সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে এগিয়ে আসার আহ্বান মির্জা ফখরুলের
Published: 18th, October 2025 GMT
ছোটখাটো ভিন্নতা ও দূরত্ব দূর করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মির্জা ফখরুল বলেন, ভিন্নতা ও দূরত্ব দূর করে যেভাবে সনদ স্বাক্ষর করা গেছে, আগামী নির্বাচনকে সেভাবেই একটা অর্থপূর্ণ নির্বাচন করতে হবে। এটা যেন সবার কাছে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়।
আজ শনিবার পানি ভবনের মাল্টিপারপাস হলে শ্রমিক-কর্মচারীদের সাধারণ সভা ও সম্মেলন ২০২৫-এ এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এই সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন।
নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যাঁরা নির্বাচিত হবেন, তাঁরা সংসদকে সত্যিকার অর্থে প্রাণবন্ত করে গড়ে তুলবেন বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল।
আগামী নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘নির্বাচনের মাধ্যমে নির্ধারণ হবে, আপনি সত্যিকার অর্থে একটি উদারপন্থী গণতন্ত্রের দিকে যাবেন, নাকি আবার অন্যদিকে চলে যাবেন। আমাদের এই কথা ভুললে চলবে না যে, ১৯৭১ সালে আমরা স্বাধীনতাযুদ্ধ করেছিলাম। সেই স্বাধীনতাযুদ্ধ ছিল আমাদের একটা নতুন জাতি সৃষ্টির আন্দোলন। সেই ১৯৭১ সালের যুদ্ধকে আমাদের মনে রাখতে হবে।’
জুলাই সনদে স্বাক্ষর রাষ্ট্রকাঠামো পরিবর্তনের জন্য বাংলাদেশের ইতিহাসে অনন্য ঘটনা হিসেবে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এই সনদে দুর্নীতির সংশোধন একই সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনীতিকে আরও স্বচ্ছ করার, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আরও উন্নত করার, গণতান্ত্রিক কালচার গড়ে ওঠা এসব বিষয় অন্তর্ভুক্ত ছিল। রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘ সাত-আট মাস কাজ করে এটা নিয়ে এসেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারকে সবার সহযোগিতা করা উচিত। এক বছরের মধ্যে সব জঞ্জাল শেষ করে ফেলা সম্ভব নয়। আওয়ামী লীগ গত ১৫ বছরে যে জঞ্জাল সৃষ্টি করে গেছে, সবকিছুকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে, সেগুলোকে এক বছরের মধ্যে ঠিক করে ফেলা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়।
সংসদীয় রাজনীতি গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে দায়িত্ব নিয়ে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে পার্লামেন্টারি ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে হবে। সব কর্মকাণ্ডকে পার্লামেন্টকেন্দ্রিক করতে হবে। তা না হলে সংসদীয় গণতন্ত্র কাজ করবে না।
বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, পৃথিবীর যেসব দেশের পার্লামেন্টারি ডেমোক্রেসি সফল হয়েছে, সেসব দেশ পার্লামেন্টকে কেন্দ্রবিন্দু করেই রাজনীতি করেছে। রাস্তা থেকে পার্লামেন্টে উঠে আসতে হবে।
ফখরুল বলেন, তাঁরা আর কত দিন রাস্তায় থাকবেন। গত ৫০ বছর তো তাঁরা রাস্তায় চলছেন.
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নিহত শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আরও পড়ুনজুলাই সনদ স্বাক্ষর বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা: মির্জা ফখরুল১৭ ঘণ্টা আগেঅনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড জাতীয়তাবাদী শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির।
সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামছুর রহমান শিমুল বিশ্বাস। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম খান নাসিম প্রমুখ।
আরও পড়ুনজুলাই সনদ: আশা করি স্বাক্ষর করবে, নির্বাচনে বড় প্রভাব পড়বে না: সালাহউদ্দিন আহমদ৩ ঘণ্টা আগেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফখর ল ইসল ম আলমগ র গণতন ত র র জন ত ক ই সনদ
এছাড়াও পড়ুন:
আনিসুল-মঞ্জুর নেতৃত্বে নির্বাচনী জোটে একমত ১৬ দল, মুখপাত্র রুহুল আমিন
জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে জাতীয় পার্টির (জাপা) একাংশের চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক জোট গঠিত হচ্ছে। জোটের মুখপাত্র করা হচ্ছে জাপা মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদারকে। এই জোটের সম্ভাব্য নাম নির্ধারণ করা হয়েছে ‘জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক জোট’।
আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর গুলশানের হাওলাদার টাওয়ারে জাপার উদ্যোগ আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। জাপার (একাংশ) চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেপির চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু। যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জোটে অন্তর্ভুক্ত সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের সমন্বয়ে একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করা হচ্ছে। কয়েক দিনের মধ্যেই জোটের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ করা হবে।
সভায় জাপার মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, যেসব রাজনৈতিক দল বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, উদার গণতন্ত্র, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী সেসব দলের সঙ্গে একটি বৃহত্তর জোট গঠন করার লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় উপস্থিত ১৬টি রাজনৈতিক দলের নেতারা বৃহত্তর জোট গঠন করার লক্ষ্যে একমত হয়েছেন। চলতি সপ্তাহে এ জোটের আত্মপ্রকাশ হতে পারে।
রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, যদি দেশে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ থাকে, তাহলে দলগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। তবে এখন পর্যন্ত দেশে নির্বাচন আয়োজনের মতো ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ (সবার জন্য সমান সুযোগ) তৈরি হয়নি।
মতবিনিময় সভায় আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশে এখন একটা ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। সবার মধ্যে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হওয়া নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব কাজ করছে। তারপরও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে।
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, দেশের জনগণের কাছে একটি তৃতীয় ধারার সুস্থ রাজনীতি উপহার দেওয়ার ইচ্ছা রয়েছে দলগুলোর। দেশ আজ বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে দুই ভাগে বিভক্ত। আওয়ামী লীগ নির্বাচন করতে পারবে কি না, সন্দেহ আছে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারলে ভালো ফল করার সম্ভাবনা আছে।
আরও পড়ুনআনিসুলের জাতীয় পার্টি ও জেপি ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচন করবে, নতুন জোট গঠনেরও উদ্যোগ২৭ নভেম্বর ২০২৫আনিসুল ইসলাম মাহমুদ জানান, জোটের মূলমন্ত্র হবে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, উদার গণতন্ত্র ও সকল ধর্মের মানুষের সহাবস্থান।
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন জাপার জ্যেষ্ঠ কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, নির্বাহী চেয়ারম্যান মুজিবুল হক, জনতা পার্টি বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার মিলন, মহাসচিব শওকত মাহমুদ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (মতিন) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এ এন এম সিরাজুল ইসলাম, মহাসচিব জাফর আহমেদ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি মহসিন রশিদ, গণফ্রন্টের চেয়ারম্যান আকমল হোসেন, মহাসচিব জাহাঙ্গীর আলম, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান শেখ সালাউদ্দিন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির একাংশের নির্বাহী সভাপতি আশরাফুল হক, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান সেকান্দার আলী মনি, বাংলাদেশ ইসলামিক জোটের চেয়ারম্যান আবু নাসের ওহেদ ফারুক, জাতীয় সংস্কার জোটের সভাপতি মেজর (অব.) আমীন আহমেদ আফসারী, ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান শেখ মুস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ মানবাধিকার পার্টির চেয়ারম্যান মো. আখতার হোসেন, সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন এবং জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সভাপতি মহিউদ্দিন বাবলু।