জোতার মৃত্যুর এটাই তাহলে কারণ, গাড়িটি কে চালাচ্ছিলেন জানাল পুলিশ
Published: 9th, July 2025 GMT
গাড়ি দুর্ঘটনায় গত সপ্তাহে মারা গেছেন লিভারপুলের পর্তুগিজ ফুটবলার দিয়োগো জোতা ও তাঁর ভাই আন্দ্রে সিলভা। স্প্যানিশ পুলিশের বিশ্বাস, দুর্ঘটনার সময় নির্ধারিত গতিসীমার চেয়ে বেশি গতিতে গাড়িটি চালানো হচ্ছিল।
আরও পড়ুনট্রাম্প–ইনফান্তিনো সম্পর্কে নতুন মোড়, ট্রাম্পের ভবনে অফিস খুলল ফিফা৬ ঘণ্টা আগেজোতার মতো আন্দ্রে সিলভাও ফুটবলার ছিলেন। পর্তুগালে দ্বিতীয় বিভাগের ক্লাব পেনাফিয়েলে খেলতেন ২৬ বছর বয়সী সিলভা। তাঁর চেয়ে দুই বছরের বড় জোতা মৃত্যুর দুই সপ্তাহ আগে শৈশবের প্রেমিকা রুতে কারদোসোকে বিয়ে করেন। পর্তুগালের হয়ে নেশনস লিগ জয়ের পাশাপাশি লিভারপুলে প্রিমিয়ার লিগ জিতেছেন জোতা।
স্পেনের সিভিল গার্ড (পুলিশ) কাল জানিয়েছে, জোতা ও তাঁর ভাইয়ের গাড়ি দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তারা তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। তবে তাদের বিশ্বাস, জোতা অতিরিক্ত দ্রুতগতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। চাকা ফেটে তাঁদের ল্যাম্বরগিনি গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তা থেকে ছিটকে পড়ে। পরে গাড়িটিতে আগুন ধরে যায়।
গাড়ি কে চালাচ্ছিলেন, এর আগে স্প্যানিশ পুলিশ তা নিশ্চিত করতে পারেনি। কিন্তু গতকাল তারা জানায়, গাড়িটি জোতা চালাচ্ছিলেন। স্পেনের জামোরা প্রদেশের এ-৫২ মহাসড়কে স্থানীয় সময় সকালে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটে। মহাসড়কের এই অংশে গাড়ির সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার।
আরও পড়ুনব্রাজিলিয়ানের জোড়া গোলে ব্রাজিলের ক্লাবের স্বপ্ন চূর্ণ করে ফাইনালে চেলসি৮ ঘণ্টা আগেসিভিল গার্ডের এক মুখপাত্র সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘বিশেষজ্ঞের প্রতিবেদন চূড়ান্ত হয়েছে, যেখানে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে গাড়ির একটি চাকার ছাপ ফেলে যাওয়াও পরীক্ষা করা হয়েছে। সড়কে যে গতিসীমা, তার চেয়ে বেশি গতিতে (গাড়ি) চালানোর প্রতি ইঙ্গিত করছে সবকিছু। সব পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বোঝা যায়, গাড়িটি চালাচ্ছিলেন দিয়োগো জোতা।’
তদন্ত শেষে এই প্রতিবেদন জামোরার পুয়েবলা দে সানাব্রিয়া আদালতে জমা দেওয়া হবে।
জোতা ও তাঁর ভাইয়ের শেষকৃত্যে লিভারপুলের অনেকেই এসেছিলেন। ছবিতে লিভারপুল কোচ আর্নে স্লটকে দেখা যাচ্ছে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: দ র ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
ওসমানী উদ্যানে আবার স্থাপনার পেছনে লক্ষ্য ‘টাকা কামানো’: বাপা
রাজধানীর ঐতিহাসিক ওসমানী উদ্যান উন্নয়নের নামে ধ্বংস করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) নেতারা। তাঁদের ভাষায়, পুরান ঢাকার ফুসফুসখ্যাত এই উদ্যানকে ঘিরে চলছে ‘অর্থ কামাইয়ের উন্নয়ন’, যার সঙ্গে জুলাইয়ের গণ–অভ্যুত্থানের ইতিহাস বা চেতনার কোনো সম্পর্ক নেই।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ওসমানী উদ্যান পরিদর্শন করেন বাপার নেতারা। পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এ কথাগুলো বলেন সংগঠনটির নেতারা।
বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের নেতৃত্বে উদ্যান পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন বাপার সহসভাপতি মহিদুল হক খান, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতা রুহিন হোসেন, বাপার সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির, যুগ্ম সম্পাদক আমিনুর, ফরিদুল ইসলাম ও হুমায়ুন কবির, নির্বাহী কমিটির সদস্য জাভেদ জাহান, জাতীয় কমিটির সদস্য শেখ আনছার আলী প্রমুখ। তাঁদের সঙ্গে গ্রীন ভয়েসের নেতা–কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।
২০১৮ সাল থেকে ওসমানী উদ্যান সাধারণ মানুষের জন্য বন্ধ। এই সময়ে উদ্যান উন্নয়নের নামে ব্যয় হয়েছে প্রায় শতকোটি টাকা। এখন সেখানে ‘জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ’ নির্মাণে আরও প্রায় ৪৭ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। পরিবেশবিদদের অভিযোগ, এই উদ্যানের আইনগত মর্যাদা উপেক্ষা করে বারবার অবকাঠামো নির্মাণই এখন মূল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। ‘উন্নয়ন’ নামে উদ্যানের ভেতরে নতুন স্থাপনা নির্মাণ করে আসলে জনগণের সম্পদ ধ্বংস করা হচ্ছে।
বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদার বলেন, ‘এখানে যেটা করা হইতেছে, এটা টাকা বানানো। এর সঙ্গে জুলাই ঘটনার কোনো সম্পর্ক নেই। প্রমাণটা হলো, এখানে যে ওয়াটার বডিজ আছে, ওখানে গেলেই দেখা যায়, ওখান থেকেই ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব হচ্ছে। এই স্মৃতি করে লাভটা কী? এই প্ল্যানটা আমি স্মৃতিস্তম্ভ বলি না, এটা স্রেফ মানি মেকিং প্রজেক্ট। আজকে যারা এগুলা (জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ) করছে, এগুলো কিছু মানি মেকিংয়ের জন্য করছে। এর মধ্যে আমি কোনো সঠিক প্ল্যানও দেখছি।’
ওসমানী উদ্যানকে তথাকথিত উন্নয়নের নামে ধ্বংস করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন সিপিবির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন। তিনি বলেন, ‘যেই সরকারই আসুক, তাদের মাথায় থাকে শুধু উন্নয়নের নামে টাকা কামানোর চিন্তা। বহুদিন ধরে উদ্যানটা ব্যারিকেড দিয়ে ঘেরা, জনগণ ঢুকতেই পারে না। এই প্রকল্পে জনগণের টাকা লুটপাট ছাড়া অন্য কোনো কর্মকাণ্ড আমি দেখি না। ওসমানী উদ্যান জনগণের সম্পদ। এই উদ্যান উন্মুক্ত থাকা দরকার। বিশেষ করে মেহনতি, সাধারণ মানুষের হাঁটাচলার ও বিশ্রামের জায়গা হিসেবে। অথচ আজ সেটাকে দখল করে তথাকথিত উন্নয়ন দেখানো হচ্ছে। আসলে এটা পরিবেশ ধ্বংসেরই আরেক নাম।’
ওসমানী উদ্যান পরিদর্শন শেষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় নগর ভবনে গিয়ে সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ক্ষোভের কথা জানান বাপার নেতারা। এ সময় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জহিরুল ইসলাম বাপা নেতাদের বলেন, সরকারের সিদ্ধান্তে ওসমানী উদ্যানে স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারবেন না।
আরও পড়ুনওসমানী উদ্যান: ঢাকার ‘ফুসফুসে’ আবার স্থাপনা ১১ অক্টোবর ২০২৫