ইউরোপের মুকুট হাতছাড়া হয়েছে তাদের। হারিয়েছে ঘরোয়া লিগের রাজত্বও। শিরোপাশূন্য মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদের আশা শুধুই ক্লাব বিশ্বকাপ। আর সেই মিশনেই আজকের সেমিফাইনালে তাদের সামনে ইউরোপের নয়া চ্যাম্পিয়ন দল ফ্রান্সের পিএসজি। বাংলাদেশ সময় বুধবার রাত ১টায় শুরু হবে এই ক্লাসিকো।

ইউরোপের বাইরে যুক্তরাষ্ট্রের ভিন্ন কন্ডিশনে এসে দুটি দলই এই আসরের শুরুতে অস্বস্তিতে ছিল। সৌদি ক্লাব আল হিলালের সঙ্গে ড্র করে স্প্যানিশ জায়ান্টরা। পিএসজি হোঁচট খেয়েছিল ব্রাজিলিয়ান ক্লাব বোটাফোগোর কাছে ১-০ গোলে হেরে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের গরম আর রোদের সঙ্গে একটু একটু করে মানিয়ে নিয়েছে ইউরোপের এই দুই দল। 

নিউ জার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামে স্থানীয় সময় দুপুর ৩টায় সেমিফাইনালে (বাংলাদেশ সময় রাত ১টা) রোদ মাথায় নিয়েই মুখোমুখি হবেন ডেম্বেলে-এমবাপ্পেরা। যাঁকে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের ‘ইউরোপিয়ান ক্ল্যাসিকো’ও বলা যেতে পারে। দুই দলের তারকাদের ভিড়ে তাই দারুণ একটি ম্যাচ দেখার অপেক্ষায় ফুটবলপ্রেমীরা। কোয়ার্টারে নাটকীয় ম্যাচে জার্মান ক্লাব বুরুশিয়া ডর্টমুন্ডকে ৩-২ গোলে হারিয়ে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে জাভি আলানসোর রিয়াল।

অন্যদিকে লুইস এনরিকের প্যারিসও আরেক জার্মান ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখকে ২-০ গোলে হারিয়ে সেমির মঞ্চে এসেছে। তবে লাল কার্ডের ক্ষত দুটি দলকেই নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। পিএসজি লাল কার্ডের কারণে তাদের দুই ডিফেন্ডার পাচো আর হার্নান্দেজকে পাচ্ছে না আজকের ম্যাচে। রিয়ালও তাদের নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডার হুইসেন্টকে পাচ্ছে না আগের ম্যাচে লাল কার্ড দেখার জন্যই। তাই রক্ষণটা দুই দলেরই আজ কিছুটা আলগা থাকতে পারে। যদিও রেকর্ড বলছে সর্বশেষ দুই দলের পাঁচ ম্যাচে অন্তত তিনটি করে গোল দেখেছেন দর্শকরা। তাই আজও গোলবন্যার একটি সেমিফাইনাল দেখা যেতে পারে নিউ জার্সিতে।

পিএসজির কোচ লুইস এনরিকের রেকর্ডও বলছে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে তাঁর কৌশল বেশ কার্যকর। বার্সা ও সেল্টাভিগোর কোচ থাকাকালে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে আটটি ম্যাচের চারটিতে জয়ী ছিলেন তিনি। একটিতে ড্র, বাকি তিনটিতে হার। পিএসজিতে এসে এনরিকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপাও এনে দিয়েছেন। সেই তুলনায় রিয়ালের কোচ জাভি আলোনসো অনেকটাই আনকোরা। যদিও রিয়ালের দায়িত্ব নেওয়ার পর কোনো ম্যাচ হারেননি তিনি। তবে আজ তাঁকে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে।

ক্লাব বিশ্বকাপের শুরুতে এমবাপ্পে অসুস্থ থাকায় কিছু ম্যাচ খেলেননি। তাঁর পজিশনে গঞ্জালো গার্সিয়াকে নিয়ে সফল কোচ। তবে পিএসজির বিপক্ষে শুরুর একাদশে এমবাপ্পেকেই দেখা যেতে পারে। ৪-৪-২ ফরমেশনে আক্রমণভাগে এমবাপ্পে ও ভিনিকে রেখে মাঝমাঠে বেলিংহাম, গুলার আর ভালবার্দেকে দেখা যেতে পারে।

লুইস এনরিক আবার বেশি আক্রমণাত্মক। ৪-৩-৩ ফরমেশনে তিনি দল সাজাচ্ছেন এ আসরে। যেখানে কার্ভাতাসখিলা, ডেম্বেলে আর দুয়েকে দিয়ে আক্রমণ সাজাচ্ছেন। মাঝমাঠে তাঁর ভরসা রুইজ, নেভেস আর ভিতিনহার ওপর। তবে পিএসজির সবচেয়ে বড় ভরসার জায়গা বোধহয় গোলরক্ষক দোন্নারোমা। ইতালিয়ান এই গোলরক্ষক আগের ম্যাচে মারাত্মকভাবে ট্যাকল করতে গিয়ে বায়ার্নের জামাল মুসিয়ালাকে দুর্ঘটনায় ফেলে দিয়েছিলেন। তাঁর সামনে আজ অন্তত সাবধান থাকবেন ভিনি-গার্সিয়ারা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক ল ব ব শ বক প প এসজ এমব প প ইউর প র দ ই দল প এসজ এনর ক

এছাড়াও পড়ুন:

১০ হাজার কোটি খরচের পর ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডেই কি চেলসির মুক্তি

‘ভিনি, ভিডি, ভিসি’—বাংলায় ‘এলাম, দেখলাম ও জয় করলাম’ বোধ হয় একেই বলে! ক্লাবে যোগ দেওয়ার দুই দিন পর অভিষেক এবং ছয় দিন পর দলের জয়ের নায়ক। হোয়াও পেদ্রোর শুরুটা সম্ভবত এর চেয়ে ভালো হতে পারত না। যদিও তাঁর ব্রাইটন ছেড়ে চেলসিতে যোগ দেওয়া নিয়ে ফুটবল–দুনিয়ায় আলোচনা হয়েছে সামান্যই এবং সেটাই স্বাভাবিক।

২৩ বছর বয়সী এই ব্রাজিলিয়ান চেলসির আমেরিকান মালিক টড বোয়েলির সময়ে কেনা ১৯ জন ফরোয়ার্ডের একজন। রোমান আব্রামোভিচের কাছ থেকে ক্লাবের মালিকানা নেওয়ার পর বোয়েলির অধীন চেলসি শুধু আক্রমণভাগের খেলোয়াড়দের পেছনে খরচ করেছে ৬০ কোটি পাউন্ড, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ৫ কোটি ৫০ লাখ পাউন্ড (প্রায় ৯১০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা) খরচ করা হয় পেদ্রোর জন্য।

চেলসিতে যোগ দেওয়ার পর শুরুতে আলোচনায় না থাকলেও আলো কাড়তে পেদ্রোর সময় লাগল মাত্র দুই ম্যাচ। ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে পালমেইরাসের বিপক্ষে বদলি নেমে ৩৬ মিনিট মাঠে থাকলেও সেদিন তেমন কিছু করতে পারেননি। কিন্তু গতকাল রাতে সেমিফাইনালের একাদশে সুযোগ পেয়েই যেন ভিন্ন এক রূপে আবির্ভূত হলেন পেদ্রো। ১৮ মিনিটে তাঁর দুর্দান্ত গোলে এগিয়ে যায় চেলসি। বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শটটি ফ্লুমিনেন্সের ৪৪ বছর বয়সী গোলরক্ষক ফাবিওর থামানোর কোনো সুযোগ ছিল না।

আরও পড়ুনব্রাজিলিয়ানের জোড়া গোলে ব্রাজিলের ক্লাবের স্বপ্ন চূর্ণ করে ফাইনালে চেলসি১৫ ঘণ্টা আগে

ম্যাচে দ্বিতীয় গোলটিও তাঁর। প্রতিপক্ষের অর্ধে এনজো ফার্নান্দেজের কাছ থেকে বল পেয়ে একক প্রচেষ্টায় এগিয়ে দুই ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে করেন দুর্দান্ত আরেকটি গোল। এই দুই গোলে চেলসিকে মৌসুমের দ্বিতীয় শিরোপার কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি পেদ্রো ঘোষণা করেছেন নিজের আগমনী বার্তাও।

ব্রাজিলিয়ান পেদ্রোর কাঁধে চড়ে আর্জেন্টাইন এনজোর উদ্‌যাপন

সম্পর্কিত নিবন্ধ