মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক হুমকিতে এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলো হতাশা প্রকাশ করেছে। একই সঙ্গে তারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দিয়েছে। দেশগুলো ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে অবিশ্বাসমূলক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে। এরই মধ্যে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর জোট আসিয়ানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলন শুরু হয়েছে। সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে বুধবার মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম সতর্ক করে বলেছেন, বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।  

মার্কিন শুল্ক আরোপের হুমকি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জোটটিকে ক্ষুব্ধ করেছে। আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, আসিয়ান দেশগুলোকে আন্তঃবাণিজ্য বৃদ্ধি, আঞ্চলিক একীকরণে বিনিয়োগ এবং বাইরের শক্তির ওপর কৌশলগত নির্ভরতা কমাতে হবে। 

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও আজ আলোচনায় যোগ দেবেন। মালয় ইউনিভার্সিটির পররাষ্ট্র, কৌশল ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক কলিন্স চং ইউ কিট বলেন, মার্কিন নিরাপত্তা ছাতা ব্যবহার বন্ধ করে আসিয়ান দেশগুলোর উচিত অর্থনৈতিকভাবে চীনের দিকে ঘনিষ্ঠ হওয়া। 

পলিটিকো জানায়, ট্রাম্পের চিঠি পাওয়ার পর এশিয়ার দেশগুলোর কর্মকর্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এক কর্মকর্তা বলেন, ট্রাম্পের চিঠির ব্যাপারে আগে থেকে তাদের সতর্ক করা হয়নি। কূটনৈতিক নীতি অনুসরণ করা হয়নি। তাদের শঙ্কা, ট্রাম্পের পদক্ষেপ এই অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে দেশটির দীর্ঘদিনের সম্পর্ক নষ্ট করতে পারে।  

ওবামা প্রশাসনের সময় আসিয়ানবিষয়ক মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্কট মার্সিয়েলও বিষয়টি নেতিবাচকভাবে দেখছেন। যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপ এখানে বড় সমস্যা তৈরি করতে পারে। চীনের কর্মকর্তারা বলেছেন, স্পষ্টতই ট্রাম্পের শুল্কের কারণে আসিয়ান দেশগুলোতে ভীতি তৈরি হয়েছে। বেইজিং তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসার তাগিদ অনুভব করছে। শুল্ক আরোপে দক্ষিণ কোরিয়াও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জাপান ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে দুঃখজনক হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।       

মঙ্গলবার চিঠি পাওয়া দেশগুলোর মধ্যে ১০টিই আসিয়ানের সদস্য। দেশগুলো হলো– থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, মিয়ানমার, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, ব্রুনাই, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন ও সিঙ্গাপুর। 
বিবিসি জানায়, ট্রাম্প বলেছেন, অন্যান্য দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকারী তামার ওপর ৫০ শতাংশ নতুন কর আরোপ করা হবে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ অনুসারে, গত বছর যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ৮ লাখ ১০ হাজার টন পরিশোধিত তামা আমদানি করে, যা তাদের ব্যবহৃত তামার প্রায় অর্ধেক। চিলি ছিল সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী, তার পরই কানাডা। 

রয়টার্স জানায়, চলতি বছর এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ১০০ বিলিয়ন বা ১০ হাজার কোটি ডলার শুল্ক আয় করেছে। ট্রাম্পের নতুন শুল্কের কারণে ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ এই আয় ৩০০ বিলিয়ন বা ৩০ হাজার কোটি ডলারে উঠতে পারে।

জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জ গতকাল বলেছেন, ট্রাম্পের হুমকির মুখে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বর্ধিত শুল্ক এড়াতে একটি চুক্তির সম্ভাবনা সম্পর্কে ‘সতর্কতার সঙ্গে আশাবাদী’। 

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং বলেছেন, ইউরোপীয় পক্ষ বুঝতে পারবে চীন-ইইউ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক ভারসাম্যপূর্ণ করা দরকার।  

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র য ক তর ষ ট র পরর ষ ট র বল ছ ন আস য় ন

এছাড়াও পড়ুন:

১০ হাজার কোটি খরচের পর ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডেই কি চেলসির মুক্তি

‘ভিনি, ভিডি, ভিসি’—বাংলায় ‘এলাম, দেখলাম ও জয় করলাম’ বোধ হয় একেই বলে! ক্লাবে যোগ দেওয়ার দুই দিন পর অভিষেক এবং ছয় দিন পর দলের জয়ের নায়ক। হোয়াও পেদ্রোর শুরুটা সম্ভবত এর চেয়ে ভালো হতে পারত না। যদিও তাঁর ব্রাইটন ছেড়ে চেলসিতে যোগ দেওয়া নিয়ে ফুটবল–দুনিয়ায় আলোচনা হয়েছে সামান্যই এবং সেটাই স্বাভাবিক।

২৩ বছর বয়সী এই ব্রাজিলিয়ান চেলসির আমেরিকান মালিক টড বোয়েলির সময়ে কেনা ১৯ জন ফরোয়ার্ডের একজন। রোমান আব্রামোভিচের কাছ থেকে ক্লাবের মালিকানা নেওয়ার পর বোয়েলির অধীন চেলসি শুধু আক্রমণভাগের খেলোয়াড়দের পেছনে খরচ করেছে ৬০ কোটি পাউন্ড, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ৫ কোটি ৫০ লাখ পাউন্ড (প্রায় ৯১০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা) খরচ করা হয় পেদ্রোর জন্য।

চেলসিতে যোগ দেওয়ার পর শুরুতে আলোচনায় না থাকলেও আলো কাড়তে পেদ্রোর সময় লাগল মাত্র দুই ম্যাচ। ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে পালমেইরাসের বিপক্ষে বদলি নেমে ৩৬ মিনিট মাঠে থাকলেও সেদিন তেমন কিছু করতে পারেননি। কিন্তু গতকাল রাতে সেমিফাইনালের একাদশে সুযোগ পেয়েই যেন ভিন্ন এক রূপে আবির্ভূত হলেন পেদ্রো। ১৮ মিনিটে তাঁর দুর্দান্ত গোলে এগিয়ে যায় চেলসি। বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শটটি ফ্লুমিনেন্সের ৪৪ বছর বয়সী গোলরক্ষক ফাবিওর থামানোর কোনো সুযোগ ছিল না।

আরও পড়ুনব্রাজিলিয়ানের জোড়া গোলে ব্রাজিলের ক্লাবের স্বপ্ন চূর্ণ করে ফাইনালে চেলসি১৫ ঘণ্টা আগে

ম্যাচে দ্বিতীয় গোলটিও তাঁর। প্রতিপক্ষের অর্ধে এনজো ফার্নান্দেজের কাছ থেকে বল পেয়ে একক প্রচেষ্টায় এগিয়ে দুই ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে করেন দুর্দান্ত আরেকটি গোল। এই দুই গোলে চেলসিকে মৌসুমের দ্বিতীয় শিরোপার কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি পেদ্রো ঘোষণা করেছেন নিজের আগমনী বার্তাও।

ব্রাজিলিয়ান পেদ্রোর কাঁধে চড়ে আর্জেন্টাইন এনজোর উদ্‌যাপন

সম্পর্কিত নিবন্ধ