গিটারের সুরে বেঁচে থাকা এক কিংবদন্তি আইয়ুব বাচ্চু
Published: 18th, October 2025 GMT
‘১৮ অক্টোবর’ তারিখটি কিংবদন্তি শিল্পী আইয়ুব বাচ্চুর ভক্ত-শ্রোতাদের জন্য বিষাদের। আইয়ুব বাচ্চু—যার গায়কি আর গিটারবাদনের জাদু ছুঁয়ে গেছে প্রজন্মের পর প্রজন্মকে। আজও তার সেই সুর যেন ভেসে বেড়ায় প্রতিটি কনসার্টে, প্রতিটি গিটারের তারে।
মৃত্যুর সাত বছর পরও বেঁচে আছেন তিনি তার স্বপ্নে, আর সেই স্বপ্ন পূরণের পথে হেঁটে চলেছে ‘আইয়ুব বাচ্চু ফাউন্ডেশন’। ২০২০ সালে শুরু হওয়া এই যাত্রা আনুষ্ঠানিক রূপ পায় চলতি বছরের ৯ জুলাই। আইয়ুব বাচ্চুর স্ত্রী ও ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ফেরদৌস আক্তার বলেন, “বাচ্চুর স্বপ্ন পূরণ করতে পারলেই নিজেকে সার্থক মনে করব। কিন্তু সেই স্বপ্নের পথে হাঁটতে গেলে প্রয়োজন পৃষ্ঠপোষকতার, যা এখনও পাইনি পুরোপুরি।”
আরো পড়ুন:
যেসব দেশে জনসমাগমপূর্ণ স্থানে মুখ ঢেকে রাখা নিষিদ্ধ
এক কাঁধে ‘ব্যাকপ্যাক’ বহন করলে শরীরের যে ক্ষতি হয়
আজ এই গিটার জাদুকরের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকার মগবাজারে আয়োজিত হচ্ছে দোয়া মাহফিল ও স্মরণানুষ্ঠান। ব্যান্ড জগতের সহযাত্রী থেকে শুরু করে পরিবার—সবাই সেখানে স্মরণ করবেন প্রিয় ‘বস’-কে।
ফাউন্ডেশনের অন্যতম লক্ষ্য—আইয়ুব বাচ্চুর নিজের হাতে বাজানো প্রিয় গিটারগুলো নিয়ে তৈরি করা ‘আইয়ুব বাচ্চু মিউজিক্যাল ক্যাফে’। এখানে সংগীতপ্রেমীরা যেমন আড্ডা দিতে পারবেন, তেমনি নতুন শিল্পীরাও আয়োজন করতে পারবেন তাদের অনুষ্ঠান।
অস্ট্রিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্র—দুনিয়ার নানা প্রান্ত থেকে সংগ্রহ করা প্রায় ৫০টি গিটার আজও নীরবে কথা বলে তার স্মৃতির সঙ্গে। সেই বিখ্যাত ফেন্ডার স্ট্রাটোকাস্টার আর আইভানেজ জেম ৭৭ আজও তার উপস্থিতির প্রমাণ হয়ে আছে মগবাজারের বাসায়। বছর দুয়েক আগে এসব গিটার নিয়ে ঢাকায় ও চট্টগ্রামে ছোট প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিল বাচ্চুর পরিবার।
ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি ও ব্যান্ড এলআরবির দীর্ঘদিনের সহযাত্রী আবদুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, “শুধু গিটার নয়, থাকবে বসের ব্যবহৃত টি–শার্ট, হ্যাট, ক্যাপ, রোদচশমা—সবকিছু। এমনকি দর্শনার্থীরা ভার্চ্যুয়াল রিয়েলিটিতে তার কনসার্টের অনুভূতি নিতে পারবেন। এবি কিচেনের আদলে থাকবে একটি রেকর্ডিং স্টুডিও, মিলনায়তন, মিউজিক্যাল ক্যাফে—সবই পরিকল্পনায় আছে। কিন্তু বাস্তবায়নের জন্য অর্থনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা খুব জরুরি।”
ফেরদৌস আক্তার জানালেন, “গিটারগুলো আমরা যত্নে রেখেছি, ঠিক সেই তাপমাত্রায় যেভাবে সেগুলো টিকে থাকবে। বাচ্চুর গিটার তার আরেকটি অস্তিত্ব—যতদিন মিউজিয়াম গড়ে না ওঠে, আমরা ওগুলোকে বাঁচিয়ে রাখব ঠিক তেমনি।”
ঢাকা/রাহাত/লিপি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আইয় ব ব চ চ
এছাড়াও পড়ুন:
ব্লগার অভিজিৎ হত্যায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির পক্ষে গুমের অভিযোগ দিলেন তাঁর ভাই
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে গুমের অভিযোগ করেছেন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মনের ভাই আব্দুল্লাহ আল হুসাইন। আজ মঙ্গলবার জমা দেওয়া অভিযোগে আব্দুল্লাহ আল হুসাইন দাবি করেছেন, ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মোজাম্মেল হুসাইন ২০১৭ সালে গুমের শিকার হয়েছিলেন।
চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে আজকে পৃথক ১০টি গুমের অভিযোগ করা হয়েছে। সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দিনসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে তাঁরা এই অভিযোগ করেছেন। আলেপ র্যাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
আজকে যে ১০ জন পৃথকভাবে গুমের অভিযোগ করেছেন, তাঁরা হলেন আব্দুল্লাহ আল হুসাইন (মোজাম্মেল হুসাইনের ভাই), ওবায়দুল হক, মো. রায়হান, ওবায়দুর রহমান, আল আমিন, আবু জাফর, শামীম মিয়া, লোকমান মিয়া, হাবিবুর রহমান ও বাহাউদ্দিন।
গুমের লিখিত অভিযোগ দায়ের শেষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে ব্রিফিং করেন গুমের শিকার ব্যক্তিদের সংগঠন ভয়েস অব এনফোর্সড ডিজঅ্যাপেয়ার্ড পারসনসের (ভয়েড) সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাইয়ুম। ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, মোজাম্মেল হুসাইনকে গুম করে অভিজিৎ হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছিল। তাঁকে দীর্ঘদিন গুম রেখে, ভয়ভীতি দেখিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বাধ্য করা হয়। অভিজিৎ হত্যা মামলায় মোজাম্মেল হুসাইনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তিনি এখনো জেলহাজতে আছেন। মোজাম্মেলের পক্ষে তাঁর ভাই আব্দুল্লাহ আল হোসাইন অভিযোগ দিয়েছেন।
ব্রিফিংয়ে আব্দুল্লাহ আল হুসাইন বলেন, তাঁর ভাই মোজাম্মেল হোসেনকে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গুম করা হয়। তাঁকে প্রায় ৫০ দিন গুম করে রাখা হয়। পরে একটি মামলায় সম্পৃক্ততা দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। গুম করে রাখার সময় মোজাম্মেলকে শারীরিক নির্যাতন করা, ভয়ভীতি দেখিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। তৎকালীন সরকারের বিরুদ্ধে লেখালেখি করার কারণে মোজাম্মেলের সঙ্গে এসব ঘটেছে বলেও দাবি করেন তিনি।
ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মনসহ পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। আব্দুল্লাহ আল হুসাইন বলেন, মোজাম্মেলকে দেওয়া সাজার রায়ের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে তাঁরা আপিল করেছেন।
তিন মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য গ্রহণজুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর রামপুরা এলাকায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা একটি মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা সৈয়দ আব্দুর রউফ জবানবন্দি দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১–এ আজ তিনি এ মামলার ১৪তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন।
ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ এ মামলায় পাঁচ আসামি। তাঁদের মধ্যে সাবেক এএসআই চঞ্চল চন্দ্র সরকার গ্রেপ্তার আছেন।
অন্যদিকে গণ-অভ্যুত্থানের সময় আশুলিয়ায় ছয়জনের লাশ পোড়ানোর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জানে আলম খান আজ জবানবন্দি দিয়েছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–২–এ তিনি এ মামলার ২৪তম সাক্ষী হিসেবে এই জবানবন্দি দেন। এ মামলায় আসামি ১৬ জন। এর মধ্যে আটজন গ্রেপ্তার এবং আটজন পলাতক।
এ ছাড়া জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে করা মামলায় বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা ও প্রসিকিউটর তানভীর হাসান জোহার সাক্ষ্য গ্রহণ আজ সম্পন্ন হয়েছে।