নিম্নমানের খাবার, অতিরিক্ত দাম ও ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) ক্যাফেটেরিয়া, হল, ক্যান্টিন ও আশপাশের দোকানগুলোর বিরুদ্ধে। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে চরম অসন্তোষ ও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

বাসি ‌ও অরুচিকর খাবারকে মুখরোচক করতে ‘টেস্টিং সল্ট’ ব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।

আরো পড়ুন:

জিএস পদে হারলেও সিনেটে নির্বাচিত ফাহিম

রাকসুতে ছাত্রদলের প্যানেলে খেলোয়াড় নার্গিস নির্বাচিত 

চিকিৎসাবিজ্ঞান অনুযায়ী, ‘স্নায়ু বিষ’ হিসেবে পরিচিত ‘টেস্টিং সল্ট’ নামে এই রাসায়নিক ব্যবহারে মস্তিষ্কের ক্যান্সারসহ নানা ভয়াবহ রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। অথচ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ক্যান্টিন ও খাবারের দোকানে নিয়মিতই এটি ব্যবহৃত হচ্ছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।

প্রায় ৯ হাজার শিক্ষার্থীর এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের জন্য তিনটি এবং ছাত্রীদের জন্য দুইটি আবাসিক হল থাকলেও, ছাত্রীদের হলগুলোতে নেই কোনো ক্যান্টিন। ডাইনিং-ব্যবস্থাও অনিয়মিত। ফলে অধিকাংশ ছাত্রীকে বাধ্য হয়ে নিজেদের হলে রান্না করে খেতে হয় কিংবা পাশের হল রোডের দোকানগুলো থেকে অতিরিক্ত দামে খাবার কিনতে হয়। ওইসব দোকানে একটি ডিম ২৫ টাকা, একটি পিস মুরগি বা মাছ ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ক্যান্টিনে মানহীন খাবারকে মুখরোচক করতে ব্যবহৃত হচ্ছে টেস্টিং সল্ট। তারা একাধিকবার ক্যান্টিন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানালেও কোনো পরিবর্তন আসেনি। গত ২ অক্টোবর বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন হলের রান্নাঘর থেকে শিক্ষার্থীরা প্রায় ২৫০ গ্রাম টেস্টিং সল্ট উদ্ধার করে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আবাসিক শিক্ষার্থী মেহেদি হাসান বলেন, “আমি কৌতূহলবশত রান্নাঘরে ঢুকে একটি ময়লা কৌটায় টেস্টিং সল্ট দেখতে পাই। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গেই হল প্রাধ্যক্ষকে জানাই।”

তবে হলের ক্যান্টিন ম্যানেজার সাগর দাবি করেন, বিশেষ কিছু রান্নার জন্য মাঝেমধ্যে সামান্য পরিমাণে টেস্টিং সল্ট ব্যবহার করা হয়।

শিক্ষার্থীরা জানান, খিচুড়ি, পোলাও, মাংস, রোস্ট, মাছ, ডাল ও সবজিসহ প্রায় সব খাবারেই টেস্টিং সল্ট ব্যবহার করা হয়। খাবারের স্বাদে ভিন্নতা থাকলেও শরীরে এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অপরাজিতা হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে পড়াশোনার সুষ্ঠু পরিবেশের বদলে প্রতিনিয়ত পচা-বাসি খাবার আর অসুস্থতার সঙ্গে যুদ্ধ করতে হচ্ছে। খাবারে টেস্টিং সল্ট মেশানো হয় বলেই প্রায়ই আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ি।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের প্রধান মেডিকেল অফিসার ডা.

কানিজ ফাহমিদা বলেন, “নিয়মিত টেস্টিং সল্ট গ্রহণে শিক্ষার্থীরা ধীরে ধীরে নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হতে পারে। শরীরে তাৎক্ষণিক প্রভাব না পড়লেও দীর্ঘমেয়াদে এটি মারাত্মক ক্ষতি করে।”

এ নিয়ে প্রাধ্যক্ষ কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক ড. খসরুল আলম বলেন, “মাছ-মাংসের দাম বাড়ায় কিছুটা খাবারের মূল্য বেড়েছে। তবে ক্যান্টিনে টেস্টিং সল্ট ব্যবহার না করার বিষয়ে আমাদের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। শিক্ষার্থীদের সচেতন থেকে এসব বিষয়ে আমাদের অবহিত করা প্রয়োজন। তারা খাবারের মান বা মেন্যু নিয়ে নিয়মিত জানালে প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবে।”

