ইন্টারনেট ছাড়াই বার্তা পাঠাতে পারে টুইটারের সহপ্রতিষ্ঠাতা জ্যাক ডরসির তৈরি ‘বিচ্যাট’ অ্যাপ
Published: 9th, July 2025 GMT
ইন্টারনেট সংযোগ না থাকলেও বার্তা আদান-প্রদান করতে সক্ষম নতুন মেসেজিং অ্যাপ টেস্টফ্লাইট প্ল্যাটফর্মে পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছেন টুইটারের (বর্তমানে এক্স) সহপ্রতিষ্ঠাতা জ্যাক ডরসি। ‘বিচ্যাট’ নামের অ্যাপটি ব্লুটুথ প্রযুক্তি ব্যবহার করে সরাসরি কাছাকাছি থাকা একাধিক যন্ত্রের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে। এর ফলে মোবাইল ডেটা বা ওয়াই–ফাই নেটওয়ার্ক ছাড়াও একে অপরের সঙ্গে দ্রুত বার্তা আদান-প্রদান করা যায়।
বিচ্যাট অ্যাপের নকশা অনেকটা টরেন্ট প্রযুক্তির মতো। অ্যাপটি একধরনের বিকেন্দ্রীকৃত পিয়ার-টু-পিয়ার নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে, যেখানে প্রতিটি যন্ত্র নিজে বার্তা পাঠানোর পাশাপাশি অন্য যন্ত্র থেকে পাঠানো বার্তা রিলে করে। এর ফলে যখন কোনো ব্যবহারকারী চলাফেরা করেন, তখন তিনি আশপাশের ব্লুটুথ সক্ষম যন্ত্রগুলোর ক্লাস্টারে যুক্ত হন এবং আবার বিচ্ছিন্নও হন। এই চলমান প্রক্রিয়ায় এক যন্ত্র থেকে আরেকটিতে বার্তা পৌঁছাতে থাকে, ফলে কোনো মোবাইল নেটওয়ার্ক বা ওয়াই–ফাই না থাকলেও বার্তা আদান–প্রদান করা যায়। সাধারণ ব্লুটুথ সংযোগের পরিসর যেখানে প্রায় ১০০ মিটার, সেখানে বিচ্যাট ৩০০ মিটার পর্যন্ত বার্তা আদান–প্রদান করতে পারে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বিচ্যাটে বার্তাগুলো ক্লাউড সার্ভারের পরিবর্তে প্রেরকের যন্ত্রে সংরক্ষণ করা হয় এবং নির্দিষ্ট সময় পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে মুছে যায়।
আধুনিক মেসেজিং অ্যাপগুলোর মতো বিচ্যাটও এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন ব্যবহার করে। এর অর্থ, বার্তার বিষয়বস্তু কেবল প্রেরক ও প্রাপক দেখতে পারেন। অ্যাপটি ব্যবহারের জন্য ফোন নম্বর, ই–মেইল বা অন্য কোনো ব্যক্তিগত তথ্যও দিতে হয় না। এমনকি প্রতিটি যন্ত্র নিজে থেকেই ক্লায়েন্ট ও সার্ভার হিসেবে কাজ করে। এর ফলে ব্যবহারকারীদের পরিচয় বা বার্তার তথ্য অন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সংগ্রহ করতে পারে না।
জ্যাক ডরসি জানিয়েছেন, বিচ্যাট মেসেজিং অ্যাপে ব্লুটুথ মেশ নেটওয়ার্ক, রিলে পদ্ধতি, স্টোর অ্যান্ড ফরোয়ার্ড মডেল ও বার্তা এনক্রিপশনের মতো প্রযুক্তি একসঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে অ্যাপটি ব্যবহারের সময় পুরোনো আইআরসি চ্যাটের অভিজ্ঞতা পাওয়া যাবে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।
জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’
জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’