মাঠে নেইমারের ছোঁয়া, জয়ে ফিরল সান্তোস
Published: 11th, July 2025 GMT
নেইমারের ফিরে আসা মানেই যেন এক আলোর ঝলক। আর এবারও তার ব্যতিক্রম হলো না। চোট কাটিয়ে মাঠে ফিরেই সান্তোসের জার্সিতে নিজের পুরোনো রূপে দেখা দিলেন ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের এই জাদুকর। নতুন চুক্তির পর প্রথম ম্যাচেই গোল করলেন, করালেনও। আর তাতেই প্রীতি ম্যাচে ফেরোভিয়ারিয়ার বিপক্ষে ৩–১ গোলের দুর্দান্ত জয় তুলে নিল সান্তোস।
ব্রাজিলের কারিয়াসিকার ক্লেবের আন্দ্রাদে স্টেডিয়াম যেন নেইমারময় হয়ে উঠেছিল শুক্রবার রাতে। প্রথম মিনিট থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবলে প্রতিপক্ষকে চাপে রাখে সান্তোস। ২০তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে নিখুঁত শটে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন নেইমার। এই গোলটি ছিল সান্তোসে ফেরা পর তার চতুর্থ গোল।
সেই সঙ্গে ৩১ মিনিটে গিয়ের্মের করা গোলেও ছিল তার গুরুত্বপূর্ণ অ্যাসিস্ট। যেটি ফুটবল বোদ্ধাদের চোখে নিখুঁত ভিশনের উদাহরণ। প্রথমার্ধেই ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় সান্তোস। তবে দ্বিতীয়ার্ধে নেইমার মাঠে ফেরেননি, তার বদলে নামেন পাদুলা।
আরো পড়ুন:
সিঙ্গাপুরের কাছে হেরে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে পেছালো বাংলাদেশ
পিএসজির কাছে হেরে আশার আলো দেখাচ্ছেন আলোনসো
ম্যাচে নজর কাড়লেন আরেক তরুণ রবিনিও জুনিয়র। ব্রাজিল ও সান্তোসের কিংবদন্তি রবিনিওর ছেলে, মাত্র ১৭ বছর বয়সেই মূল দলের জার্সিতে অভিষেক করলেন। বাবার প্রিয় ৭ নম্বর গায়ে চাপিয়ে মাঠে নামা এই মিডফিল্ডার অভিষেকেই প্রশংসা কুড়ান দিয়েগো পিতুচার গোলে অ্যাসিস্ট দিয়ে।
এই পারফরম্যান্স সান্তোস ভক্তদের মনে এনে দিয়েছে নতুন আশার আলো। বাবার মতোই কি এবার ছেলের মধ্যেও ফুটবে প্রতিভার ফুল?
সব কিছু ঠিকঠাক চললেও ম্যাচটা পুরোপুরি শেষ করা যায়নি। দ্বিতীয়ার্ধে একাধিক দর্শক নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে মাঠে ঢুকে পড়ায় রেফারি ৮৫ মিনিটে খেলা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন। ম্যাচ শেষ পর্যন্ত ৩–১ গোলেই সান্তোসের জয় হিসেবে গণ্য করা হয়।
ম্যাচের পর নেইমার বলেন, “এ ধরনের ম্যাচ খেলাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চোটের পর নিজেকে ফিরে পাওয়ার জন্য এমন ম্যাচ দরকার ছিল। আমি এখন অনেকটাই ভালো অনুভব করছি।”
নেইমারের প্রত্যাবর্তন যেমন স্বস্তির বার্তা দিচ্ছে ব্রাজিলীয় ফুটবলে, তেমনি রবিনিও জুনিয়রের অভিষেকও যেন ভবিষ্যতের সম্ভাবনার কাব্য লিখে গেল সান্তোসের আকাশে। নতুন মৌসুম শুরুর আগে এই জয় ও পারফরম্যান্স যেন এক আত্মবিশ্বাসের বার্তা।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল ফ টবল
এছাড়াও পড়ুন:
কয়েকবার শর্ত বদল, তবুও টিভি স্বত্ব বিক্রি করতে পারছে না বিসিবি