ঢাকা/হাসিব/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

কতদূর হয়েছে হৃদয়াঙ্গম, নাগলিঙ্গমের সুবাস

কামারশালা

বাসার নিচে কামারশালা
আরেকটু দূরে গ্যারেজ
সকাল থেকে রাত অবধি
বাজে হেভিমেটালের বেস।

ধুমধাড়াক্কা হাতুড়ি আর
বাইকের রাগী গরগর
লোহা কাটার মেশিন ঘুরে
লাল ফুলকির কড়মড়।

পেটানো শরীর যেন লোহা
হাতুড়ি পেলে থাকে না হুঁশ
সকাল থেকে বাজাতে থাকে
পিংক ফ্লয়েডের ইকোস।

অভিশপ্ত

ভেতর থেকেই তুমি ভেঙে পড়ো
বিক্ষুব্ধ সাগরে জাহাজের পাটাতন
ভাঙার মতো শব্দ হোক। তারপর
আছড়ে পড়ো তীরে। তোমার সব
লুটে নিক দস্যুদল। টিপ্পনী কাটুক
বলুক লোকে, ‘পাগল’। দরজা যাক
জানলাতেও না ডাকুক পাখি। সব
রাস্তা বন্ধ হোক। করুণায় কেউ যেন
ফিরেও না তাকায় তোমার দিকে
বেঁচে থাকো হয়ে কুষ্ঠরোগী। বন্ধু
না থাকুক। নিঃসঙ্গ মরে যাও। পুঁজ
আর দুর্গন্ধে ভরে উঠুক দেহ। মৃত্যুর
দূতও না আসুক সহজে। ভাবুক সবে
ফেরাউন, ইবলিশের ভাই, পসেইডন।

ভরদুপুরে

এই ভরদুপুরে—
ওপর তলায়
কে যেন সারা দিন
হারমোনিয়াম বাজায়
গলা সাধে
বলে, ‘রাধে রাধে’

নিচতলায় আমি থাকি
ভাঙা চৌকিতে
ভাতদুপুরে
তার গান শুনে
জাগি চকিতে
শুনি, নিচে তার
স্বরে কে যেন ডাকছে
‘ছাই লাগবেনি?’

ধুর ছাই—
এ কোন নিতাই
নাচে পা তোলে কাঁধে!
এমন রাতদুপুরে
গলা সাধে নাকি
রাগ ঝাড়ে মা
বলে, ‘গাধে গাধে’

মিত্র পরিবার

রণজিৎ মিত্রের মেয়েরা তিন বোন
মা আছেন পরিবারে, শুনেছি মাসিও
থাকেন সঙ্গে। মামাদের আদুরে এবং
মেজদার ভয়ে বিলাই হয়ে থাকে খুব।

তবে তাদের একটি সিংহী। বড়টি
বাঘিনী, মেজটি মেছোভালুক। এসব
অবশ্য বাইরে। ঘরের ভেতর ছোটটি
নাদুসনুদুস খরগোশ, মেজটি পড়ুয়া
বড়টি অ্যাকুরিয়ামের কচ্ছপ, মাছও।

মধ্যবিত্ত সংসার, মদের সামান্য নেশা
মিত্রের। বাকিটা গিন্নির আঁচলে বাধা
মা আছেন। বুড়ো মানুষ। পুণ্যে মন
বাবা গত, বিগত বছরে, ছবিতে হাসেন।

মাঝে মাঝে মিত্র (লোকে ডাকে মিত্তির)
কবিতাও লেখেন। সংসারের লেনদেন
সব সেরে বসে টেবিলেতে মন দেন
গিন্নি যেন কিন্নরী, সবকিছুতেই তাড়া
ছুটির দুপুরে একটু লিখতে বসলে মিত্র
হাত-পা ঝেড়ে তিনি মাথায় নেন পাড়া।

ওয়ান স্টেপ ফরোয়ার্ড, ট্যু স্টেপস ব্যাকওয়ার্ড

কিছুদূর যাব
তারপর ফিরে আসব নিজের কাছে
প্রতিদিনের একই পথ ধরে হেঁটে
এক পা এগিয়ে, পিছিয়ে যাব দুই পা।

ভাবব, কোথায় বসবে চন্দ্রবিন্দু
বিসর্গের উচ্চারণ, কত দূর হয়েছে
হৃদয়াঙ্গম নাগলিঙ্গমের সুবাস।

এক পা এগোনো মানে দুই পা পেছানো
এক পায়ের সঙ্গে আরেকটি পা মেলানো।

সম্পর্কিত নিবন্ধ