বাংলাদেশের হয়ে আর না খেলার সিদ্ধান্ত গতকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানিয়েছেন তামিম ইকবাল। দীর্ঘ ১৮ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার শেষে তামিমকে বিভিন্নভাবে শুভেচ্ছা, অভিনন্দন ও বিদায় জানিয়েছেন জাতীয় দলে তাঁর সতীর্থরা।

তামিমের সঙ্গে দীর্ঘ ৯ বছর জাতীয় দলে একসঙ্গে ১০৬ ম্যাচ খেলেছেন সৌম্য সরকার। ২০১৫ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত তিন সংস্করণ মিলিয়ে ৮১ ইনিংসে ওপেন করেছেন দুজন। সৌম্যর চোখে তামিমের এই অবসর মানে সবকিছুর শেষ নয়; বরং নতুন এক শুরুও। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সৌম্যর ভেরিফায়েড ফ্যান পেজে তামিমের অবসর নিয়ে লেখা, ‘নতুন শুরুর জন্য শুভকামনা। অবসর মানে শেষ নয়, এটা সুন্দর এক নতুন অধ্যায়ের শুরুও। সামনের অভিযাত্রা উপভোগের। অবসর শুভ হোক, ভাই। মাঠে আপনাকে মিস করব।’

আরও পড়ুনযত রেকর্ড নিয়ে বিদায় নিলেন তামিম২ ঘণ্টা আগে

জাতীয় দলে তামিমের আগে এসেছেন মুশফিকুর রহিম। তামিমের পুরো ক্যারিয়ারই তাঁর চোখের সামনে। তামিমের সঙ্গে ৭২ ইনিংসে একসঙ্গে ব্যাট করা মুশফিক তাঁর বিদায়বেলায় ভেরিফায়েড ফ্যান পেজে লিখেছেন, ‘তামিম, তোমার এই অবসরের সময়ে তোমার অর্জনের জন্য আমি কতটা গর্বিত, সেটি বলছি। দোস্ত, তুমি বাংলাদেশ ক্রিকেটের অসাধারণ এক দূত এবং বিশ্বমানের ব্যাটার। দুবাইয়ে আমাদের জুটিটি আমি সব সময় মনে রাখব, বিশেষ করে তুমি যখন ভাঙা আঙুল নিয়ে ব্যাট করেছিলে। এতে দেশের প্রতি তোমার নিবেদন ও খেলার প্রতি ভালোবাসাটা বোঝা যায়। অবসর শুভ হোক, দোস্ত। মাঠে তোমাকে মিস করব। তবে ক্রিকেটের মাধ্যমে অসাধারণ এক বন্ধু পাওয়ার জন্য আমি কৃতজ্ঞ।’

তামিমের সঙ্গে ৩৮ ইনিংসে ব্যাট করা মাহমুদউল্লাহর পেজে লেখা হয়, ‘তামিম, দীর্ঘ এবং দুর্দান্ত আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে সুন্দর সব অর্জনের জন্য তোমাকে অনেক অভিনন্দন। তোমার অর্জন অনেক এবং বাংলাদেশ দলে অবদানও প্রচুর। আমার মনে হয়, বাংলাদেশ দলের হয়ে এটাই আমাদের শেষবার একসঙ্গে ব্যাট করার ছবি (পোস্টের ছবি)। তোমার সঙ্গে খেলাটা ছিল আনন্দের এবং মাঠ ও মাঠের বাইরে অনেক স্মৃতি আমাদের। অবসর সুখের হোক এই কামনা করি এবং ভবিষ্যতের জন্যও শুভকামনা রইল। তোমার অবদান সব সময় মনে রাখা হবে।’

আরও পড়ুনবিপিএলে পিচেও বল রাখতে পারছেন না—এরা কারা, কোত্থেকে এল এরা১ ঘণ্টা আগে

জাতীয় দলের বাইরে থাকা ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম তামিমের অবসর নিয়ে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘আপনার অবসরের মাধ্যমে বাংলাদেশের ক্রিকেটে একটি যুগের অবসান ঘটল। দেশের অন্যতম সেরা ওপেনার হিসেবে নিজের দক্ষতা, নিবেদন ও নেতৃত্বগুণ দিয়ে আপনি এই খেলায় অমোচনীয় ছাপ রেখে গেলেন। বড় সেঞ্চুরি কিংবা চাপের মুখে দারুণ সব পারফরম্যান্সের অবদান আপনাকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সত্যিকারের আইকন বানিয়েছে।’

জাতীয় দলের হয়ে তিন সংস্করণ মিলিয়ে ৩৮৭ ম্যাচে ১৫১৯২ রান করা তামিম গতকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অবসর ঘোষণায় লেখেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে দূরে আছি অনেক দিন ধরেই। সেই দূরত্ব আর ঘুচবে না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমার অধ্যায় শেষ।’ তিন সংস্করণ মিলিয়ে বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তামিমের। ৪৬৮ ম্যাচে ১৫৩০০ রান নিয়ে শীর্ষে মুশফিক। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান তামিমের। ২৪৩ ম্যাচে করেছেন ৮৩৫৭ রান।

আরও পড়ুনসিলেটের প্রথম জয় ১০০তম ম্যাচে কেড়ে নিল লিটনের হাসি১২ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মন ভালো রাখার উপায়

অনেকেই মনে করেন মন খারাপ হলে তা থেকে বের হওয়া কঠিন! অথচ মন খারাপ করার এ সময়টা কাটিয়ে উঠতে খুব বড় কিছু করার দরকার নেই কারও। শুধু ছোট কিছু অভ্যাসই আপনার বিষাদমাখা মনকে এক নিমেষেই ভালো করে দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের ওয়েবসাইটে এমন কিছু সহজ উপায় জানানো হয়েছে, যেগুলোর নিয়মিত চর্চায় আমাদের মনের স্বাস্থ্য অনেকটাই ভালো থাকবে। 
কাছের মানুষের সঙ্গে সময় কাটান: কাছের মানুষ বা প্রিয়জনের সঙ্গে কাটানো সময়টুকু আমাদের অন্যরকম এক মানসিক শান্তি এনে দেয়। খেয়াল করে দেখবেন, কাছের মানুষের সঙ্গে সময় কাটালে মন খারাপের সময় কীভাবে কেটে যায় আপনি টেরও পান না। 
আপনি যা করতে পারেন: প্রতিদিন পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটান। একসঙ্গে খাবার খাওয়া বা গল্প করা হতে পারে ভালো শুরু। অনেকদিন দেখা হয়নি এমন বন্ধুর সঙ্গে দেখা করার পরিকল্পনা করুন। 
ঘরে বসে টিভি না দেখে পরিবারের সঙ্গে বোর্ড গেম খেলুন বা পুরোনো গল্পগুলোর স্মৃতিচারণ করুন। 
সহকর্মীর সঙ্গে একসঙ্গে লাঞ্চ করুন, এতে বন্ধন আরও দৃঢ় হবে। 
সময় পেলে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করুন, এতে নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচয় হবে এবং মানসিক প্রশান্তি আসবে। 
এড়িয়ে চলুন: শুধু ফোনে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় চ্যাট করে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করবেন না। সামনাসামনি দেখা করার আনন্দ অন্যরকম। 
শরীরচর্চা করুন: শরীরচর্চা শুধু ওজন কমানোর জন্য নয়, এটি মনের ওপরেও অসাধারণ প্রভাব ফেলে। ব্যায়াম করলে শরীরের পাশাপাশি মনও প্রশান্ত হয়।
আপনি যা করতে পারেন: প্রতিদিন ২০-৩০ মিনিট হাঁটা, দৌড়ানো বা নাচ করুন; যা আপনার মনকে উজ্জীবিত বা প্রফুল্ল  করবে। 
যোগব্যায়াম বা স্ট্রেচ করে শরীরের নমনীয়তা বাড়ান। ব্যায়ামকে কষ্টের কাজ মনে না করে এমন কিছু করুন যা আনন্দ দেয়– যেমন সাইকেল চালানো বা সুইমিং। 
এড়িয়ে চলুন: জিমে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটাতে হবে– এমন চিন্তা বাদ দিন; যা করতে ভালো লাগে সেটিই করুন। 
নতুন কিছু শিখুন: নতুন কিছু শেখা মানে নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করা। এতে শুধু আত্মবিশ্বাসই বাড়ে না, বরং জীবনে অর্থপূর্ণ অনুভূতি আসে। 
আপনি যা করতে পারেন: নতুন কোনো খাবার রান্না করতে শিখুন। 
কর্মক্ষেত্রে নতুন দায়িত্ব নিন বা কোনো সহকর্মীকে মেন্টরিং করুন। 
ডিআইওয়াই প্রকল্পে হাত দিন– যেমন পুরোনো বাইক ঠিক করা বা ঘরের গেট রং করা। 
নতুন ভাষা শিখুন বা পছন্দের কোনো অনলাইন কোর্সে যোগ দিন। ছবি আঁকা, ব্লগ লেখা বা গিটার বাজানোর মতো নতুন শখ গড়ে তুলুন। 
এড়িয়ে চলুন: শুধু সার্টিফিকেট বা ডিগ্রি অর্জনের দিকে মনোযোগ দেবেন না। নতুন কিছু শেখার আনন্দটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। 
অন্যের জন্য কিছু করুন: অন্যের জন্য কিছু করা আমাদের ভেতর আনন্দের অনুভূতি জাগায়। এটি মনের মধ্যে নিখাদ ভালোবাসা ও সহমর্মিতাবোধ তৈরি করে, যা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। 
আপনি যা করতে পারেন: কাউকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানান। পরিচিতজনের খোঁজ নিন এবং মন দিয়ে তার কথা শুনুন। আত্মীয় বা বন্ধু যাদের সহযোগিতা প্রয়োজন তাদের পাশে দাঁড়ান। 
বর্তমান মুহূর্তে মনোযোগ দিন; জীবন উপভোগ করুন: আমরা প্রায়ই ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত থাকি বা অতীতের ভুল নিয়ে আফসোস করি। এসব চিন্তা না করে বর্তমানকে গুরুত্ব দিন। 
আপনি যা করতে পারেন: প্রতিদিনের ছোট ছোট আনন্দ উপভোগ করুন– সকালে সূর্যোদয় দেখা বা বিকেলে পাখির ডাক শোনা। 
খাওয়ার সময় ফোন দূরে রেখে খাবারের স্বাদ উপভোগ করুন। শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন এবং চারপাশের ছোট জিনিসগুলো খেয়াল করুন। v 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মন ভালো রাখার উপায়
  • ৩০ বছরের সংসার ভেঙেছে পেপ গার্দিওলার, স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমের দাবি
  • আমরা প্রতিবেশী, একসঙ্গে থাকতে হবে: বাংলাদেশ ইস্যুতে ভারতীয় সেনাপ্রধান