হত্যাকাণ্ডের পর গা ঢাকা, একসঙ্গে গ্রেপ্তার ৭ আসামি
Published: 9th, July 2025 GMT
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে এক ডেকোরেটর ব্যবসায়ীকে হত্যার পর সাত আসামি পালিয়ে গিয়ে দিনাজপুরে লুকিয়ে ছিলেন। সেখান থেকেই তাদের গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা মামলার এক থেকে সাত নম্বর পর্যন্ত এজাহারভুক্ত আসামি।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) মধ্যরাতে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ উপজেলার হায়াতপুর পূর্বপাড়া গ্রামের একটি বাড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। র্যাব-৫ এর রাজশাহীর একটি দল অভিযানটি চালায়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- গোদাগাড়ী উপজেলার দেলশাদপুর শিয়ালমারা গ্রামের আশরাফুল ইসলাম (৬০), তার ছেলে আকবর আলী (২৮) ও বাবর আলী (১৯); নারায়ণপুর গ্রামের মফিজুল ইসলাম (৫০), তার ভাই সাদ্দাম হোসেন (৩৭) এবং মফিজুলের দুই ছেলে মো.
আরো পড়ুন:
শেখ হাসিনাকে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে: প্রেস সচিব
রাউজানে প্রকৌশলী বকুল হত্যা: মা ও ২ ভাই গ্রেপ্তার
গত রবিবার (৬ জুলাই) বিকেলে গোদাগাড়ীর আইহাই সাগরা মোড়ে ডেকোরেটর ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলামের (৪৭) ওপর হামলা চালায় আসামিরা। তার মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হলে সেদিন রাতেই তিনি মারা যান।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার নিহতের পরিবার গোদাগাড়ী থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই অভিযান চালিয়ে এজাহারনামীয় সাত আসামিকে গ্রেপ্তার করল র্যাব।
র্যাব-৫, রাজশাহীর উপ-পরিচালক মেজর আসিফ আল-রাজেক বলেন, “হত্যাকাণ্ডের পর আসামিরা প্রধান আসামি আশরাফুলের চাচার বাড়িতে গিয়ে লুকিয়ে ছিলেন। তাদের কেউ ভারতে পালানোর চেষ্টা করছিলেন, কেউ দেশের ভেতরে আত্মগোপনের পরিকল্পনা করেছিলেন। আমরা সময়মতো অভিযান চালিয়ে সবাইকে গ্রেপ্তার করি।”
তিনি আরো বলেন, “আসামিদের রাজশাহীতে আনা হয়েছে এবং তাদের গোদাগাড়ী থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। পুলিশ তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠাবে।”
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য আস ম গ র প ত র কর
এছাড়াও পড়ুন:
স্বামী-স্ত্রী ছিলেন কারখানায়, আগুন লাগার পর দুজনই নিখোঁজ
ঢাকার মিরপুরের শিয়ালবাড়ির আরএন ফ্যাশনস ভবনে আগুন নেভাতে যখন ফায়ার সার্ভিস কাজ করছিল, তখন বাইরে আরও অনেকের সঙ্গে আহাজারি করছিলেন ইয়াসমিন বেগম। তার হাতে মেয়ে মার্জিয়া সুলতানা ও জামাতা মোহাম্মদ জয়ের ছবি।
পাঁচতলা ওই ভবনের তৃতীয় ও চতুর্থ তলা নিয়ে ছিল আরএন ফ্যাশন। সেখানে একসঙ্গে কাজ করতেন জয় ও মার্জিয়া। জয় অপারেটর, আর মার্জিয়া হেলপার।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে ওই কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে তাঁরা নিখোঁজ। বিকেল পাঁচটার দিকে সেখানে আহাজারি করতে দেখা যায় মার্জিয়ার মা ইয়াসমিন বেগমকে। তিনি বলছিলেন, ‘আল্লারে তুমি আমার মাইয়া আর তার জামাইডারে বাঁচাই দাও আল্লাহ। তাগো তুমি রক্ষা কইরো আল্লাহ।’
প্রথম আলোর সঙ্গে কথা হয় মার্জিয়ার বাবা মোহাম্মদ সুলতানের। তিনি বলেন, দুপুর ১২টার একটু আগে আগুন লাগার খবর শুনে প্রথমে তিনি ফোন করেন মেয়েজামাই জয়কে। কিন্তু জয় ফোন ধরেননি। পরে মেয়ে মার্জিয়াকে ফোন করেন। মেয়ে ফোন ধরলেও বিস্তারিত বলতে পারেননি।
সুলতান বলেন, ‘মেয়েরে জিগাইলাম, আম্মু তুমি কই? আগুন নাকি লাগসে? মেয়ে কানতে কানতে কইল, আগুন লাগসে অফিসে। বের হতে পারছি না। অনেক ধোঁয়া, অন্ধকার। বের হওয়া পথ পাচ্ছি না।’
মেয়ের সঙ্গে এটুকুই কথা হয় সুলতানের। এরপর দৌড়ে গার্মেন্টেসের কাছে চলে আসেন। এসে দেখেন, দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। এর পর থেকে মেয়ে আর জামাতার মুঠোফোনে কল করে গেলেও তা বন্ধই পাচ্ছেন।
সুলতান জানান, জয় আর মার্জিয়ার বিয়ে হয় ছয় মাস আগে। এই কারখানায় কাজের সুবাদেই দুজনের পরিচয় হয়, তা থেকে পরিণয়। স্বামী-স্ত্রী দুজন একসঙ্গে কারখানায় আসা-যাওয়া করতেন।
মেয়ে ও জামাতার খোঁজ না পেয়ে উদ্বেগ নিয়ে কারখানার সামনে অপেক্ষায় ছিলেন সুলতান।
ফায়ার সার্ভিস অগ্নিকাণ্ডের পর ১৬টি মরদেহ উদ্ধারের কথা জানিয়েছে। তবে দেহগুলো এতটাই পুড়েছে যে কোনো লাশই শনাক্ত করা যায়নি।
ভবনটিতে আগুন লাগার পর কারখানা ভবন থেকে শ্রমিকেরা নানাভাবে বের হয়ে আসার চেষ্টা করেন। তবে ছাদের গেট বন্ধ থাকায় অনেকে আটকা পড়েন। তাঁদের অনেকের খোঁজ এখনো মেলেনি।