সফর মানুষের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। কাজ, পড়াশোনা, চিকিৎসা বা পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর জন্য আমরা প্রায়ই বাড়ি ছেড়ে দূরে যাই।

ইসলামে এমন সফরকারীকে ‘মুসাফির’ বলা হয়, যিনি শরিয়তের নির্দিষ্ট দূরত্ব অতিক্রম করে ভ্রমণ করেন এবং তার জন্য বিশেষ ধর্মীয় রুখসত লাভ করেন। মুসাফিরের বিধান ইসলামে এমনভাবে সাজানো হয়েছে, যাতে সফরে ইবাদত সহজ হয় এবং আল্লাহর প্রতি নির্ভরতা বৃদ্ধি পায়।

আল্লাহ মুসাফিরের জন্য নামাজ অর্ধেক করে দিয়েছেন।সুনানে নাসাঈ, হাদিস: ১,৪৫৮মুসাফির কাকে বলে

ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায়, মুসাফির হলেন সেই ব্যক্তি, যিনি নিজ বাড়ি বা স্থায়ী বাসস্থান থেকে নির্দিষ্ট দূরত্বের জন্য সফরে বের হন এবং সেখানে ১৫ দিনের কম সময় থাকার নিয়ত করেন। নবীজি (সা.

)–এর হাদিসে এসেছে, মুসাফির নামাজ কসর (কম) করবে, যদি সে তিন দিনের পথ অতিক্রম করে। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১,০৯০)

আরও পড়ুনকঠিন সময়ে মহানবী (সা.)-এর জয়ের কৌশল১১ মে ২০২৫

শরিয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে মুসাফির হওয়ার জন্য তিনটি শর্ত পূরণ করতে হয়—

দূরত্ব: সফরের দূরত্ব কমপক্ষে ৭৮ কিলোমিটার (প্রায় ৪৮ মাইল) হতে হবে। এটি হানাফি মাজহাব মতে, যা বাংলাদেশ ও উপমহাদেশে প্রচলিত।

নিয়ত: সফরের শুরুতে ভ্রমণের ও গন্তব্যের নিয়ত থাকতে হবে। যেমন ব্যবসা, চিকিৎসা বা পরিবারের সঙ্গে দেখা করার জন্য সফর।

অবস্থানের সময়: গন্তব্যে ১৫ দিনের কম থাকার নিয়ত থাকতে হবে। ১৫ দিন বা তার বেশি থাকার নিয়ত হলে মুসাফিরের বিধান প্রযোজ্য হবে না।

মুসাফিরের জন্য শরিয়তের সুবিধা

মুসাফিরের জন্য শরিয়ত কিছু বিশেষ সুবিধা দিয়েছে, যাতে সফরে ইবাদত সহজ হয়—

নামাজে কসর: মুসাফির চার রাকাতের ফরজ নামাজ (জোহর, আসর ও ইশা) দুই রাকাত পড়বেন। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ মুসাফিরের জন্য নামাজ অর্ধেক করে দিয়েছেন।’ (সুনানে নাসাঈ, হাদিস: ১,৪৫৮)

রোজায় অবকাশ: রমজানে সফরে থাকলে রোজা না রেখে পরে কাজা করা যায়। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি অসুস্থ বা সফরে থাকে, সে অন্য দিনে গণনা পূর্ণ করবে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৫)

জামাতের সুবিধা: মুসাফির স্থানীয় ইমামের পেছনে নামাজ পড়লে পূর্ণ নামাজ পড়বেন, তবে একা পড়লে কসর করবেন।

তায়াম্মুম: পানির অভাবে তায়াম্মুমের মাধ্যমে অজু করা যায়, যা সফরে সুবিধাজনক।

সফরে বের হওয়ার সময় নবীজি (সা.) দোয়া পড়তেন, যা মুসাফিরের জন্য নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিয়ে আসে।মুসাফিরের দোয়া

সফরে বের হওয়ার সময় নবীজি (সা.) দোয়া পড়তেন, যা মুসাফিরের জন্য নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিয়ে আসে।

দোয়াটি হলো: আল্লাহুম্মা আনতাস সাহিবু ফিস সফার, ওয়াল খালিফাতু ফিল আহল, আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকা ফি সফারিনা হাজাল বিররা ওয়াত তাকওয়া, ওয়া মিনাল আমালি মা তারদা।

অর্থ: হে আল্লাহ! তুমি সফরে আমার সঙ্গী এবং পরিবারের তত্ত্বাবধায়ক। হে আল্লাহ! আমরা এই সফরে তোমার কাছে নেকি, তাকওয়া ও এমন আমল চাই, যা তোমার সন্তুষ্টি অর্জন করে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১,৩৪২)

আরও পড়ুনবাঙালির পবিত্র সফর১৬ মে ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম স ফ র র জন য ন আল ল হ ম

এছাড়াও পড়ুন:

ফরিদা পারভীনের চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড, আশাবাদী চিকিৎসরা

লালনসংগীতের কিংবদন্তি শিল্পী ফরিদা পারভীন কয়েক দিন ধরে ইউনিভার্সেল মেডিকেল কালেজ ও হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন। তার উন্নত চিকিৎসার জন্য বুধবার মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। রাত সাড়ে ১০টা থেকে পৌনে ১২ টা পর্যন্ত ইউনিভার্সেল হাসপাতালে বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ফরিদা পারভীনের ছেলে ইমাম জাফর নোমানী সমকালকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বোর্ডের সভায় বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, জাতীয় কিডনি রোগ ও ইউরোলজি ইনস্টিটিউট, ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের শীর্ষস্থানীয় চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন।

বোর্ড সভা শেষে চিকিৎসরা বলেন, ‘ফরিদা পারভীনের বিষয়ে আমরা আশাবাদী। শিল্পীর শারীরিক অবস্থা ক্রমেই উন্নতির দিকে। তবে তার শরীরে কিছু ইনফেকশন আছে, আমরা তা দূর করার চেষ্টা করছি। তিনি শিগগিরই সুস্থ হয়ে উঠবেন।’

 

সম্পর্কিত নিবন্ধ