ইরানের কাছে এখনো অস্ত্র তৈরির উপযোগী ইউরেনিয়াম রয়ে গেছে, আশঙ্কা ইসরায়েলের
Published: 11th, July 2025 GMT
ইরানে গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বোমা হামলার পরও তেহরানের কাছে কিছু সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম রয়ে গেছে বলে ধারণা করছে ইসরায়েল। আর এসব ইউরেনিয়াম পরমাণু অস্ত্র তৈরিতে ব্যবহৃত হওয়ার আশঙ্কা করছে দেশটি। গতকাল বৃহস্পতিবার জ্যেষ্ঠ এক ইসরায়েলি কর্মকর্তার বরাতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস এমন খবর প্রকাশ করেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যরা শুরু থেকেই দাবি করে আসছেন, যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনাই ‘পুরোপুরি ধ্বংস’ হয়ে গেছে। ৩০ হাজার পাউন্ড ওজনের বিশেষ বাংকার-বিধ্বংসী বোমার মাধ্যমে এ হামলা চালানো হয়েছে।
গত সপ্তাহে মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের মুখপাত্র শন পারনেল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে অন্তত এক থেকে দুই বছর পেছনে ঠেলে দিয়েছি। অন্তত প্রতিরক্ষা দপ্তরের গোয়েন্দা বিভাগের পর্যালোচনায় এমনটাই মনে করা হচ্ছে।’ যদিও শন পারনেল তাঁর এই দাবি প্রমাণে কোনো তথ্য উপস্থাপন করেননি।
পারনেল বলেন, গোয়েন্দা বিশ্লেষকদের হিসাব অনুযায়ী, আসল সময়টা সম্ভবত দুই বছরের কাছাকাছি।
ইসরায়েলের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রে থাকা ১৮ হাজার সেন্ট্রিফিউজের বেশির ভাগই ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে ৬০ শতাংশ মাত্রায় সমৃদ্ধ সব ইউরেনিয়াম নষ্ট হয়নি। কিছু ইউরেনিয়াম বিশেষ পাত্রে আলাদা করে সংরক্ষণ করা ছিল, যা এখনো ইরানি বিজ্ঞানীরা ব্যবহার করতে পারেন। তবে ওই ইসরায়েলি কর্মকর্তা হুঁশিয়ার করে বলেন, কেউ যদি সে ইউরেনিয়াম সংগ্রহের চেষ্টা করে, তবে ইসরায়েল তা ধরে ফেলবে এবং আবার হামলা চালাবে।
নিউইয়র্ক টাইমসকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ইসরায়েলের বিশ্বাস, ১০ মাস আগে হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহ নিহত হওয়ার পর ইরান যে জোরেশোরে পরমাণু বোমা বানানোর চেষ্টা চালাচ্ছে, তার যথেষ্ট প্রমাণ ইসরায়েলের হাতে আছে। নাসরাল্লাহ ছিলেন ইরানের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র।
ওই কর্মকর্তা বলেন, এ–সংক্রান্ত প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও ভাগাভাগি করা হয়েছে। এরপরই ইসরায়েল ইরানের ওপর একের পর এক হামলা চালানোর নিজস্ব পরিকল্পনাকে এগিয়ে নেয়।
তবে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাসচিব রাফায়েল গ্রোসি বলেন, হামলার আগেই ইরান তাদের অনেক ইউরেনিয়াম মজুত সরিয়ে ফেলেছিল। তবে ইসরায়েলি ওই কর্মকর্তা নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছেন, এটা সম্ভব নয়, কারণ, এমনটা করা খুবই কঠিন।
‘১২ দিনের সংঘাত’গত ১৩ জুন থেকে ইরানের ওপর হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ইরানের সামরিক ঘাঁটি ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে একের পর এক হামলা চালায় তারা। পাশাপাশি দেশটির গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা, গোয়েন্দা ও সামরিক কমান্ডার এবং বিজ্ঞানীদেরও হত্যা করে ইসরায়েল।
জবাবে ইসরায়েলের হাইফা, তেল আবিবসহ বিভিন্ন বড় শহরের দিকে ইরান টানা ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। এগুলোর কিছু কিছু স্পর্শকাতর এলাকায় আঘাত হানে। তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নীতি অনুযায়ী, হামলার আসল জায়গাগুলোর তথ্য প্রকাশ করাটা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর জন্য নিষিদ্ধ।
