নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র দেশের মানুষ কখনো মেনে নেবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।  তিনি বলেন, শেখ হাসিনার তথাকথিত নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে ভোটাররা যেতে পারেননি, সেখানে কুকুর-বিড়াল ঘোরাফেরা করেছে। সেই নির্বাচনের দিন শেষ। অসংখ্য রক্তের বিনিময়ে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের পথ নির্বিঘ্ন হয়েছে। সেই পথ কেউ যেন আটকাতে না পারে, এ জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে খুব দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।

বুধবার দুপুরে রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার মগাছড়িতে ফুটবলার ঋতুপর্ণা চাকমার বাড়িতে গিয়ে তার ক্যান্সার আক্রান্ত মা বসুপতি চাকমার খোঁজখবর নেন ও চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা দেন রিজভী। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।

রিজভী বলেন, ঋতুপর্ণা অসাম্প্রদায়িক চেতনার মূলমন্ত্রকে ধারণ করে গোটা দেশকে আলোকিত করেছেন। বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে শোষণ, জুলুম ও নির্যাতনের মাধ্যমে দেশের প্রতিভাকে ঢেকে রাখার চেষ্টা করা হয়েছিল। সেই অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে প্রতিভাগুলোকে পাদপ্রদীপের আলোর সামনে নেওয়ার কোনো ব্যবস্থা আমরা এখনও দেখছি না। জাতীয় নারী ফুটবলের দলের খেলোয়াড় ঋতুপর্ণা চাকমার মা অসুস্থ। এ খবর শুনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দ্রুত তার মায়ের সঙ্গে দেখা করার নির্দেশনা দেন। নির্দেশনা পেয়ে যে সহায়তা দিয়েছি তা সামান্য। তবে এ পরিবারের পাশে তারেক রহমান থাকবেন ও আমরা সবাই থাকব। আমার বিশ্বাস, সৃষ্টিকর্তা ঋতুপর্ণার মাকে সুস্থ করে তুলবেন।

তিনি বলেন, গত ১৭ বছর ধরে উন্নয়নের যে বুলি আওড়ানো হয়েছে, তার প্রমাণ তো আজকে আমরা এখানে এসে দেখতেই পেলাম। দুই-একটা পদ্মা সেতু করেই উন্নয়নের বুলি আওড়ানো হতো। এতদিন আমাদের যে উন্নয়নের গল্প শোনানো হয়েছে, সেটি যে ভাঁওতাবাজি আর প্রতারণা ছিল তার প্রমাণ ঋতুপর্ণার গ্রামের বাড়িতে এসে নিজ চোখে দেখে বুঝতে পারলাম। পাহাড়ি এ এলাকায় উন্নয়নের কোনো ছোঁয়া লাগেনি, না আছে কোনো রাস্তা-ঘাট, না আছে কোনো যোগাযোগ ব্যবস্থা। তারা তো বাংলাদেশের বাইরের কেউ না। পদ্মা সেতু আর ফ্লাইওভার দেখিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকার জনগণের সঙ্গে যে প্রতারণা করেছে, সেটা আজ প্রমাণিত।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- ‘আমরা বিএনপি পরিবারের’ আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল, ‘আমরা বিএনপি পরিবারে’র উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, সদস্য সচিব  মোকছেদুল মোমিন মিথুন ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য জাহিদুল ইসলাম রনি, জেলা বিএনপির সভাপতি দীপন তালুকদার দীপু, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ মামুন, যুগ্ম সম্পাদক আলি বাবর, রাঙামাটি নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বাসেত অপু প্রমুখ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ র ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

বিচার, সংস্কার ছাড়া নির্বাচন মানব না

শহীদ আবরার ফাহাদের দেখানো পথে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) রাজনীতি করছে বলে জানিয়েছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, আমরা শহীদ আবরার ফাহাদের উত্তরসূরি। তাঁর দেখানো ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমরা বাংলাদেশপন্থি রাজনীতি করছি।

‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’র অষ্টম দিন গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচরাস্তার মোড়ে পথসভায় এসব কথা বলেন নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘আমরা শহীদ আবরার ফাহাদের মাটিতে দাঁড়িয়ে রয়েছি, আমরা শহীদ ইয়ামিনের মাটিতে দাঁড়িয়ে রয়েছি। আমরা স্পষ্ট বলেছি, শহীদ আবরার থেকে শহীদ আবু সাঈদ, শহীদ ইয়ামিন পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষের যে আশা-আকাঙ্ক্ষা, আধিপত্য-আগ্রাসনবিরোধী আশা-আকাঙ্ক্ষা, সেটি ধারণ করেই আমরা এগিয়ে যাব।’
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বিচার ও সংস্কার ছাড়া আমরা নির্বাচন মেনে নেব না। আগামীর বাংলাদেশে আধিপত্যবাদী শক্তি ঠেকাতে লড়াই-সংগ্রাম চলবে। আমরা দিল্লির দাসত্ব থেকে মুক্তি পেয়েছি। শহীদ আবরার আমাদের এই সাহস জুগিয়েছেন।’

