আশা করছেন, চলতি মাসেই জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের জন্য আলাদা দুটি প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পাবে। এ দুটি প্রকল্পই ২০২৯ সালে শেষ হবে।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, আহত ব্যক্তিদের জন্য জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ যে জমি ঠিক করেছে, সেটি অনেক নিচু। এর আগেও সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তবে বেশি নিচু হওয়ার কারণে করা যায়নি। জায়গাটি ভরাট করতে বিপুল পরিমাণ মাটির প্রয়োজন হবে। ভূমি উন্নয়নে প্রায় ১২ কোটি টাকা খরচ করতে হবে। তা ছাড়া সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী, ৫০ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে কোনো প্রকল্প নেওয়ার আগে সমীক্ষা করতে হয়। জুলাই আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণের প্রকল্পে সমীক্ষা করা হয়নি। তাঁদের মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কারা ফ্ল্যাট পাবেন, সেটি ঠিক হয়নি।

সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, জুলাই আন্দোলনে ক শ্রেণিতে ‘অতি গুরুতর আহত’ ঘোষণা করা হয়েছে ৪৯৩ জনকে। খ শ্রেণিতে ‘গুরুতর আহত’ ঘোষণা করা হয় ৯০৮ জনকে। সব মিলিয়ে গুরুতর আহতের তালিকায় রয়েছে ১ হাজার ৪০১ জনের নাম। এ ছাড়া জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে এখন পর্যন্ত ৮৩৪ জনকে শহীদ ঘোষণা করা হয়েছে। শহীদ ও আহত পরিবারকে নানাভাবে সহায়তা দিচ্ছে সরকার। প্রত্যেকের পরিবার পাচ্ছে এককালীন টাকা। সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে এ টাকা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া প্রতি মাসে শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ভাতা দেওয়া হচ্ছে। এবার তাঁদের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হলো।

জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে ১৯ জন দুই চোখের দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। এক চোখ নষ্ট হয়েছে ৩৮২ জনের। জুলাই আন্দোলনে অনেকে পা হারিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, আহত ব্যক্তিদের অঙ্গহানির বিষয়টি মাথায় রেখে ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। ভবনে তাঁদের ওঠানামা এবং বাসায় বসবাসের উপযোগী করে নির্মাণ করা হবে। মিরপুর হাউজিং এস্টেটে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের নিজস্ব জমিতে মোট ১৫টি ভবন করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