তালুকদার আব্দুল খালেক ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা
Published: 9th, July 2025 GMT
খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) সাবেক মেয়র ও খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আবদুল খালেক ও তার স্ত্রী সাবেক উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহারের বিরুদ্ধে মামলা পৃথক মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (৯ জুলাই) দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, খুলনায় মামলা দুটি করা হয়।
দুদক জানায়, খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং বাগেরহাট-৩ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে পাবলিক সার্ভেন্ট থাকা অবস্থায় অসাধু উপায়ে নিজ নামে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ ১৫ কোটি ৫৭ লাখ ১৪ হাজার ৯০২ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তালুকদার আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে প্রথম মামলা করা হয়।
দ্বিতীয় মামলায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপমন্ত্রী পদে এবং বাগেরহাট-৩ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে পাবলিক সার্ভেন্ট থাকা অবস্থায় অসাধু উপায়ে নিজ নামে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ ১ কোটি ৬৬ লাখ ৭ হাজার ৫৩৭ টাকার সম্পদ অর্জন করে নিজ মালিকানা ও ভোগ দখলে রাখার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। আসামিরা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামি তালুকদার আব্দুল খালেক খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র এবং বাগেরহাট-৩ আসনের সংসদ সদস্য হিসাবে পাবলিক সার্ভেন্ট থাকা অবস্থায় তার রেকর্ডপত্র ও তথ্য পর্যালোচনা করা হয়। অনুসন্ধানে খালেকের নামে ২,৯৪,৩২,২৯৯ টাকার স্থাবর ও ১৪,৯১,৯১,৭৯৬ টাকার অস্থাবরসহ মোট ১৭,৮৬,২৪,০৯৫ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। সেই সময়ে তালুকদার আব্দুল খালেকের নামে ৫৯,৬৩,১৬১ টাকার ঋণ রয়েছে। সুতরাং দায় বাদে তার নীট সম্পদ ১৭,২৬,৬০,৯৩৪ টাকা।
এ সময়ে তালুকদার আব্দুল খালেকের নামে প্রাপ্ত গ্রহণযোগ্য আয়ের পরিমাণ ৪,৬২,৯৪,৭৬৮ টাকা এবং পারিবারিক ব্যয়, ঋণ পরিশোধ, স্ত্রীকে দান ও অন্যান্য ব্যয়ের পরিমাণ মোট ২,৯৩,৪৮,৭৩৬ টাকা। সুতরাং ব্যয় বাদে তার নীট সঞ্চয়ের পরিমাণ ১,৬৯,৪৬,০৩২ টাকা। সে অনুযায়ী তালুকদার আব্দুল খালেকের আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদের পরিমাণ ১৫,৫৭,১৪,৯০২ টাকা।
দ্বিতীয় মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামি হাবিবুন নাহার, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপমন্ত্রী পদে এবং বাগেরহাট-৩ আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে পাবলিক সার্ভেন্ট থাকা অবস্থায় অসাধু উপায়ে
অর্জিত সম্পদের পর্যালোচনা করে দুদক।
অনুসন্ধানে প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র ও তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, হাবিবুন নাহারের নামে মোট ২,৬৫,২৩,৫০০ টাকার স্থাবর ও ২,৯৬,০৩,৫৬৪ টাকার অস্থাবরসহ মোট ৫.
