ভোজপুরি সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা পন্ডিত। ২০২১ সালে তার অন্তঃরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ক্লিপ ফাঁস হয়। এরপর ধর্মে মনোযোগ দেন, শোবিজ অঙ্গন থেকে হারিয়ে যান প্রিয়াঙ্কা। দীর্ঘ দিন পর আলোচনায় উঠে এলেন এই অভিনেত্রী। তবে এবার বিয়ের ঘোষণা দিয়ে খবরের শিরোনাম হলেন প্রিয়াঙ্কা।  

ইনস্টাগ্রামে বেশ কিছু ছবি পোস্ট করে প্রিয়াঙ্কা পন্ডিত লেখেন, “আমি ভগবান শ্রীকৃষ্ণের উপর ভরসা করে বসেছিলাম এবং তিনি সবকিছুর যত্ন নিয়েছেন। ভক্তি, পরিচয়, সেবা, গুরু, তার আবাসে স্থান এবং একজন জীবনসঙ্গী দিয়েছেন, যে এই আধ্যাত্মিক যাত্রায় আমাকে সাহার্য করবেন।”   

প্রিয়াঙ্কার পোস্ট করা ছবিতে তার হাতে লাল রঙের চুড়ি ও সিঁথিতে সিঁদুর পরা অবস্থায় দেখা যায়। যা সনাতন ধর্মের বিবাহিত মহিলার ঐতিহ্যের প্রতীক। তবে কবে কাকে বিয়ে করেছেন তা জানাননি প্রিয়াঙ্কা।

আরো পড়ুন:

রাশমিকার সঙ্গে জুটি বাঁধতে বিজয়ের কেন আপত্তি?

অবিবাহিত ভাবনা মা হতে যাচ্ছেন

জৌনপুরের বাসিন্দা প্রিয়াঙ্কা পন্ডিত ৫০টিরও বেশি ভোজপুরি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। এ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সেরা তারকাদের সঙ্গে জুটি বেঁধে অভিনয় করেছেন। এ তালিকায় রয়েছেন— খেসারি লাল যাদব, পবন সিং, রীতেশ পান্ডে প্রমুখ। 

প্রিয়াঙ্কার অন্তঃরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ফাঁস হওয়ার পর তার ব্যক্তিগত, পেশাগত জীবনে বিপর্যয় নেমে এসেছিলে বলে জানা যায়। তার সেই সময়ের প্রেমিকও সম্পর্ক ভেঙে দেন। ভোজপুরি চলচ্চিত্র জগতের অনেকে প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করেন।  

তবে অন্তঃরঙ্গ ভিডিওর নারী প্রিয়াঙ্কা নন বলে দাবি করেছিলেন তিনি। তার ভাষায়— “ভাইরাল ক্লিপের নারী আমি নই, ফুটেজটি এডিটিংয়ের মাধ্যমে তৈরি করা। আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য কেউ এমনটা করেছে।”

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

একাই মাসে শতাধিক ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করে দেন তৈয়বুর

সুনামগঞ্জে জরুরি রক্তের প্রয়োজন হলে যাঁদের নাম প্রথমেই মনে আসে, তাঁদের একজন তৈয়বুর রহমান (২৬)। তিনি নিজে নিয়মিত রক্ত দেন, রক্ত সংগ্রহ করে দেন এবং মানুষকে স্বেচ্ছায় রক্তদানে উৎসাহিত করেন। রক্তের টানে মানুষের পাশে দাঁড়ানোতেই তাঁর আনন্দ।

একটি বেসরকারি ব্যাংকে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি রক্তদানের এই মানবিক কাজকে নিজের করে নিয়েছেন তিনি। কয়েক বছর আগে একাই মানুষের জন্য রক্ত জোগাড় করতেন। এখন তিনি ব্লাড লিংক সুনামগঞ্জ নামের স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। ফলে কাজের পরিধি বেড়েছে কয়েক গুণ। মাসে একাই শতাধিক ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করে দেন তিনি। সংগঠনে যুক্ত হওয়ার পর থেকে আড়াই হাজারের বেশি রোগীর জন্য রক্ত জোগাড় করে দিয়েছেন। তাঁর কাছে আছে প্রায় এক হাজার রক্তদাতার ঠিকানা, রক্তের গ্রুপ ও যোগাযোগের তালিকা। সুনামগঞ্জে স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবী ও সংগঠকেরাও তাঁকে সহযোগিতা করেন।

তৈয়বুর রহমানের বাড়ি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার লক্ষ্মণশ্রী ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামে। তিনি ইসলামী ব্যাংক সুনামগঞ্জ শাখায় নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। রক্তের প্রয়োজনে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ, পরিবহন বা দৌড়ঝাঁপ—সবকিছুর ব্যয়ই মেটান নিজের স্বল্প বেতন থেকে।

রক্তদানের শুরুর স্মৃতি বলতে গিয়ে তৈয়বুর রহমান জানান, ২০২০ সালে তিনি তখন নারায়ণগঞ্জে কর্মরত ছিলেন। এক সহকর্মীর অনুরোধে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীর জন্য রক্ত দিতে ছুটে যান চাষাড়া এলাকায়। কিন্তু ওজন কম থাকায় রক্ত দিতে পারেননি। পরে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত এক শিশুর জন্য আবার হাসপাতালে যান এবং এবার রক্ত দিতে সক্ষম হন। প্রথমে কিছুটা ভয় ভয় ছিল তাঁর। পরে এটা কেটে যায়।

সুনামগঞ্জে বদলি হয়ে ফিরে এসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে মানুষের জন্য রক্ত সংগ্রহ করতে থাকেন বলে জানান তৈয়বুর রহমান। নিজের এলাকায় রক্তের গ্রুপ পরীক্ষার আয়োজন ও সচেতনতা ক্যাম্পেইনও করেছেন। এখন পর্যন্ত তিনি ১৭ বার রক্ত দিয়েছেন। অধিকাংশই থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের জন্য। ঈদের দিনও রক্ত দিয়েছেন তিনি। জেলা সদর হাসপাতাল ও শহরের সব বেসরকারি ক্লিনিকেই তাঁর নম্বর আছে। কোনো রোগীর জরুরি রক্তের প্রয়োজন হলে সেখান থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তবে তাঁর সবচেয়ে বড় ভূমিকা হলো রোগীর জন্য উপযুক্ত রক্তদাতা খুঁজে বের করা।

তৈয়বুর রহমান বলেন, রক্তদানের পর কিছু পরিবার এখনো তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখে, খবর নেয়। আবার কেউ কেউ রক্ত সংগ্রহে একটু দেরি হলে মনঃক্ষুণ্ন হন। কেউ রক্ত পেয়ে ধন্যবাদ দেওয়ারও প্রয়োজন মনে করেন না। তবু মন খারাপ করেন না তিনি। তিনি বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে তাহিরপুর উপজেলার এক প্রসূতি বোনকে রক্ত দিয়েছিলাম। এখনো ওই পরিবার যোগাযোগ রাখে। সময়-অসময় খোঁজ নেয়। এটা ভালো লাগে, এটা অন্য রকম রক্তের সম্পর্ক। এই কাজ করে আনন্দ পাই, তৃপ্তি পাই। যত দিন পারি, এই কাজ করে যাব।’

এখন পর্যন্ত ১৭ বার রক্ত দিয়েছেন তৈয়বুর রহমান

সম্পর্কিত নিবন্ধ