ক্রিকেট দলে একজন ‘হামজা’র অভাব দেখছেন আকরাম
Published: 9th, July 2025 GMT
জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান মনে করেন, জাতীয় ফুটবলে দল যেমন হামজা চৌধুরীর মতো একজন আইকন পেয়েছে, ক্রিকেট দলে এই মুহূর্তে তেমন কেউ নেই।
আরও একটি সিরিজ হার, আরও একটি ব্যর্থতা। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের যেন নেতিবাচকতার বৃত্তে ঘুরপাক খাচ্ছে। তাতে দর্শক–আগ্রহও যে কমেছে, আভাস পাওয়া যায় সম্প্রচারে। মে মাসে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজ দেখাতে আগ্রহ ছিল না কারও, শেষ পর্যন্ত তা দেখানো হয়েছে রাষ্ট্রীয় চ্যানেল বিটিভিতে। এ মাসের ২০ তারিখ থেকে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ টি–টোয়েন্টি সিরিজ দেখানোর আগ্রহী কোনো সম্প্রচারকও এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সের অবনতিই কি এর কারণ? আজ মিরপুরে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বিসিবি পরিচালক আকরাম খানের কথায় উঠে এসেছে ‘আইকন’ না থাকার আক্ষেপ।
আরও পড়ুন‘ক্রিকেটাররা অতিরিক্ত চাপে থাকে, কিসের চাপ, আমি জানি না’২ ঘণ্টা আগেচলতি বছর বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল বিগত বছরের তুলনায় বেশি দর্শক মনোযোগ পেয়েছে। এ ক্ষেত্রে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন হামজা চৌধুরীর লাল–সবুজ জার্সি গায়ে চড়ানোর ভূমিকা অনেক।
আকরামের মতে জাতীয় ফুটবলে দল যেমন হামজার মতো আইকন পেয়েছে, ক্রিকেট দলে এই মুহূর্তে তেমন কারও অভাব আছে, ‘আপনি যদি পারফর্ম না করেন, তাহলে তো প্রভাব পড়বেই। এটা এখন না হোক, পরে হবে। একটা দেশে আইকন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ফুটবলে হামজা এসেছে, আগের তুলনায় অনেক জনপ্রিয়তা বেড়েছে, আগ্রহ বেড়েছে। আমার বাসায় আমার মেয়েও গেছে খেলা দেখতে।’
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে হারের পর বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা।.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক র ক ট দল আকর ম ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের কর্মবিরতি, রোগী ভোগান্তি চরমে
চার বছর ধরে গাজীপুরের কালীগঞ্জে বসবাস করছেন সিরাজগঞ্জের আব্দুল কাদের (৩০)। স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করা এই শ্রমিক রবিবার (৩০ নভেম্বর) সকালে তার অসুস্থ মা জরিনা বেগমকে রক্ত দিতে নিয়ে যান কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। তাদের সঙ্গে ছিলেন রক্তদাতা।
কাদের জানান, পরিকল্পনা ছিল, মাকে রক্ত দেওয়া শেষে বাড়িতে গিয়ে বিশ্রাম নিয়ে রাতে কারখানার কাজে যোগ দেবেন। সকাল ৯টার পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্যাথলজি বিভাগের সামনে গিয়ে দেখেন, দরজায় তালা ঝুলছে। সেখানে কর্মরতদের সবাই তখন বাইরে কর্মবিরতি পালন করেছেন। নিরুপায় হয়ে মাকে নিয়ে ফিরে যেতে হয়েছে তাকে।
আরো পড়ুন:
নোয়াখালীতে ভুল চিকিৎসায় তরুণীর মৃত্যুর অভিযোগ
বিয়ে বাড়ির খাবার খেয়ে একজনের মৃত্যুর অভিযোগ, হাসপাতালে ১৭
শুধু কাদের একাই নন, কর্মবিরতির কারণে কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ করেছেন হাসপাতালে আসা আরো অনেক রোগী ও তাদের স্বজনরা।
গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্সে ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে আজ সকাল থেকে কর্মবিরতি পালন করেছেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা। ‘মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ’-এর ব্যানারে এই কর্মবিরতি পালিত হয়।
কালীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট ১০ম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ উপজেলা শাখার সমন্বয়কারী মো. হাফিজুর রহমান বলেন, “ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আজ রবিবার সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেছি। দাবি মানা না হলে, আগামী ৩ ডিসেম্বর সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালন করা হবে। এরপরও সমাধান না এলে ৪ ডিসেম্বর পূর্ণ কর্মদিবস ও ‘কমপ্লিট শাটডাউন’-এর মাধ্যমে সর্বাত্মক কর্মবিরতি পালন করা হবে।”
তিনি জানান, কর্মসূচি চলাকালে জরুরি বিভাগ চালু থাকলেও অন্যান্য বিভাগে সেবা কার্যক্রম সীমিত রাখা হয়েছিল। তিনি দ্রুত দাবি মেনে নিতে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে দুর্ভোগের কথা জানান মামুন মিয়া। তিনি বলেন, “শরীরের প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে সকাল ৯টায় হাসপাতালে আসি। চিকিৎসকের পরামর্শ নিলেও ওষুধ নিতে ফার্মেসির সামনে সাড়ে ৯টা থেকে অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। ফার্মেসির কর্মীরা সবাই আন্দোলনে থাকায় ওষুধ না নিয়েই ফিরে যেতে হচ্ছে।”
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দ্বিতীয় তলার ২২১ নম্বর কক্ষের সামনে ডিজিটাল এক্সরে করাতে বহু রোগী ও স্বজনের জটলা দেখা যায়। রুমের দরজাও তালাবদ্ধ। দীর্ঘ অপেক্ষা আর হতাশায় ক্ষুব্ধ হয়ে একজন রোগী জানান, কয়েকদিন পরপর আন্দোলন! শেষ ভোগান্তি তো পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকে। সরকার দ্রুত সিদ্ধান্ত নিলে এই যন্ত্রণা সহ্য করতে হতো না।
মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে পেশাগত বৈষম্য নিরসন ও ন্যায্য মর্যাদা প্রতিষ্ঠার দাবিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার আবেদন জানানো হলেও কার্যকর কোনো অগ্রগতি হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে তারা আন্দোলনের পথে নেমেছেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রেজওয়ানা রশীদ বলেন, “মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের দাবিগুলো সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অবহিত করা হয়েছে। তাদের আন্দোলনের কারণে কিছুটা সেবা বিঘ্নিত হলেও জরুরি সেবাকে অগ্রাধিকার দিয়ে চালু রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করতে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি এবং সবাইকে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ বেছে নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”
ঢাকা/রফিক/মাসুদ