আজমেরী বেগমের দুটি কিডনিই বিকল, চান সহায়তা
Published: 8th, August 2025 GMT
আজমেরী বেগম একজন গৃহিণী। তাঁর দুটি কিডনিই বিকল। আজমেরী বেগমের স্বামী সিরাজুল ইসলাম মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার ত্রিলোচন পট্টির বাসিন্দা। তিনি একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। এত দিন সিরাজুল ইসলাম ও আজমেরীর বড় বোন পেয়ারী সুলতানা সম্পদ বিক্রি ও ধারদেনা করে তাঁর চিকিৎসা করিয়েছেন। প্রতি মাসে ডায়ালাইসিস, রক্তের ইনজেকশন ও আনুষঙ্গিক ওষুধ মিলিয়ে তাঁর ৫০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, আজমেরীকে বাঁচিয়ে রাখতে হলে দ্রুত তাঁর একটি কিডনি প্রতিস্থাপন করতে হবে। এ জন্য অনেক টাকা প্রয়োজন। আজমেরীর পরিবারের চিকিৎসার এই বিপুল ব্যয় বহন করার সামর্থ্য নেই। এ অবস্থায় আজমেরী সমাজের হৃদয়বান ব্যক্তিদের কাছে তাঁর চিকিৎসায় সহায়তা করার আকুতি জানিয়েছেন।
সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা—হিসাবের নাম: পেয়ারী সুলতানা চৈতী, হিসাব নম্বর: ১১৫১৫৮০২৫৩৩৯৩, ডাচ্–বাংলা ব্যাংক, মিরপুর শাখা, ঢাকা।
সাহায্য পাঠানো যাবে মুঠোফোন নম্বরেও (বিকাশ) 01966012855
বিজ্ঞপ্তি
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আজম র
এছাড়াও পড়ুন:
দিনমজুর বাদশা মিয়াকে আমাদের সাধুবাদ
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামের দিনমজুর বাদশা মিয়া তাঁর এলাকায় ‘গাছের বন্ধু বাদশা’ নামে পরিচিত। এই পরিচয় কোনো সরকারি পদক বা ধনাঢ্য প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি থেকে আসেনি; এসেছে বিগত ২০ বছর ধরে ৩০ হাজারের বেশি গাছ লাগিয়ে। তাঁর এ কাজ প্রমাণ করে, পরিবেশপ্রেম ও নিঃস্বার্থ সামাজিক দায়বদ্ধতা কোনো অর্থ বা ক্ষমতার মুখাপেক্ষী নয়, এটি গভীর মানবিক চেতনার বহিঃপ্রকাশ।
৭২ বছর বয়সী বাদশা মিয়ার স্লোগান—এক মুঠো ভাত নয়, এক মুঠো অক্সিজেন চাই। আজকের পরিবেশ সংকটের যুগে এক শক্তিশালী দার্শনিক বার্তা। বাদশা মিয়ার গাছ লাগানোর গল্পটি কেবল সবুজায়নের নয়, এটি এক পিতার গভীর আবেগের গল্প। ২০০৪ সালের এক বিকেলে, টাকার অভাবে সন্তানদের আমের আবদার মেটাতে না পারার কষ্ট থেকে তিনি উপলব্ধি করেন, তাঁর মতো গরিব প্রতিবেশীর সন্তানেরাও ফল কিনতে পারে না। সেই ব্যক্তিগত বেদনা থেকেই তিনি সিদ্ধান্ত নেন—তিনি এমন কিছু করবেন, যা তাঁর নিজের ও দরিদ্র প্রতিবেশীদের সন্তানদের জন্য ফলের অধিকার নিশ্চিত করবে।
এই স্বপ্ন পূরণে বাদশা মিয়ার ত্যাগ ছিল হিমালয়সম। প্রাথমিক পুঁজি জোগাতে তিনি মেয়ের কানের সোনার রিং বিক্রি করে গাছের গোড়ায় খুঁটি দেন। এরপর সিদ্ধান্ত নেন, দিনমজুরি করে যা আয় করবেন, তার চার ভাগের এক ভাগ ব্যয় করবেন চারা লাগানো এবং পরিচর্যার পেছনে। একজন ভূমিহীন দিনমজুরের কাছে আয়ের এক-চতুর্থাংশ মানে জীবনধারণের সঙ্গে সরাসরি আপস করা। এই আত্মত্যাগই প্রমাণ করে, তাঁর কাছে এই গাছগুলো নিছক চারা নয়—গভীর মমতায় লালন করা এগুলো যেন তাঁর সন্তানের মতোই।
বাদশা মিয়ার কাজকে সমাজ প্রথম দিকে মোটেই সহজভাবে নেয়নি। উল্টো গ্রামের কিছু মানুষ তাঁকে ‘পাগল’ বলে উপহাস করেছে। গাছের চারা লাগাতে গিয়ে তিনি মানুষের বাধা পেয়েছেন, তাঁর লাগানো গাছ উপড়ে ফেলা হয়েছে এবং একপর্যায়ে তাঁকে মারধরও করা হয়েছে। কিন্তু সেই সমাজের মানুষই এখন বাদশা মিয়ার দীর্ঘ ত্যাগ ও পরিশ্রমের সুফল ভোগ করছে।
বাদশা মিয়ার এই উদ্যোগ কেবল একটি স্থানীয় গল্প নয়, এটি সব সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি শিক্ষা। কোটি কোটি টাকার বন সৃজন প্রকল্প যেখানে অনেক সময় লোকদেখানো বা অপচয়ের শিকার হয়, সেখানে একজন দিনমজুর দেখিয়ে দিলেন, ভালোবাসা ও সদিচ্ছা থাকলে সামান্য সম্পদ দিয়েই পরিবেশবিপ্লব ঘটানো সম্ভব।
উপজেলা প্রশাসন বাদশা মিয়াকে পুরস্কৃত করেছে, যা প্রশংসনীয়। আমরা আশা করব, স্থানীয় বন বিভাগ ও কৃষি বিভাগ বাদশাকে গাছ লাগানোর কাজে স্থায়ীভাবে সহযোগিতা করবে। বাদশা মিয়ারা আমাদের অনুপ্রেরণা। তাঁর প্রতি আমাদের অভিবাদন।