একইসঙ্গে ধরা খেল প্রিমিয়ার লিগের বিগ থ্রি
Published: 15th, January 2025 GMT
প্রিমিয়ার লিগে ব্রেন্টফোর্ডের বিপক্ষে সহজে জিততে জিততে ড্র করেছে ম্যানচেস্টার সিটি। শুরুতে গোল খেয়েও কোন রকম সমতায় মাঠ ছেড়েছে লিভারপুল। চেলসি শুরুতে লিড নিলেও শেষ সময়ের গোলে একটা পয়েন্ট নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তাদের।
সব মিলিয়ে মঙ্গলবার রাতে ধরা খেয়েছে প্রিমিয়ার লিগের তিন বিগ থ্রি লিভারপুল, চেলসি ও ম্যানসিটি। এতে লিভারপুল পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে থাকলেও দুইয়ে উঠে গেছে নটিংহাম। চেলসি নেমে গেছে চারে।
ব্রেন্টফোর্ডের বিপক্ষে ম্যানসিটি ম্যাচের ৬৬ ও ৭৮ মিনিটে ফিল ফোডেনের গোলে লিড নেয়। অথচ ৮২ ও ৯২ মিনিটে গোল খেয়ে পেপ গার্দিওলার দলকে হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়। মৌসুম জুড়েই সিটিজেনদের গলার কাটা হয়ে আছে রক্ষণভাগ।
লিভারপুল লিগ মৌসুমে মাত্র একটা ম্যাচ হেরেছে। সেটা নটিংহাম ফরেস্টের বিপক্ষে। দ্বিতীয় লেগেও শুরুতে হারের শঙ্কায় পড়ে যায় অল রেডসরা। ৮ মিনিটে গোল হজম করে তারা। বদলি নেমে ডিয়াগো জোটা ৬৬ মিনিটে দলকে সমতায় ফেরান। আর্নে স্লটের দল জয়ের জন্য লড়াই করলেও পরিষ্কার সুযোগ খুব একটা তৈরি করতে পারেনি।
চলতি মৌসুমে দারুণ ফুটবল খেলছে বোর্নামাউথ। পয়েন্ট টেবিলে সাতে থাকা দলটির বিপক্ষে চেলসি ১৩ মিনিটে লিড নেয়। গোল করেন কোলে পালমার। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে দুই গোল হজম করে বসে এনজো মারেস্কার দল। ক্লুভার্ট ৫০ মিনিটে পেনাল্টি থেকে ও ৬৮ মিনিটে সেমেনো গোল করে বোর্নামাউথকে ২-১ গোলে এগিয়ে নেন। যোগ করা সময়ে রিচি জেমস গোল করে ব্লুজদের সমতায় ফেরান।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
১০-২০ কোটি টাকা ছাড়া ভোট করা যায় না, তাই আমাদের ভাবতে হয়: আসিফ মাহমুদ
আগামী নির্বাচনেও কালোটাকার দৌরাত্ম্য থাকবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। তিনি বলেছেন, তাই নির্বাচনে নামার আগে তাঁর মতো অন্যদেরও ভাবতে হচ্ছে।
আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক গোলটেবিল আলোচনায় এ কথা বলেন আসিফ মাহমুদ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আয়োজিত এই বৈঠকের শিরোনাম ছিল ‘নভেম্বর থেকে জুলাই বিপ্লব থেকে বিপ্লবে’।
বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতায় ১০-২০ কোটি টাকা না থাকলে সংসদ নির্বাচন করা সম্ভব নয় মন্তব্য করে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘এই বাস্তবতায় আসলে যাদের কালোটাকা আছে, তাদেরই সুযোগ আছে আরকি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার।...সে জন্য আমাদেরও বারবার চিন্তা করতে হয়, ইলেকশন কী করব, না করব না। করলে কীভাবে করব। মানুষ টাকা ছাড়া ভোট দেবে কি না।’
জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন। উপদেষ্টা পরিষদে তাঁর সহকর্মী আরেকজন সমম্বয়ক নাহিদ ইসলাম নতুন দলের নেতৃত্ব নিয়ে রাজনীতিতে নামলেও আসিফ মাহমুদ এখনো স্পষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত জানাননি। তিনি শুধু বলেছেন, তিনি কোনো দলের হয়ে নির্বাচন করলে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগ করবেন।
অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছে। আসিফ মাহমুদের জুলাই আন্দোলনের সহযোদ্ধাদের গড়া দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সেই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
অভ্যুত্থানের পর ‘ভুল’ হয়েছেজুলাই অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে থেকে সহযোগিতা না পাওয়ার অভিযোগ তোলার পাশাপাশি আসিফ মাহমুদ বলেন, সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় তাঁদেরও কিছু ভুল হয়েছিল।
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালানোর এক ঘণ্টা, দুই ঘণ্টাও বোধ হয় হয়নি, আমাদের রাজনৈতিক নেতারা এস্টাবলিশমেন্টের কোলে গিয়ে উঠে গেছেন। তো তরুণ হিসেবে আমাদেরও ভুল আছে, আমরা ২৫-২৬ বছরের কয়েকজন তরুণ ছিলাম পলিসি মেকিংয়ের দায়িত্বে। কিন্তু যখন আমাদের অগ্রজরা এস্টাবলিশমেন্টকে গিয়ে দায়িত্ব দিয়ে আসেন, যে আপনারা একটা অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেন, তখন আমাদের হাতে আসলে খুব বেশি কিছু থাকে না।’
আসিফ মাহমুদ দাবি করেন, তাঁরা তখন ‘এস্টাবলিশমেন্টের কাছে’ রাজনৈতিক নেতাদের না যেতে বলেছিলেন। কিন্তু তাঁদের আহ্বান শোনা হয়নি। পরবর্তী পরিস্থিতিতে সেদিন দেশের পরিস্থিতি বিবেচনায় ছাত্রনেতারা দ্রুত সরকার গঠনের বিষয়ে একমত হন।
আসিফ মাহমুদ আরও বলেন, ৫ থেকে ৮ আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতারা রাজনৈতিক নেতাদের পাশ কাটিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। তাঁদের সমর্থন ছাড়া একেবারে এককভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নিলে সেটার পরিণতি কেমন হবে, সেটা বোঝাও তরুণ ছাত্রনেতাদের জন্য কঠিন ছিল।
আসিফ মাহমুদ দাবি করেন, ৫ আগস্ট থেকে ৮ আগস্টের মধ্যে তিনি প্রস্তাব করেছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘মিডল গ্রাউন্ড রেখে’ সেখানে একটা আলোচনা আয়োজনের। সেটি হয়নি। তাঁর ভাষ্যে, ‘আমাদের বলা হলো, আপনারা ক্যান্টনমেন্টে আসেন। তো আমরা বললাম যে ক্যান্টনমেন্টে যাওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তারপর আলোচনার ভেন্যু হিসেবে একটা মিডল পয়েন্টে আমাদেরকেও আসতে হলো।’
এই আলোচনায় অংশ নিয়ে কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার বলেন, ‘২০২৪ সালের ৮ আগস্ট একটি সাংবিধানিক প্রতিবিপ্লব হয়েছে। সে সময়ে নেতৃত্বে থাকা তরুণেরা কতগুলো ভুল করেছে। সেই ভুল তরুণেরা এখনো চাইলে সংশোধন করতে পারে। তবে তার জন্য বেশি সময় নেই।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি রিফাত রশিদের সঞ্চালনায় এই গোলটেবিলে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল লতিফ মাসুম, কর্নেল (অব.) হাসিনুর রহমান, এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন, পুসাবের স্থায়ী কমিটির সদস্য ফাহমিদুর রহমান, অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট মোহাম্মদ সজল বক্তব্য দেন।