নিঝুম দ্বীপ থেকে বালু তোলার অভিযোগ, সাবেক ইউপি সদস্যসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা
Published: 18th, October 2025 GMT
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার নিঝুম দ্বীপের সমুদ্রসৈকত থেকে বালু উত্তোলনের অভিযোগে সাবেক দুই ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্যসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে হাতিয়া থানায় মামলাটি করেন জাহাজমারা ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির।
মামলার আসামিরা হলেন—নিঝুম দ্বীপ ইউপির সাবেক সদস্য ও ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আনোয়ার হোসেন (৫৫), সাবেক সহসভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য সাহেদ উদ্দিন (৪৫), কাশেম ওরফে রাশেল (৩০), এনায়েত হোসেন (৩০), আবদুর রহিম (২৬) ও আফছার উদ্দিন (৫০)।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েক দিনে নিঝুম দ্বীপ জাতীয় উদ্যানের নামার বাজার এলাকার সৈকত থেকে স্থানীয় একটি চক্র বালু উত্তোলন করে আসছিল। তারা ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু তুলে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করত। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বালু উত্তোলন বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হলেও তারা তা অমান্য করে কার্যক্রম চালিয়ে যায়। পরে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা করে ড্রেজারসহ অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ করা হয় এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত হয়।
মামলার প্রধান আসামি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সৈকত থেকে কে বা কারা বালু উত্তোলন করেছে, সে বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তা ছাড়া মামলার অভিযোগে যে ঘটনার সময় উল্লেখ করা হয়েছে, তিনি তার অনেক আগে থেকে ব্যক্তিগত ও দলীয় কাজে মাইজদীতে ছিলেন। তাঁর অভিযোগ, উদ্দেশ্যমূলকভাবে তাঁর নাম মামলায় যুক্ত করা হয়েছে।
আরেক আসামি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহসভাপতি সাহেদ উদ্দিন বলেন, বালু উত্তোলনের সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন না। এরপরও তাঁকে পরিকল্পিতভাবে আসামি করা হয়েছে। তদন্ত করে বালু উত্তোলনে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স কত থ ক উদ দ ন উপজ ল সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদে স্বাক্ষর করার সুযোগ পরেও থাকবে, সংবাদ সম্মেলনে আলী রীয়াজ
কোনো রাজনৈতিক দল আগামীকাল শুক্রবার জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর না করলে পরবর্তী সময়ে সই করার সুযোগ থাকবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আলী রীয়াজ এ কথা বলেন।
কাল শুক্রবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে উপস্থিত থাকবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিক জানতে চান, আগামীকাল যদি কোনো দল জুলাই সনদে সই না করে, তাহলে পরবর্তী সময়ে তারা চাইলে কি স্বাক্ষর করতে পারবে?
জবাবে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘আগামীকাল সব দলের স্বাক্ষর নিতে পারলে ভালো। তবে যদি কোনো দল পরবর্তীতে স্বাক্ষরের কথা বলে...তারা তো সনদ প্রক্রিয়ার অংশীদার। শরিক হিসেবে তারা সেটা করতে পারবে। তবে কমিশন আশা করে, সকলে একসঙ্গে বসে উৎসবমুখর পরিবেশে স্বাক্ষর করবে।’
‘আইনি ভিত্তি ছাড়া এবং আদেশের ব্যাপারে নিশ্চয়তা ছাড়া’ জুলাই সনদে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সই করবে না—দলটির নেতাদের এমন বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, এনসিপির বক্তব্য কমিশন গভীরভাবে পর্যালোচনা ও পর্যবেক্ষণ করেছে। দলটির নেতারা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অগ্রগামী সৈনিক ছিলেন। তাঁরা নেতৃত্ব দিয়েছেন। এর বাইরে সনদ প্রক্রিয়ায় তাঁরা অংশ নিয়েছেন। ফলে তাঁদের অবদান সনদ তৈরির ক্ষেত্রে একাধিকভাবে আছে।
আলী রীয়াজ বলেন, কমিশনও মনে করে, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দেওয়া প্রয়োজন এবং দ্রুততার সঙ্গে সেটা করার জন্যই কমিশনের মেয়াদকালে তাঁরা একটি পূর্ণাঙ্গ সুপারিশ দেবেন। তিনি বলেন, কমিশন আশা করছে এনসিপিসহ সব রাজনৈতিক দল সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দেবে, সনদে স্বাক্ষর করবে এবং বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে।
সংবাদ সম্মেলনে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি বলেন, কমিশনের মেয়াদ ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে, যাতে কমিশনের মেয়াদকালেই একটি পূর্ণাঙ্গ সুপারিশ তাঁরা দিতে পারেন এবং সেগুলো বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া যায়। তিনি বলেন, সনদ বাস্তবায়নের জন্য বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলা অব্যাহত আছে। বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলা হবে। সনদ বাস্তবায়নে যেন কোনো রকম ব্যত্যয় না ঘটে, তার দায়িত্ব কমিশনের।
সংবাদ সম্মেলনে সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, সবচেয়ে বড় আয়োজন জুলাই সনদ নিজে। কারণ, এই সনদ বাস্তবায়ন করা গেলে রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে বড় পরিবর্তন আসবে। তিনি বলেন, আগামীকাল স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সনদ তৈরির প্রেক্ষাপট এবং এর ভবিষ্যৎ কার্যকারিতা বিষয়ে ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হবে। পাশাপাশি আগামী দুই মাসে এটা নিয়ে আরও কাজ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি এমদাদুল হক এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কার কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান প্রমুখ।