এক সপ্তাহের মাথায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন পদক্ষেপ নেওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম।
হামলার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ইরান কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের আল-উদেইদ সামরিক ঘাঁটির দিকে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। এই পাল্টা হামলাকে ট্রাম্প ‘খুব দুর্বল জবাব’ বলে উল্লেখ করেন। বলেন, তিনি আবার ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে শান্তি আলোচনার চেষ্টা শুরু করবেন।
নিজের ট্রুথ সোশ্যাল অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, ‘হামলার আগেই ইরান আমাদের সতর্ক করে দিয়েছিল, এ জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি আরও বলেন, এই হামলায় কোনো মার্কিন নাগরিক নিহত বা আহত হননি।
ট্রাম্পের মন্তব্য থেকে বোঝা যায়, ইরান এই হামলা খুব হিসাব করে করেছে, যেন ওয়াশিংটন ও তেহরান দুই দেশই পরিস্থিতি শান্ত করার সুযোগ পায়। তিনি লিখেছেন, ‘সবচেয়ে বড় কথা হলো, ওরা নিজেদের ভেতরের সব ক্ষোভ ঝেড়ে ফেলেছে। আশা করি, আর কোনো ঘৃণা থাকবে না।’
ট্রাম্প আরও লেখেন, ‘হয়তো এখন আঞ্চলিকভাবে শান্তি ও সৌহার্দ্যের পথে এগোতে পারবে ইরান। আর আমি ইসরায়েলকেও সেটা করতে উৎসাহ দেব।’
চলতি সপ্তাহে ট্রাম্প সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে পরমাণু বিষয়ে আলোচনা আবার শুরু হচ্ছে এবং এরই মধ্যে নতুন আলোচনার সময়সূচি নির্ধারিত হয়েছে।
এর আগে ইরানে ইসরায়েলের প্রথম দফার হামলার পর ওয়াশিংটন ও তেহরানের পাঁচ দফায় আলোচনা ব্যাহত হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র ইউর ন য় ম ইসর য় ল র কর মকর ত পর এক পরম ণ
এছাড়াও পড়ুন:
তবে কি নিউইয়র্ক টাইমস মেয়রপ্রার্থী জোহরানের পেছনে লেগেছে
সম্প্রতি নিউইয়র্ক টাইমসে একটি সংবাদ প্রতিবেদন প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে পাঠকদের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে—এবং তার যথেষ্ট কারণও আছে।
প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল ‘কলেজে ভর্তির আবেদনপত্রে মামদানি নিজেকে এশীয় এবং আফ্রিকান আমেরিকান দেখিয়েছিলেন’
কেন নিউইয়র্ক টাইমসের ওই প্রতিবেদন তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে, তার কয়েকটি কারণ তুলে ধরেছেন মার্গারেট সুলিভান। তিনি দ্য গার্ডিয়ান ইউএসের একজন কলাম লেখক। তিনি গণমাধ্যম, রাজনীতি ও সংস্কৃতি নিয়ে কলাম লেখেন।
মার্গারেট সুলিভান তাঁর কলামে লিখেছেন, প্রতিবেদনটি নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদপ্রার্থী জোহরান মামদানিকে নিয়ে করা। ডেমোক্র্যাটদের প্রাথমিক বাছাইয়ে (প্রাইমারি ইলেকশন) তাঁর চকমপ্রদ জয় জাতীয় পর্যায়ে নজর কেড়েছে।
জোহরানকে নিয়ে ডানপন্থী সংবাদমাধ্যমগুলোর দাবি, মামদানি কলাম্বিয়ার অ্যাফারমেটিভ অ্যাকশনভিত্তিক ভর্তি নীতির সুবিধা নিতে নিজের জাতিগত পরিচয় নিয়ে মিথ্যা বলেছিলেন।ভারতীয় বংশোদ্ভূত মামদানির জন্ম উগান্ডায়। নিউইয়র্ক টাইমসের ওই প্রতিবেদনের মূল বক্তব্য ছিল, নিউইয়র্কে হাইস্কুলের শেষ ধাপে মামদানি কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন করার সময় জাতিগত পরিচয়সম্পর্কিত একাধিক ঘরে টিক দিয়েছিলেন।
আপনি বলতে পারেন, এতে সমস্যা কোথায়? কেন এ বিষয়টি নিয়ে রিপোর্টই–বা করতে হবে? দারুণ প্রশ্ন।
