মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে টানা বৃষ্টিতে নোয়াখালীতে ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। জেলার বেশিরভাগ সড়ক পানিতে ডুবেছে। পানি ঢুকে পড়েছে বসতবাড়িতে। জনজীবনে নেমে এসেছে দুর্ভোগ। এর মধ্যে পার্শ্ববর্তী জেলা ফেনীর মুহুরী নদীতে পানি বাড়তে থাকায় নোয়াখালীতে বন্যার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।  

বুধবার (৯ জুলাই) জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.

রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘণ্টায় নোয়াখালীতে ২০৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে আরো ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এ অবস্থায় নদীবন্দরে ১ নম্বর ও সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে উপকূলীয় জেলা নোয়াখালীর চারটি উপজেলার মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী বুধবার ও বৃহস্পতিবারের পরীক্ষাগুলো স্থগিত করা হয়েছে। 

আরো পড়ুন:

বৃষ্টিতে খাগড়াছড়ির নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি

চট্টগ্রামে বৃষ্টি অব্যাহত, দুর্ভোগ

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নুর উদ্দিন জাহাঙ্গীর জানিয়েছেন, দুই দিন ধরে নোয়াখালীতে টানা বৃষ্টির ফলে সদর, সুবর্ণচর, কবিরহাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জলাবদ্ধতার কবলে পড়েছে। বিদ্যালয়ে যাতায়াতের রাস্তা ডুবে গেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এসব উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা তার কাছে বুধবার ও বৃহস্পতিবার মাধ্যমিক পর্যায়ের সব স্কুল ও মাদ্রাসার চলমান অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা স্থগিত রাখার নির্দেশনা চেয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আগামী দুই দিনের পরীক্ষা স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নোয়াখালী জেলা কার্যালয় জানিয়েছে, অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে এ জেলায় এক দিনে পানি বেড়েছে ১৭ সেন্টিমিটার। তবে, তা এখনো বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার নিচে আছে। টানা বৃষ্টিতে নোয়াখালীর সদর, কোম্পানীগঞ্জ, কবিরহাট ও সুবর্ণচরে বেশি জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।

অপরদিকে, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে জেলার অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। অনেকের বসতঘরে পনি ঢুকেছে। বেশি জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে জেলা শহর মাইজদীতে। এখানে বিভিন্ন সড়ক ও পাড়া-মহল্লা পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। নোয়াখালী পৌর শহরের স্টেডিয়াম পাড়া, জেলখানা সড়ক এলাকা, ফকিরপুর, হরিনারায়ণপুর, লক্ষ্মীনারায়ণপুর, হাউজিংসহ বেশিরভাগ এলাকার সড়কগুলোতে হাঁটুপানি জমেছে। চলতি বর্ষায় শহরের বেশিরভাগ সড়কে খানাখন্দ তৈরি হওয়ায় সড়কগুলো যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে।

স্থানীয়রা বলছেন, পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাব এবং পানি নিষ্কাশনের নালা ও জলাশয়গুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় শহরবাসীর এ দুর্ভোগ। এ ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা দায়ী। 

টানা বৃষ্টিতে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভা এলাকার করালিয়া, মওদুদ স্কুল, কলেজ গেট, হাসপাতাল গেটসহ অনেক এলাকা ডুবে গেছে। বেগমগঞ্জ, কবিরহাট, সুবর্ণচর ও সেনবাগ উপজেলায় মুষলধারে বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার খবর পাওয়া গেছে। 

নোয়াখালী জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেছেন, বিভিন্ন এলাকা আমি ঘুরে দেখেছি। উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার কমিটির বৈঠক চলছে।  

ঢাকা/সুজন/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ক ষ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ফিলিস্তিনি বন্দীকে নির্যাতনের ভিডিও ফাঁস, ইসরায়েলে সেনাবাহিনীর সাবেক প্রসিকিউটর গ্রেপ্তার

ইসরায়েলি পুলিশ দেশটির সেনাবাহিনীর সাবেক একজন প্রসিকিউটরকে গ্রেপ্তার করেছে। একজন ফিলিস্তিনি বন্দীর ওপর ইসরায়েলি সেনাদের নির্যাতনের ভিডিও ফাঁস হওয়ার পর ওই নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মেজর জেনারেল পদমর্যাদার ওই সাবেক প্রসিকিউটরের নাম ইয়াফাত তোমের-ইয়েরুশালমি। গতকাল সোমবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী।

জানা যায়, অনলাইনে ওই ভিডিওটি ফাঁস হওয়ার পর ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছিল। তখন তিনি তাঁর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর নিখোঁজ ছিলেন।

ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, সৈন্যরা এক বন্দীকে আলাদা স্থানে নিয়ে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁদের সঙ্গে একটি কুকুর রয়েছে। তাঁরা দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণের সরঞ্জাম ব্যবহার করে নিজেদের কার্যকলাপ এমনভাবে আড়াল করে রেখেছেন, যাতে কেউ দেখতে না পারে।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ভিডিও ফাঁসের ঘটনাকে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকে ‘জনসংযোগের ওপর সবচেয়ে তীব্র আক্রমণ’ বলে মন্তব্য করেছেন।

আরও পড়ুনফিলিস্তিনি বন্দীর ওপর নির্যাতনের ভিডিও ফাঁস ঘিরে ইসরায়েলের শীর্ষ আইনি কর্মকর্তার পদত্যাগ০১ নভেম্বর ২০২৫

অধিকৃত পশ্চিম তীরের রামাল্লা থেকে আল-জাজিরার নউর ওদেহ বলেন, ওই নারী প্রসিকিউটরের আটকের ঘটনা ইসরায়েলে ‘রাজনৈতিক ও আইনি ঝড়’ তৈরি করেছে। তবে আটক হওয়া ব্যক্তির ওপর বাড়তি মনোযোগ মূল ঘটনা থেকে নজর সরিয়ে দিচ্ছে।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলের কারাগারগুলোয় অন্তত ৭৫ জন ফিলিস্তিনি বন্দীর মৃত্যু হয়েছে।

আরও পড়ুন‘স্বপ্ন ছিল বুকে জড়িয়ে ধরার, এখন আশা দাফনটা যদি অন্তত করতে পারি’২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