রাজস্থানে ভারতীয় বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত, দুই পাইলট নিহত
Published: 9th, July 2025 GMT
ভারতের রাজস্থান রাজ্যের চুরুর রতনগড় তেহসিলে ভারতীয় বিমানবাহিনীর (আইএএফ) একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। বিমানের আরোহী দুজন পাইলটই নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে আইএএফ।
ভারতীয় বিমানবাহিনী ‘এক্স’–এ এক পোস্টে জানিয়েছে, ‘আজ একটি নিয়মিত প্রশিক্ষণ মিশনের সময় আইএএফের একটি জাগুয়ার ট্রেনার বিমান দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এটি রাজস্থানের চুরু জেলায় বিধ্বস্ত হয়। এই দুর্ঘটনায় দুই পাইলটই মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন এবং পরে তাঁদের মৃত্যু হয়।
চুরু জেলার পুলিশ সুপার জয় যাদব বলেন, আজ বুধবার স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১২টার দিকে চুরু জেলার ভাবানা বাদাভানে গ্রাম সংলগ্ন এলাকায় যুদ্ধবিমানটি ভেঙে পড়ে। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, বিমানে দুজন পাইলট ছিলেন। প্রথমে তাঁদের সুরক্ষা সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলা হয়নি। পরে বিমানবাহিনী মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে।
এর আগেও ২০২৪ সালের এপ্রিলে গুজরাটের জামনগর জেলার সুভর্দা গ্রামে খোলা মাঠে আইএএফের একটি দুই আসনের জাগুয়ার যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। ওই ঘটনায় একজন পাইলট নিহত হয়েছিলেন। তখনো বিমানটি প্রশিক্ষণ মিশনে ছিল।
দুই আসনের জাগুয়ার যুদ্ধবিমানটি নিয়ে রাতের প্রশিক্ষণ চালানো হচ্ছিল। জামনগর শহর থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরে কালাভাদ হাইওয়ের পাশে একটি খোলা মাঠে এটি ভেঙে পড়েছিল।
এর আগে ২০২৪ সালের মার্চে হরিয়ানার আম্বালা বিমানঘাঁটি থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পর একটি জাগুয়ার যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। একই দিনে আরেকটি এএন–৩২ পরিবহন বিমান পশ্চিমবঙ্গের বাগডোগরায় জরুরি অবতরণ করে।
তবে ওই দুই দুর্ঘটনার সময় উভয় বিমানের ক্রুরা নিরাপদে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন। জাগুয়ার বিমানটি তখন প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে বিধ্বস্ত হয়েছিল বলে জানা যায়। তবে এএন–৩২ বিমানের জরুরি অবতরণের কারণ সঙ্গে সঙ্গে জানা যায়নি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ম নব হ ন ব ম নট
এছাড়াও পড়ুন:
২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে নির্বিচার পাখির মতো গুলি করা হয়: মামুনুল হক
ইসলামি জনতাকে বারবার বুলেটের আঘাতে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হক বলেছেন, ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে নির্বিচার পাখির মতো গুলি করা হয়। ২০২১ সালে মোদিবিরোধী আন্দোলনের কারণে আলেমদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ২০২৪ সালে জুলাই বিপ্লবে এ দেশে আপামর তৌহিদি জনতা, ছাত্রজনতা, কৃষক–শ্রমিক–মজুরদের হত্যা করে বাংলাদেশকে রক্তে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
আজ বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া উপজেলা শাখার আয়োজনে সরকারি মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে নির্বাচনী গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মামুনুল হক এ কথা বলেন।
আগামীর বাংলাদেশ ইসলামের বাংলাদেশ হবে বলে দাবি করেন মামুনুল হক। তিনি জানান, বিগত সময়ে যারা ক্ষমতার মসনদে ছিল, তারা দেশের প্রতিনিধি নয়; বরং ভিনদেশি কৃতদাসী হিসেবে ক্ষমতা দখল করে রেখেছিল। এ দেশের মানুষের অধিকার আদায় নয়, ভিনদেশিদের স্বার্থ আদায় করাই ছিল তাদের মূল লক্ষ্য। দেশটাকে উজাড় করে সোনার বাংলাকে শ্মশান বানিয়ে মানুষের রক্ত ও জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলে দেশটাকে গুমের রাজত্বে পরিণত করা হয়েছিল। বাংলাদেশটাকে মৃত্যুকূপে পরিণত করা হয়েছিল।
বিগত সরকারের আমলে ইসলামি নেতাদের বছরের পর বছর বিনা বিচারে কারাগারে আটকে রাখা হয়েছিল অভিযোগ করে মামুনুল হক বলেন, জেল–জুলুম–হুলিয়া চালানো হয়েছিল, ফাঁসির কাষ্ঠে ঝোলানো হয়েছিল। কারাগারে বিনা চিকিৎসায় আলেমদের ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মৃত্যুর কোলে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল। ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল—১৫টি বছর ছিল আলেম–ওলামা তথা ইসলামপন্থীদের রক্ত দেওয়ার, ত্যাগ ও কোরবানির সময়। সব জুলুম–নির্যাতনের পর চব্বিশের বিপ্লব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। চব্বিশের এ বিপ্লবে যারা বুক চিতিয়ে জীবন দিয়েছিল, তাদের সিংহভাগ ছিল আলেমসমাজ। জীবন ও রক্তের বিনিময়ে বিদেশি আধিপত্যমুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করা হয়েছে। নতুন করে আবার বিদেশি পরাজিত শক্তি অন্য কারও মাথার ওপর ভর করে বাংলার মানুষকে যদি জিঞ্জিরাবদ্ধ করতে চায়, তা বরদাশত করা হবে না।
ঐক্যবদ্ধ জনগণ যাদের প্রতিহত করেছে, তারা ভিন্ন রাজনৈতিক দলের আশ্রয়ে বাংলাদেশের মানুষকে জিম্মি করার চেষ্টা চালাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন মামুনুল হক। তিনি বলেন, ‘আমরা শপথ করছি, জীবন দিয়ে যেই ফ্যসিবাদ বিতাড়িত করেছি, সেই ফ্যাসিবাদ ভিন্নরূপে বাংলার ক্ষমতার মসনদে আসার পাঁয়তারা করলে আমরা রাজপথে লড়াই করে মোকাবিলা করব। নিজের বক্তব্যে চাঁদাবাজি, লুটপাট, দুর্নীতি বন্ধ ও জুলাই সনদের আইনিভিত্তি বাস্তবায়নে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতীকের পাশাপাশি গণভোটে হ্যাঁ ব্যালটে সিল দিতে সবার প্রতি আহ্বান জানাই।’
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস উপজেলা শাখার সভাপতি হাফেজ আবদুল লতিফের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আতাউল্লাহ আমীন, নায়েবে আমির শাহ মুহাম্মদ সাঈদ নূর, মাওলানা হেদায়েতুল্লাহ হাদী, ফুলবাড়িয়া আসনে খেলাফত মজলিস মনোনীত প্রার্থী মুফতি আবদুল কাদের, জামায়াত মনেনানীত প্রার্থী অধ্যক্ষ কামরুল হাসানসহ খেলাফত মজলিসের অন্য নেতারা।
একই দিন বিকেলে ভালুকা সরকারি কলেজ মাঠে আয়োজিত সমাবেশেও প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মামুনুল হক।