জোহরান মামদানিকে নিয়ে এ ধরনের একটি প্রতিবেদন করা এবং সেটি প্রকাশের সিদ্ধান্ত কম করে বললেও বোকার মতো একটি কাজ হয়েছে বলা যায়মার্গারেট সুলিভান, দ্য গার্ডিয়ান ইউএসের কলাম লেখকসংবাদটির প্রকৃত গুরুত্ব থাকুক বা না থাকুক, এটি অবধারিতভাবে মামদানির একজন প্রতিদ্বন্দ্বীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তিনি হলেন, নিউইয়র্ক সিটির বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামস। এবার অ্যাডামস একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
অ্যাডামস একজন কৃষ্ণাঙ্গ। তিনি বলেছেন, জোহরান মামদানি কৃষ্ণাঙ্গ না হয়েও আফ্রিকান–আমেরিকান পরিচয়কে পুঁজি করে ফায়দা তোলার চেষ্টা করেছেন। এটা তাঁর কাছে গভীর অপমানজনক মনে হয়েছে।
আর ফক্স নিউজে একাধিক টক শোতে উপস্থাপকেরা নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনের উল্লেখ করে জোহরানকে তুলাধোনা করেছেন।
যেমন, ফক্স অ্যান্ড ফ্রেন্ডস অনুষ্ঠানের উপস্থাপক চার্লি হার্ট জোহরানকে একজন ‘বর্ণবাদী’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ যা কিছুতে বিশ্বাস করে, তার সবকিছুকেই ঘৃণা করেন মামদানি।
নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন প্রকাশের আগেও ডানপন্থী টেলিভিশন নেটওয়ার্ক ফক্স নিউজ জোহরানকে ধুয়ে দিয়ে সংবাদ পরিবেশন করেছে। জোহরান একজন মুসলিম ও সমাজতান্ত্রিক।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত মামদানির জন্ম উগান্ডায়। নিউইয়র্ক টাইমসের ওই প্রতিবেদনের মূল বক্তব্য ছিল, নিউইয়র্ক সিটির একজন হাইস্কুল শিক্ষার্থী হিসেবে মামদানি কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন করার সময় জাতিগত পরিচয়সম্পর্কিত একাধিক ঘরে টিক দিয়েছিলেন।প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জোহরানকে একজন কমিউনিস্ট বলেছেন এবং তাঁকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়ন করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন।
অন্যান্য ডানপন্থী সংবাদমাধ্যমও নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনটি লুফে নিয়েছে। তারা মামদানির জাতিসংক্রান্ত তথ্য দেওয়াকে ডিইআই কেলেঙ্কারির উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করেছে। ডিইআই হলো বৈচিত্র্য, সাম্যতা ও অন্তর্ভুক্তি নীতি।
জোহরানকে নিয়ে ডানপন্থী সংবাদমাধ্যমগুলো দাবি করে, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিবাচক পদক্ষেপমূলক ভর্তি নীতির (অ্যাফারমেটিভ অ্যাকশন) সুযোগ নিতেই মামদানি নিজের জাতিগত পরিচয় নিয়ে মিথ্যা বলেছিলেন। মামদানি কিন্তু শেষতক কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হননি, যে কারণে তাঁকে নিয়ে করা ওই সংবাদটি আরও ফালতু হয়ে গেছে।
নিউইয়র্ক টাইমসের মুদ্রিত সংস্করণে এ খবরের শিরোনাম করা হয়, ‘কলেজে ভর্তির আবেদনপত্র ঘিরে সমালোচনার মুখোমুখি মামদানি’।
অধিকাংশ কলেজে ভর্তির আবেদনপত্রে ভারতীয় বংশোদ্ভূত উগান্ডার নাগরিকদের জন্য আলাদা কোনো ঘর থাকে না, তাই আমার পারিবারিক পটভূমি পূর্ণরূপে তুলে ধরার চেষ্টা হিসেবে আমি একাধিক ঘরে টিক দিয়েছিলামজোহরান মামদানি, নিউইয়র্ক সিটির মেয়র প্রার্থীজোহরান তাঁর ব্যাখ্যায় বলেছেন, তিনি তাঁর জটিল পারিবারিক পটভূমি বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন। তাঁর বাবা একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত উগান্ডার নাগরিক এবং মা ভারতীয় বংশোদ্ভূত আমেরিকান। জোহরানের জন্ম উগান্ডায়, শৈশবে নিউইয়র্ক সিটিতে চলে আসার আগে স্বল্প সময় তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাস করেছেন।
