নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র জনগণ মানবে না: রিজভী
Published: 9th, July 2025 GMT
নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র দেশের মানুষ কখনো মেনে নেবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার তথাকথিত নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে ভোটাররা যেতে পারেননি, সেখানে কুকুর-বিড়াল ঘোরাফেরা করেছে। সেই নির্বাচনের দিন শেষ। অসংখ্য রক্তের বিনিময়ে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের পথ নির্বিঘ্ন হয়েছে। সেই পথ কেউ যেন আটকাতে না পারে, এ জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে খুব দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।
বুধবার দুপুরে রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার মগাছড়িতে ফুটবলার ঋতুপর্ণা চাকমার বাড়িতে গিয়ে তার ক্যান্সার আক্রান্ত মা বসুপতি চাকমার খোঁজখবর নেন ও চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা দেন রিজভী। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
রিজভী বলেন, ঋতুপর্ণা অসাম্প্রদায়িক চেতনার মূলমন্ত্রকে ধারণ করে গোটা দেশকে আলোকিত করেছেন। বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে শোষণ, জুলুম ও নির্যাতনের মাধ্যমে দেশের প্রতিভাকে ঢেকে রাখার চেষ্টা করা হয়েছিল। সেই অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে প্রতিভাগুলোকে পাদপ্রদীপের আলোর সামনে নেওয়ার কোনো ব্যবস্থা আমরা এখনও দেখছি না। জাতীয় নারী ফুটবলের দলের খেলোয়াড় ঋতুপর্ণা চাকমার মা অসুস্থ। এ খবর শুনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দ্রুত তার মায়ের সঙ্গে দেখা করার নির্দেশনা দেন। নির্দেশনা পেয়ে যে সহায়তা দিয়েছি তা সামান্য। তবে এ পরিবারের পাশে তারেক রহমান থাকবেন ও আমরা সবাই থাকব। আমার বিশ্বাস, সৃষ্টিকর্তা ঋতুপর্ণার মাকে সুস্থ করে তুলবেন।
তিনি বলেন, গত ১৭ বছর ধরে উন্নয়নের যে বুলি আওড়ানো হয়েছে, তার প্রমাণ তো আজকে আমরা এখানে এসে দেখতেই পেলাম। দুই-একটা পদ্মা সেতু করেই উন্নয়নের বুলি আওড়ানো হতো। এতদিন আমাদের যে উন্নয়নের গল্প শোনানো হয়েছে, সেটি যে ভাঁওতাবাজি আর প্রতারণা ছিল তার প্রমাণ ঋতুপর্ণার গ্রামের বাড়িতে এসে নিজ চোখে দেখে বুঝতে পারলাম। পাহাড়ি এ এলাকায় উন্নয়নের কোনো ছোঁয়া লাগেনি, না আছে কোনো রাস্তা-ঘাট, না আছে কোনো যোগাযোগ ব্যবস্থা। তারা তো বাংলাদেশের বাইরের কেউ না। পদ্মা সেতু আর ফ্লাইওভার দেখিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকার জনগণের সঙ্গে যে প্রতারণা করেছে, সেটা আজ প্রমাণিত।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- ‘আমরা বিএনপি পরিবারের’ আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল, ‘আমরা বিএনপি পরিবারে’র উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, সদস্য সচিব মোকছেদুল মোমিন মিথুন ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য জাহিদুল ইসলাম রনি, জেলা বিএনপির সভাপতি দীপন তালুকদার দীপু, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ মামুন, যুগ্ম সম্পাদক আলি বাবর, রাঙামাটি নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বাসেত অপু প্রমুখ।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
‘মন্ত্রী-এমপিরা জেলে থাকতে পারলে জনগণের কর্মচারীরা কেন নয়?’
কারাবন্দিদের মধ্যে কোনো স্ট্যাটাস থাকতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন আমার বাংলাদেশ পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে কোতায়ালী থানার বাবুবাজারে পার্টির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা আয়োজিত এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
বিএনপি নেতার জামিন নামঞ্জুর, আইনজীবীর উপর হামলার চেষ্টা
শেরপুরে বালু উত্তোলন: ৯ জনকে কারাদণ্ড
ব্যারিষ্টার ফুয়াদ বলেন, “ভিন্ন মত-পথের কারণে যারা বিরোধী দলের নিরীহ মানুষকে হত্যা ও গুম করেছে, দাঁড়ি-টুপির জন্য জঙ্গি বানিয়ে ক্রসফায়ার করেছে, তাদের বিচারের মুখোমুখি অবশ্যই হতে হবে। গণতন্ত্র ও মানুষ হত্যা করে যদি প্রধান বিচারপ্রতি, সচিব, মন্ত্রী-এমপিরা জেলে থাকতে পারে, তাহলে জনগণের কর্মচারীরা কেন স্পেশাল এসির কারাগারে থাকবে?”
এ সময় তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি করার জন্য ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, “ট্রাইব্যুনাল ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়কে সব খুন গুমের বিচারে ইনসাফ প্রতিষ্টা করতে হবে যেন ন্যায়বিচারে বৈষম্য না থাকে। একজন রিকশাচালক অপরাধ করলে যেমন তার নিজের বাড়ি জেলখানা হয়ে যায় না, তেমনি কোনো সরকারি এসি ওয়ালা প্রতিষ্ঠানও জেলখানা হতে পারে না।”
তিনি বলেন, “যারা ৮০০ এর অধিক আয়না ঘর করেছে বাংলাদেশকে দিল্লীর হাতে তুলে দেবার জন্য, তাদের পালিয়ে যেতে যারা সাহায্য করবে, তাদের কোন সেফ এক্সিট থাকবে না। ২৪ গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে অপরাধীদের অবশ্যই কেরানীগঞ্জ ও কাশিমপুরের কারাগারে থাকতে হবে।”
ঢাকার স্থানীয় সমস্যা সমাধানে তিনি স্থানীয় জনগণকে অনুরোধ করেন, যেন কেউ জিন্দাবাদ বা অমুক ভাইয়ের শ্লোগান দেখে ভোট না দেয়।
কোতয়ালী থানার আহ্বায়ক মো. নুর হোসেনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুল হালিম খোকন, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক সেলিম খান, মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব বারকাজ নাসির আহমাদ, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার সদস্য সচিব মো. সেলিম রেজা, কোতয়ালী থানার সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ, কেন্দ্রীয় নারী উন্নয়ন-বিষয়ক সহ-সম্পাদক আমেনা বেগম, রমনা থানার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের মুন্সী প্রমুখ।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/মেহেদী