কুষ্টিয়ার একটি রিসোর্টে সকালে অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন এনসিপির নেতারা। পরে তাদের গাড়িবহর কুষ্টিয়া শহর থেকে শহীদ আবরার ফাহাদের গ্রামের বাড়ি কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা গ্রামে পৌঁছে। সেখানে আবরারের কবর জিয়ারত শেষে তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন নেতারা।
কুমারখালী প্রতিনিধি জানান, আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত শেষে নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের পর ২০১৯ সালে ছাত্রলীগের হাতে আবরার ফাহাদ হত্যা বাংলাদেশের রাজনীতির মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী লড়াই নতুন করে শুরু হয়। সে পথ ধরেই জুলাই গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল।
এ সময় এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক নুসরাত তাবাসসুম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, খুলনা বিভাগের সংগঠক নয়ন আহম্মেদ, শহীদ আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর পর পদযাত্রা কুষ্টিয়া শহরে এসে বৈ‌রী আবহাওয়ার কার‌ণে এন এস রো‌ডে সং‌ক্ষিপ্ত পথসভা করে। সেখান থেকে পদযাত্রা মে‌হেরপু‌রের 
উদ্দেশে রওনা হয়।

মেহেরপুর প্রতিনিধি জানান, জেলার গাংনীতে সন্ধ্যায় এক পথসভায় এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, হাইব্রিড নেতারা অন্যের ছেলের ভবিষ্যৎ নষ্ট করে বিদেশে নিজের সন্তানের ভবিষ্যৎ গড়েন। অন্যের সন্তানকে চামচা; নিজের ছেলেকে নেতা বানান।
উপস্থিত জনতার উদ্দেশে হাসনাত বলেন, ‘আপনারা কোনো মার্কা ও ব্যক্তির কাছে বিবেক বন্ধক দিয়েন না। যারা বাংলাদেশকে ধারণ করে, তাদের নেতা নির্বাচিত করবেন। নির্বাচনের সময় আমাদের দেশে এক শ্রেণির নেতা উৎপাদন হয়। ঢাকা থেকে বস্তায় বস্তায় টাকা নিয়ে এলাকায় ঢুকে আগের রাতে ওসি, এসপি ও পোলিং এজেন্টদের কিনে নেন। তারা আপনাদের এক দিন টাকা দেন আর গোলামি করান পাঁচ বছর।’

তিনি বলেন, ‘জনগণের প্রতি আমাদের অনুরোধ– বাংলাদেশকে আর অযোগ্য নেতা ও গম চোরের হাতে তুলে দিয়েন না। রাস্তার টাকা মেরে যারা হজ করতে চান, তাদের হাতে তুলে দিয়েন না।’
হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, ‘জনগণ পাশে থাকলে দিল্লি পালাতে হয় না; লন্ডন থাকতে হয় না। জনগণ সঙ্গে থাকলে বাংলাদেশেই স্থান হয়। আমরা কোনো পিন্ডি, দিল্লি, লন্ডন কিংবা আমেরিকার ওপর নির্ভর করতে চাই না। আমাদের রাজনীতি কোনো ব্যবসায়ীর কাছে বর্গা দিইনি। জনগণের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে তাদের জন্যই আমরা রাজনীতি করব।’ পরে মেহেরপুর শহীদ সামসুজ্জোহা পার্ক ও মুজিবনগরে পথসভা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘ঢাকায় মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় স্থাপন জনগণ মেনে নেবে না’
  • খুলনায় এনসিপির সমাবেশে ২০ হাজার লোক সমাগমের প্রস্তুতি
  • বিচার, সংস্কার ছাড়া নির্বাচন মানব না
  • জনগণ পাশে থাকলে দিল্লি পালাতে হয় না, লন্ডন থাকতে হয় না: হাসনাত আবদুল্লাহ
  • হাইব্রিড নেতারা অন্যের ছেলের ভবিষ্যৎ নষ্ট করে নিজের ছেলের ভবিষ্যৎ গড়ে
  • চাঁদাবাজির অভিযোগ, খুলনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ২ নেতাকে শোকজ
  • বর্তমানে সময়ে একটি শক্তি এদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে : সজল
  • সরকার নির্বাচন এড়িয়ে যাওয়ার ষড়যন্ত্র করছে: মির্জা আব্বাস 
  • যদি হাসিনার পতন না হতো, এই ডিসি-এসপিরাই গণভবনে প্রমোশনের জন্য লাইন ধরত: হাসনাত আবদুল্লাহ