চট্টগ্রামে আলোচিত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তা মো. শরীফ উদ্দিনকে চাকরিতে পুনর্বহাল করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে বরখাস্তকালীন সময়ের সকল বেতন, ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা ফিরিয়ে দিতে বলা হয়েছে দুদককে।

আজ বুধবার (৯ জুলাই) দুপুরে হাইকোর্টের বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। 

রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন মো.

শরীফ উদ্দিন। রায়ের বিষয়টি রাইজিংবিডিকে টেলিফোনে নিশ্চিত করেছেন শরীফ উদ্দিন।

শরীফ উদ্দিন ২০১৯ সাল থেকে দুদকের চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে দায়িত্ব পালন করছিলেন। কক্সবাজারসহ চট্টগ্রাম অঞ্চলে ভূমি অধিগ্রহণে দুর্নীতিসহ নানা চাঞ্চল্যকর বিষয় অনুসন্ধানে সক্রিয় ভূমিকার কারণে তিনি দেশজুড়ে পরিচিতি পান।

২০২২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি, কোনো ধরনের কারণ না দেখিয়ে হঠাৎ তাকে চাকরিচ্যুত করে দুদক। সেসময় শরীফ উদ্দিন অভিযোগ করেন, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার কারণেই তাকে অপসারণ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না থাকা সত্ত্বেও চাকরিচ্যুতি ছিল সংবিধান পরিপন্থী বলে দাবি করেন তিনি।

তার চাকরিচ্যুতির পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন পেশাজীবী শ্রেণি থেকেও তাকে পুনরায় চাকরিতে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে জনমত গড়ে ওঠে।

এছাড়া তার অপসারণের পর একাধিক অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদন, অনলাইন কনটেন্ট, এমনকি ইউটিউব ও ফেসবুকের ভিডিও কনটেন্ট পর্যন্ত মুছে ফেলার অভিযোগ উঠে, যা নিয়েও সমালোচনার ঝড় ওঠে।

হাইকোর্ট রায়ে মন্তব্য করে, শরীফ উদ্দিনের চাকরিচ্যুতির প্রক্রিয়া ছিল অবিচারমূলক ও আইন পরিপন্থী। আদালত স্পষ্টভাবে বলেন, “একজন সরকারি কর্মচারীকে শাস্তিমূলক প্রক্রিয়া ছাড়া চাকরিচ্যুত করা সংবিধান ও প্রশাসনিক ন্যায়বিচারের পরিপন্থী।”

এই রায়ের মাধ্যমে শরীফ উদ্দিনের দীর্ঘদিনের লড়াইয়ের অবসান ঘটলো এবং তার পেশাগত সম্মান পুনরুদ্ধার হলো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।

রায়ের প্রতিক্রিয়ায় শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘‘আলহামদুলিল্লাহ। আমি ন্যায় বিচার পেয়েছি।”

ঢাকা/রেজাউল/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ কর চ য ত

এছাড়াও পড়ুন:

সোনারগাঁয়ে স্কুলছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বিদ্যালয় থেকে ফেরার পথে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় সোমবার ভুক্তভোগীর মা সোনারগাঁ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। বুধবার বিষয়টি জানাজানি হয়।

অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের মো. আব্দুল্লাহ, লাল চান মিয়া ও ফয়েজ ভূঁইয়া।

ভুক্তভোগীর ভগ্নিপতি ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সপ্তাহ দুয়েক আগে ওই শিক্ষার্থী বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফিরছিল। এ সময় মো. আব্দুল্লাহ জোর করে ওই শিক্ষার্থীকে সড়ক থেকে তুলে নিয়ে একটি কক্ষে আটকে ফেলেন। পরে তার দুই বন্ধুকে মুঠোফোনে ডেকে আনেন। পরে তিনজন মিলে হাত–পা বেঁধে পালাক্রমে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের পর ভুক্তভোগীকে তাঁরা ছেড়ে দেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হতদরিদ্র পরিবারটির সদস্যরা ঘটনাটি স্থানীয় দুই ব্যক্তিকে জানান। তাঁরা ঘটনাটি মীমাংসার আশ্বাস দেন। প্রায় দুই সপ্তাহ পরেও কোনো সুরাহা না পেয়ে সোমবার ওই শিক্ষার্থীর মা সোনারগাঁ থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।

ভুক্তভোগীর ভগ্নিপতি বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। আইন–আদালত বুঝি না। গ্রামের মাতবরেরা মীমাংসার কথা বইলা কোনো ব্যবস্থা নেয় নাই। সোমবার আমরা সোনারগাঁ থানায় গেলে একটা লিখিত অভিযোগ রাখা হয়। পরে আমাদের তালতলা ফাঁড়িতে পাঠানো হয়।’

অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা তালতলা তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, বুধবার সকালে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বাদী ও তাঁর পরিবারের কাউকে তিনি বাড়িতে পাননি। ঘটনার মীমাংসার চেষ্টার বিষয়ে তাঁর জানা নেই।

সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, তদন্তের দায়িত্বে থাকা এসআইকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