ইউটিউবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি নিম্নমানের, পুনরাবৃত্তিমূলক ভিডিওর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। এর ফলে ইউটিউবে থাকা ভিডিওর মান কমে যাওয়ার পাশাপাশি মনিটাইজেশন ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। আর তাই পরিস্থিতি সামাল দিতে নতুন নীতিমালা তৈরি করেছে ইউটিউব। ১৫ জুলাই থেকে নতুন নীতিমালা কার্যকর করা হবে।

নতুন নীতিমালায় ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামে (ওয়াইপিপি) যুক্ত থাকা নির্মাতাদের মনিটাইজেশনের শর্ত আরও কঠোর করা হয়েছে। নীতিমালার আওতায় পুরোনো একাধিক ভিডিও থেকে ক্লিপ সংগ্রহ করে এআইয়ের মাধ্যমে নতুন ভিডিও তৈরি করা হলে সেগুলো মনিটাইজেশনের আওতায় পড়বে না। নতুন এ পরিবর্তনকে বেশ গুরুত্ব দিচ্ছেন ভিডিও নির্মাতারা, কারণ বর্তমানে এআই ব্যবহার করে অনেকেই নিয়মিত ভিডিও তৈরি করে ইউটিউবে প্রকাশ করেন।

আরও পড়ুনইউটিউবে ভিডিও নির্মাতাদের আয় ও ভিউ কমে যাওয়ার আশঙ্কা০১ জুলাই ২০২৫

জেনারেটিভ এআই টুলের ব্যবহার বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইউটিউবে এআই দিয়ে তৈরি কণ্ঠস্বর, পুরোনো ভিডিও ক্লিপ দিয়ে নিম্নমানের ভিডিও তৈরির সংখ্যা বেড়েছে। এ ধরনের ভিডিওকে অনেকেই ‘এআই স্লোপ’ বলে উল্লেখ করে থাকেন। মূলত এ ধরনের ভিডিওর বিস্তার ঠেকাতেই নতুন নীতিমালা তৈরি করেছে ইউটিউব।

আরও পড়ুনবাংলাদেশি ইউটিউব চ্যানেলে চাকরি করেন ৪০ জন, বেতনই মাসে প্রায় ৭ লাখ টাকা১৭ জুন ২০২৫

ইউটিউবের নতুন নীতিমালা নিয়ে নির্মাতাদের মধ্যে কিছুটা বিভ্রান্তিও তৈরি হয়েছে। তবে ইউটিউবের হেড অব এডিটোরিয়াল অ্যান্ড ক্রিয়েটর লিয়াজোঁ রেনে রিচি এক ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন, পুরোনো নীতিমালার প্রয়োগ আরও কার্যকরভাবে নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পুনরাবৃত্তিমূলক ভিডিও বরাবরই ইউটিউবের মনিটাইজেশন নীতিমালার বাইরে ছিল। আমরা এখন তা আরও স্পষ্টভাবে প্রয়োগ করতে যাচ্ছি।

সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: নত ন ন ত ম ল

এছাড়াও পড়ুন:

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’

সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’

অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি‌ বরাবর অভিযোগ করেন।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