মাঠের ক্রিকেটে পারফরম্যান্সে ধারাবাহিকতা নেই। নেই স্থিতিশীল পরিস্থিতিও। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দেশের ক্রিকেটে হ-য-ব-র-ল অবস্থা। ক্রিকেট প্রশাসনে যে অস্থিরতা, তা কাটাতে পারেনি মাঠের পারফরম্যান্সও। তাতে সবকিছুই যেন ওলটপালট। তাই তো ক্রিকেটের সবচেয়ে বেশি আয়ের যে উৎস, সেখানেও যা-তা অবস্থা। শুধু দেশের ক্রিকেট নয়, বিশ্বজুড়েই ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি আয় হয় টিভি স্বত্ব থেকে। সম্প্রচার স্বত্ব বিক্রি করে ক্রিকেট বোর্ডগুলো বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় করে থাকে। অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশ ক্রিকেট থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলো। ক্রিকেট আগ্রহে ভাটার কারণে সম্প্রচার স্বত্ব বিক্রিই করতে পারছে না বিসিবি। একাধিকবার শর্ত বদল, সময়সীমা বৃদ্ধি, দাম কমানো এবং সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর শর্ত দিয়েও কোনো সাড়া পাচ্ছে না বিসিবি। তা রীতিমতো ভাবাচ্ছে দেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে।
বাংলাদেশ ঘরের মাঠে সবশেষ খেলেছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। দুই টেস্টের জন্য টিভি স্বত্ব বিক্রি করতে না পারায় বিসিবি বাধ্য হয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেল বিটিভিতে খেলা দেখায়। যেখান থেকে কোনো লাভই করতে পারেনি। উল্টো প্রোডাকশন খরচ বহন করতে হয়েছে। সামনে পাকিস্তানের বিপক্ষে তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। জানা গেছে, এই সিরিজের টিভি স্বত্বও এখন পর্যন্ত বিসিবি বিক্রি করতে পারেনি। ৪ কোটি টাকায় টিভি স্বত্ব বিক্রি করতে চেয়েছে বিসিবি। তাতেও আগ্রহ দেখায়নি কেউ।
শুধু তা-ই নয়, ২০২৫–২৭ হোম সিরিজের স্যাটেলাইট, ডিজিটাল এবং ডিটিএইচ সম্প্রচার স্বত্ব বিক্রির জন্য দরপত্র আহ্বান করলেও তাতে কোনো দেশীয় প্রতিষ্ঠান সাড়া দেয়নি। গত ১২ জুন ইংরেজি ও বাংলা জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিসিবি জানায়, ১২ জুলাই ২০২৫ থেকে ১৫ জুন ২০২৭ পর্যন্ত সময়সীমার মধ্যে এসব স্বত্ব বিক্রয়ের জন্য আগ্রহীদের দরপত্র দিতে হবে। দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল ৮ জুলাই। কিন্তু বিসিবি যেসব শর্ত দিয়েছিল, তা মেনে কেউই দরপত্র জমা দেয়নি।
আরো পড়ুন:
সাইফউদ্দিন-নাঈম শেখকে নিয়ে টি-টোয়েন্টি দল ঘোষণা
দশ বছরে ওয়ানডেতে সবচেয়ে বাজে অবস্থা বাংলাদেশের
বিসিবি যে শর্ত দিয়েছিল, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ১০ লাখ মার্কিন ডলারের সিকিউরিটি ডিপোজিট। এই অর্থ ব্যাংক ড্রাফট, পে-অর্ডার, অপরিবর্তনীয় ব্যাংক গ্যারান্টি বা ট্রান্সফারের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হতো। কিন্তু বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে বিশাল এই অঙ্ক জমা দিতে রাজি নয় কোনো প্রতিষ্ঠানই। কোনো সাড়া না পেয়ে বিসিবি গত ২৭ জুন ও ৪ জুলাই দরপত্রে সংশোধনী আনে এবং শুধুমাত্র পাকিস্তান সিরিজের জন্যও আলাদা দরপ্রস্তাব আহ্বান করেছে। তাতেও কোনো প্রতিষ্ঠান সাড়া দেয়নি। বিষয়গুলো নিয়ে বিসিবির একাধিক পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তারা কেউ কথা বলতে রাজি নন। বিশেষ করে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ বাজেভাবে হারের পর আড়ালে চলে গেছেন তারা।
টিভি স্বত্ব বিক্রি করতে না পারলেও স্পন্সরশিপ স্বত্ব এই সিরিজের বিক্রি করতে পেরেছে বিসিবি। পাকিস্তান–বাংলাদেশ সিরিজের স্পন্সর হয়েছে কেএফসি।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল