দুদক থেকে শরীফের চাকরিচ্যুতি অবৈধ, জ্যেষ্ঠতাসহ পুনর্বহালের নির্দেশ
Published: 9th, July 2025 GMT
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপসহকারী পরিচালক পদ থেকে মো. শরীফ উদ্দিনকে চাকরিচ্যুতির আদেশ অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে জ্যেষ্ঠতা ও অন্যান্য সুবিধাদিসহ তাঁকে চাকরিতে পুনর্বহাল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ রায় দেন। চাকরিচ্যুতির বৈধতা নিয়ে শরীফ উদ্দিনের করা রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে এ রায় দেওয়া হয়।
তিন বছর আগে ২০২২ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়। কোনো ধরনের কারণ দর্শানো ছাড়াই কোনো কর্মীকে চাকরি থেকে অপসারণ-সংক্রান্ত দুদক কর্মচারী বিধিমালার ৫৪ (২) বিধির বৈধতা নিয়ে ও চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশনা চেয়ে একই বছরের ১৩ মার্চ শরীফ রিট করেন।
প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে দুদকের উপসহকারী পরিচালক পদ থেকে শরীফ উদ্দিনকে চাকরিচ্যুতির আদেশ কেন বেআইনি হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। একই সঙ্গে বেতন, সব সুবিধাদিসহ তাঁকে চাকরিতে পুনর্বহাল করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয় রুলে। দুদকসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
রুলের ওপর গতকাল মঙ্গলবার শুনানি শেষে আদালত আজ রায়ের জন্য দিন রেখেছিলেন। রুল যথাযথ (অ্যাবসলিউট) ঘোষণা করে আজ রায় দেওয়া হলো।
রায়ের সময় শরীফ উদ্দিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালতে শরীফ উদ্দিনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো.
রায়ের পর জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দীন দোলন প্রথম আলোকে বলেন, শরীফ উদ্দিনের চাকরিচ্যুতির আদেশ অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। জ্যেষ্ঠতা ও সব সুযোগ-সুবিধাসহ তাঁকে চাকরিতে ৩০ দিনের মধ্যে পুনর্বহাল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দুদকের আইনজীবী আসিফ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, রায়ের বিষয়টি দুদককে জানানো হবে। আপিল করবে কি না, সে বিষয়ে দুদক সিদ্ধান্ত নেবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ কর চ য ত র আইনজ ব চ কর ত
এছাড়াও পড়ুন:
জঙ্গি সন্দেহে তুলে নেওয়ার ৫ বছর পর মুক্তি পেলেন খুবির দুই
জঙ্গি সন্দেহে তুলে নেওয়ার ৫ বছর পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নুর মোহাম্মাদ অনিক এবং মোজাহিদুল ইসলাম।
সোমবার (৭ জুলাই) রাতে খুলনা জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান তারা। গত সপ্তাহে উচ্চ আদালত তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
মঙ্গলবার (৮ জুলাই) ওই দুই শিক্ষার্থীদের আইনজীবী আকতার জাহান রুকু গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সহপাঠীরা জানিয়েছেন, ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি নুর মোহাম্মাদ অনিক এবং মোজাহিদুল ইসলামকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৌশলে তুলে নিয়ে যান আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ১৭ দিন অজানা স্থানে রেখে তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। ওই বছরের ২৫ জানুয়ারি তাদেরকে বিস্ফোরক দ্রব্যসহ গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। ওই দিনই তাদেরকে খুলনার কৃষক লীগ কার্যালয় ও আড়ংঘাটা থানার গাড়ির গ্যারেজে বোমা হামলার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এরপর একে একে তাদের বিরুদ্ধে আরো চারটি মামলা করে পুলিশ। সেই থেকে তারা কারাবন্দি ছিলেন। গ্রেপ্তারের সময় নূর মোহাম্মদ অনিক খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও মোজাহিদুল ইসলাম রাফি পরিসংখ্যান ডিসিপ্লিনে পড়তেন।
গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরে নুর মোহাম্মাদ অনিক এবং মোজাহিদুল ইসলামের মুক্তির দাবিতে খুবি ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলন করেন সহপাঠী, রুমমেট, শিক্ষক ও পরিবারের সদস্যরা। পরে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
আইনজীবী আকতার জাহান রুকু বলেছেন, নুর মোহাম্মাদ অনিক এবং মোজাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা দেওয়া হয়। এর মধ্যে দুটি মামলায় খালাস, দুটি মামলায় জামিন এবং সোনাডাঙ্গা থানার দুটি মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। সাজা হওয়া দুটি মামলায় উচ্চ আদালতে জামিনের আবেদন করা হয়।
আদালত গত সপ্তাহে জামিন মঞ্জুর করেন। আশুরার ছুটি থাকায় তিন দিন পর আদেশ কারাগারে এসে পৌঁছায়। সোমবার সন্ধ্যায় তাদের জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/নূরুজ্জামান/রফিক