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প বল ক স র ভ ন ট থ ক র পর ম ণ ১ অবস থ য় দ র পর স থ বর
এছাড়াও পড়ুন:
অস্ট্রেলিয়ায় দুই বছর মুঠোফোনবিহীন শ্রেণিকক্ষ: ফলাফল কেমন
অস্ট্রেলিয়ার স্কুলে মুঠোফোন নিষিদ্ধ করার দুই বছর পর এর প্রভাব এখন অনেক বেশি স্পষ্ট। দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোয় এই নীতি কার্যকর হওয়ার পর শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা এর প্রভাব অনুভব করছেন।
অস্ট্রেলিয়ান ক্রিশ্চিয়ান কলেজের মেলবোর্ন শাখায় ফোন নিষিদ্ধ করার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ক্লাসে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ ফিরিয়ে আনা। অধ্যক্ষ ক্যালেব পিটারসন বলেন, ‘যখন ফোন হাতের নাগালে থাকে, শিক্ষার্থীর মন কখনো পুরোপুরি শ্রেণিকক্ষে থাকে না। আমরা চাইছিলাম, তারা যেন আবার শেখার পরিবেশে মনোযোগী হয়।’ এখন শিক্ষার্থীদের ফোন ব্যাগ বা লকারে রাখতে হয়; হাতে ধরা পড়লে সেটি জব্দ করে দিনের শেষে ফেরত দেওয়া হয়।
দেশটির ভিক্টোরিয়া প্রদেশে ২০২০ সালে প্রথম ফোন নিষিদ্ধ করা হয়। এরপর পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া, তাসমানিয়া, নিউ সাউথ ওয়েলস ও দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া ২০২৩ সালের মধ্যে একই পদক্ষেপ নেয়। ২০২৪ সালের শুরুতে কুইন্সল্যান্ডও নীতিটি কার্যকর করে। নীতিটি শুরু থেকেই অভিভাবক ও নীতিনির্ধারকদের মধ্যে জনপ্রিয়তা পায়, অনেকে বিশ্বাস করতেন এতে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ বাড়বে, সামাজিক পরিবেশও উন্নত হবে ও শিক্ষক যত্নসহকারে পড়াতে পারবেন।
আরও পড়ুনহার্ভার্ড এনভায়রনমেন্টাল ফেলোশিপ, দুই বছরে ১ লাখ ৮৫ হাজার ডলার১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫দুই বছর পর শিক্ষকেরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের মনোযোগ বেড়েছে ও পাঠদানের পরিবেশ ভালো হয়েছে। এ ছাড়া বিরতির সময় মাঠে খেলাধুলা ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সরাসরি সামাজিক মেলামেশা বেড়েছে। ক্যালেব পিটারসন বলেন, ‘পাঠ শুরু এখন আরও শক্তিশালী, বাধা অনেক কমেছে, বন্ধুত্বও দৃঢ় হচ্ছে।’
অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস ডিপার্টমেন্ট অব এডুকেশনের (NSW Department of Education) জরিপ অনুযায়ী, প্রায় ৯৫% প্রধান শিক্ষক এখনো নিষেধাজ্ঞাকে সমর্থন করেন। ৮৬% বলেছেন সামাজিক মেলামেশা বেড়েছে, ৮৭% বলেছেন মনোযোগ বেড়েছে। দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার গবেষণায় ৭০% শিক্ষক মনোযোগ বাড়ার কথা বলেছেন এবং ৬৪% ফোনজনিত সংঘাত কমে যাওয়ার কথাও বলেছেন।
তবে সবাই আবার এই নীতিকে স্বাগত জানায়নি। পশ্চিম সিডনির সাবেক শিক্ষার্থী রুকাইয়া বলে, ‘ফোন কেড়ে নেওয়ায় শিক্ষার্থীরা উদ্বিগ্ন হয়েছিল। তারা গোপনে ফোন ব্যবহারের উপায় বের করেছে।’ তার মতে, ফোন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার অনুভূতি দেয় আর সেটি হঠাৎ ব্যবহার করতে না দেওয়া বা কেড়ে নেওয়া অনেকের জন্য মানসিক চাপ তৈরি করেছে। তবু অনেক শিক্ষার্থী স্বীকার করেছে, ফোন না থাকায় অনলাইন প্রতারণা, হয়রানি ও গোপনে ছবি তোলার আশঙ্কা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
টনি মরদিনি মেলবোর্নের একটি সিলেকটিভ হাই স্কুলের অধ্যক্ষ। তিনি জানান, ফোন নিষিদ্ধের পর মনোযোগ বেড়েছে ও সাইবার বুলিং কমেছে। তবে তিনি এটাও বলেন, ‘ফোন গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষণ উপকরণ ছিল, এখন স্কুলগুলোকে বিকল্প প্রযুক্তি ও ঐতিহ্যবাহী পদ্ধতির ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে।’
স্কুলে এভাবে শিক্ষার্থীদের ফোন রেখে দেওয়া হয়