নিউইয়র্ক টাইমসকে তিনি বলেন, ‘অধিকাংশ কলেজে ভর্তির আবেদনপত্রে ভারতীয় বংশোদ্ভূত উগান্ডার নাগরিকদের জন্য আলাদা কোনো ঘর থাকে না, তাই আমার পারিবারিক পটভূমি পুরোটা তুলে ধরার চেষ্টা হিসেবে আমি একাধিক ঘরে টিক দিয়েছিলাম।’
সুলিভান লেখেন, জোহরান মামদানিকে নিয়ে এ ধরনের একটি প্রতিবেদন করা এবং সেটি প্রকাশের সিদ্ধান্ত কম করে বললেও বোকার মতো কাজ হয়েছে বলা যায়।
টাইমসের মতামত বিভাগ তাদের মতপ্রকাশের অধিকার রাখে, যতই তা ভুল পথে পরিচালিত হোক না কেন। কিন্তু সরাসরি সংবাদ প্রতিবেদনে কোনো প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া ঠিক না। সংবাদ প্রতিবেদন দলনিরপেক্ষ হওয়া উচিত। কোনো প্রার্থীকে উৎসাহ দেওয়া বা কাউকে খোঁড়া করে দেওয়া সংবাদের কাজ নয়।এর একটি কারণ, কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যভান্ডারে (ডেটাবেজে) বড় ধরনের হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে নিউইয়র্ক টাইমসের হাতে এ তথ্য এসেছে। এক মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে পত্রিকাটির কাছে এ তথ্য আসে। নিউইয়র্ক টাইমস তাদের প্রতিবেদনে তথ্যসূত্র গোপন রেখেছে।
আরও পড়ুনজোহরানকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রে ইসলামবিদ্বেষ ছড়াচ্ছেন উগ্রবাদীরা০১ জুলাই ২০২৫কিন্তু পরে জানা গেছে, ওই সূত্র হলেন জর্ডান লাসকার। গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিনি একজন সুপরিচিত এবং ব্যাপক সমালোচিত জাতিগত বিশুদ্ধতাবাদী বা শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদী।
প্রখ্যাত সাংবাদিক ও গণমাধ্যম উদ্যোক্তা সোলেদাদ ও’ব্রায়েন নিউইয়র্ক টাইমসে জোহরানকে নিয়ে করা ওই প্রতিবেদনকে ‘একটি রসিকতা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, জোহরান মামদানির ওপর এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা টাইমসের জন্য ‘চরম লজ্জাজনক একটি ঘটনা’।
সোলেদাদ নিজেও মিশ্র জাতিগত পারিবারিক পটভূমি থেকে এসেছেন এবং নিজেকে কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবে পরিচয় দেন।
এ ঘটনা একটি বড় বিষয় তুলে ধরেছে। সেটি হলো, জোহরান মামদানির প্রার্থিতা নিয়ে টাইমসের প্রকাশ্য বিরূপ মনোভাব।
মামদানির ওপর টাইমসের এই প্রতিবেদন প্রকাশ সম্পূর্ণ লজ্জাজনক একটি ঘটনাসোলেদাদ ও’ব্রায়েন, সাংবাদিক ও গণমাধ্যম উদ্যোক্তাপত্রিকাটির মতামত বিভাগ দেখলে এ নিয়ে সন্দেহের অবকাশ প্রায় নেই। যদিও টাইমস এখন মেয়র পদে আর আনুষ্ঠানিক সমর্থন ঘোষণা করে না। তবে পত্রিকাটি একটি সম্পাদকীয়তে ভোটারদের আহ্বান জানিয়েছিল, তাঁরা যেন মামদানিকে তাদের বাছাইয়ে একেবারে স্থানই না দেয়। কারণ, মামদানি অত্যন্ত অযোগ্য প্রার্থী।
টাইমসের মতামত বিভাগ তাদের মতপ্রকাশের অধিকার রাখে, যতই তা ভুল পথে পরিচালিত হোক না কেন। কিন্তু সরাসরি সংবাদ প্রতিবেদনে কোনো প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া ঠিক না।
সংবাদ প্রতিবেদন দলনিরপেক্ষ হওয়া উচিত। কোনো প্রার্থীকে উৎসাহ দেওয়া বা কাউকে খোঁড়া করে দেওয়া সংবাদের কাজ নয়।
বাস্তব সংবাদের বেলায় অনেক ক্ষেত্রেই তা একেবারে মানা হয় না।
এই সাজানো কেলেঙ্কারি এবং পূর্ব সম্পাদকীয় মিলিয়ে টাইমস মামদানির বিরুদ্ধে যেন একটি ধর্মযুদ্ধে নেমেছে, এমনই মনে হচ্ছে। আর কোনো আদর্শিক ব্যাখ্যাই এটা ঢেকে রাখতে পারবে না।
আরও পড়ুননিউইয়র্কের কৃষ্ণাঙ্গ ও শ্রমজীবী ভোটারদের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য জোহরান মামদানি০৪ জুলাই ২০২৫