কিছু সিনিয়র নেতা বেঈমানি করেছিল বলে জাতীয় পার্টি সাতবার ভেঙেছে:
Published: 9th, July 2025 GMT
তৃণমূল নেতাকর্মী জিএম কাদেরের পাশে রয়েছে দাবি করে ‘কিছু সিনিয়র নেতা বেঈমানি করেছিল বলে জাতীয় পার্টি সাতবার ভেঙেছে’- এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির নব নিযুক্ত মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী।
বুধবার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কর্যালয় মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘‘বিগত দিনেও কিছু সিনিয়র নেতা ও প্রেসিডিয়াম সদস্য জাতীয় পার্টির সঙ্গে বেঈমানী করেছিল। এ কারণেই, জাতীয় পার্টি সাতবার ভেঙেছে। কিন্তু জাতীয় পার্টির তৃণমূল নেতাকর্মী সবসময় জাতীয় পার্টির সাথেই ছিল। তৃণমূল নেতাকর্মী কখনোই জাতীয় পার্টির মূল স্রোতের বাইরে যায়নি। গেলো ২৫ জুন জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা ঢাকায় এসে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন প্রকাশ করেছেন। সেই দিনই জাতীয় পাটির্র আগামী দিনের পথচলার ফয়সালা হয়ে গেছে।’’
‘‘জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের বক্তব্য বিভিন্ন মাধ্যম গুরুত্বের সঙ্গে পর্যালোচনা করে। কারণ, ২০২১ সালে তিনি যে বক্তৃতা করেছেন তা ২০২৪ সালে প্রতিফলিত হয়েছে। এখন যা বলছেন, তা আগামী দিনেও সঠিক প্রমাণিত হবে,’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের সততা ও স্বচ্ছতা জ্বলজ্বল্যমান মন্তব্য করে নতুন মহাসচিব বলেন, ‘‘৫ বছর গুরুত্বপূর্ণ ২টি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন, তার বিরুদ্ধে কেউ ১টি দুর্নীতির অভিযোগ করতে পারেনি। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারকে তিনি কর্তৃত্ববাদী সরকার বলতেন। আওয়ামী লীগ বারবার চেষ্টা করেও জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে কোন দুর্নীতির মামলা করতে পারেনি।’’
‘‘বাংলাদেশের সাবেক সফল রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ৯ বছর রাষ্ট্রপতি ছিলেন, সেনাপ্রধান ছিলেন। পল্লীবন্ধু যখন ক্ষমতার শীর্ষে ছিলেন তাখন দেশের মানুষ রাষ্ট্রপতির স্নেহের ছোট ভাই গোলাম মোহাম্মদ কাদেরকে চিনতেন না। তিনি নিজ যোগ্যতা বলে বড় বড় পদে চাকরি করেছেন। কখনোই দুর্নীতি তাকে স্পর্শ করতে পারেনি। যতবার জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে, ততবারই তিনি সততার শক্তিতে স্বমহিমায় ঘুরে দাঁড়িয়েছেন।’’ যোগ করেন তিনি।
২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বর্জন করেছিলেন জানিয়ে পাটোয়ারী বলেন, ‘‘মন্ত্রী থেকেও বেশির ভাগ জাতীয় পার্টির ৯০ ভাগ প্রার্থীদের নিয়ে সেই নির্বাচন বর্জন করেছিলেন গোলাম মোহাম্মদ কাদের। তখন সরকার জিএম কাদেরকে মন্ত্রিত্ব দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ইচ্ছে করলে ২-৪ জনকে মন্ত্রী বানাতে পারতেন তিনি। কিন্তু ২০১৪ সালে নির্বাচন বর্জন করে ৫টি বছর সংসদের বাইরে থেকে দেশ ও মানুষের পক্ষে কথা বলেছিলেন তিনি।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘২০১৯ সালে অনেকেই বলেছিলেন এরশাদের মৃত্যুর পর আর জাতীয় পার্টি টিকবে না। শ্রম ও মেধা দিয়ে জিএম কাদের জাতীয় পার্টিকে শক্ত ভীতের ওপর প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এমন বাস্তবতায় যদি কেউ কেউ বলেন, জিএম কাদেরকে অব্যাহতি দিয়ে দিবেন এটা শুধুই হাস্যকর। কারণ, জাতীয় পার্টির তৃণমূল নেতাকর্মী গোলাম মোহাম্মদ কাদেরের মূল শক্তি।’’
‘‘একটি সংবাদ সম্মলনে বলা হয়েছে কাউন্সিলে হেরে যাবার ভয়ে নাকি জিএম কাদের কাউন্সিল করছেন না। কাউন্সিলে কারা থাকবেন? তৃণমূল নেতাকর্মীরাই তো থাকবেন। তৃণমূল নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধভাবে জিএম কাদেরের পাশে আছেন। কাউন্সিলে জিএম কাদেরের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মত প্রার্থী কে?’’ সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্তদের প্রতি প্রশ্ন রাখেন পাটোয়ারী।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে জাতীয় পার্টি নতুন মহাসচিব বলেন, ‘‘স্বল্প সময়ের মধ্যে আমরা সকল বিভাগ, জেলা ও উপজেলায় যাবো। প্রত্যেকটি ইউনিটে বর্ধিত সভা করা হবে। পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ দেশ ও মানুষের জীবনে উন্নয়ন দিয়েছিলেন, আগামী দিনে দেশ ও মানুষের জীবনে উন্নয়ন দিবেন জাতীয় পার্টি চেয়রম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।’’
বাংলাদেশের ইতিহাসে ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা আছে ও ২০২৪ সালে গণহত্যার ইতিহাস আছে। কিন্তু জাতীয় পার্টির দেশ পরিচালনার সময়ে কোন গণহত্যার রেকর্ড নেই উল্লেখ করে পাটোয়ারী বলেন, ‘‘দেশের মানুষ জাতীয় পার্টিকে নিরাপদ মনে করে। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের উন্নয়ন ও সুশাসনের কথা নিয়ে আমরা জনগনের দ্বোরগোড়ায় যাবো। দেশের মানুষ জাতীয় পার্টিকে বিমুখ করবে না।’’
নেতাকর্মীদের পাশে থেকে জাতীয় পার্টিকে আরো এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন শামীম হায়দার পাটোয়ারী।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক মো.
এছাড়া ঢাকা মহানগর উত্তরের নেতা কাজী আবুল খায়ের, মো. আনিসউর রহমান খোকন, মাহমুদুল হাসান আলাল, মো. ইব্রাহিম খান, মো. নজরুল ইসলাম সর্দার, আক্তারুজ্জামান মাসুম, আবুল হোসেন, নাইমুল ইসলাম নয়ন, ফজলুল হক শিশির, হারুন পাটোয়ারী, আব্দুল বারেক, মোঃ এরশাদ, শফিকুল ইসলাম লিপন, নুরুল হক নুরু, সালেহ আহমেদ, মবিন হোসেন কিশোর উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন//
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ ল ম ম হ ম মদ ক দ র র জ এম ক দ র র ক উন স ল ল ইসল ম কর ছ ন মন ত র কর ছ ল সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
আফগানিস্তানে মধ্যরাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত
আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় হিন্দুকুশ অঞ্চলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এ তথ্য জানিয়েছে। দুই মাস আগেই দেশটিতে এক ভূমিকম্পে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।
ইউএসজিএস জানায়, রোববার দিবাগত রাতে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে খোলম এলাকায় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের গভীরতা প্রথমে ১০ কিলোমিটার বলা হয়। পরে তা সংশোধন করে গভীরতা ২৮ কিলোমিটার বলে জানায় সংস্থাটি।
আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছিল। দেশটির পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।
আরও পড়ুনআফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২২০৫, খোলা আকাশের নিচে মানুষ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫আফগানিস্তানে প্রায়শই ভূমিকম্প আঘাত হানে। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালা বরাবর, যেখানে ইউরেশীয় এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে।
ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার ভূমিকম্পবিদ ব্রায়ান ব্যাপটির দেওয়া তথ্য মতে, ১৯০০ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার বেশি ১২টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
আরও পড়ুন৩৫ বছরে আফগানিস্তানে ভয়াবহ যত ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