শরীয়তপুরে ২০০ বছরের জোড় মাছের মেলা অনুষ্ঠিত
Published: 15th, January 2025 GMT
প্রতিবারের মতো এবারও শরীয়তপুরে ঐতিহ্যবাহী প্রায় ২০০ বছরের পুরনো জোড় মাছের মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সদর উপজেলার মনোহর বাজারের কালিমন্দির মাঠে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
মেলা উপলক্ষে মধ্যপাড়া, চটাং, চরসোনামুখী, রুদ্রকর, শুবচনীসহ কয়েকটি এলাকার অন্তত হাজারো মানুষের সমাগম ঘটে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, মেলাটির বয়স সকলের অজানা। ধারণা করা হয় অন্তত ২০০ বছরের আগে থেকে মেলাটি অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। পৌষ সংক্রান্তির শেষ ও পহেলা মাঘ উপলক্ষে বসা এই মেলায় আসা ক্রেতারা বাড়ি ফেরেন জোড় ইলিশ মাছ আর বেগুন নিয়ে।
মেলায় ইলিশ মাছের পাশাপাশি বিক্রি হয় নানা প্রজাতির দেশীয় মাছ। এছাড়াও মাঠে বসে অস্থায়ী খাবারের দোকান। বছরজুড়ে এ দিনটির জন্য অপেক্ষায় থাকেন এখানকার স্থানীয় হিন্দুধর্মের মানুষের পাশাপাশি মুসলিমরাও।
মেলাকে ঘিরে ছোটদের আগ্রহও থাকে অনেক বেশি। বড়দের সাথে মেলায় গিয়ে মিষ্টি খাওয়ায় পাশাপাশি রঙবেরঙের বেলুন আর খেলনা হাতে বাঁশিতে ফুঁ দিতে দিতে খুশি মনে বাড়ি ফেরে তারা। মেলাটিকে ঘিরে হিন্দু-মুসলিমের এক মেলবন্ধন ঘটে।
প্রতি বছরের মতো এবারো মেলায় মাছ বিক্রি করছেন স্থানীয় মাছ বিক্রেতা মধ্যপাড়া এলাকার গোপাল দাস। তার বাপ-দাদারাও এই মেলায় মাছ বিক্রি করেছেন। তিনি বলেন, “এই মেলাটি বাপ-দাদারাও দেখেছেন। আমরা একে জোড় মাছের মেলা বলি। এই মেলায় হিন্দু মুসলিম সবাই আসে আর ইলিশ মাছ কিনে নিয়ে যায়।”
স্থানীয় বাসিন্দা বিধান সাহা বলেন, “এই মেলাটি আমাদের সকলের। হিন্দু মুসলিম সবাই আমরা এই মেলা উপলক্ষে একত্রিত হই। সবাই ইলিশ মাছ কিনে বাড়ি ফিরে। ছোটরাও বড়দের সাথে এসে বিভিন্ন রকমের খেলনা কিনে, খাবার খায়। এক কথায় এটি আমাদের একটি উৎসবের মতো অনুষ্ঠিত হয়।”
মেলার আয়োজক কমিটির সদস্য আতিকুর রহমান মোল্লা বলেন, “হিন্দু মুসলমান সম্প্রদায়ের সম্প্রীতির বন্ধনের এই মেলাটি যুগ যুগ ধরে হয়ে আসছে। আগামীতে আরও বড় পরিসরে করার চিন্তা রয়েছে। আমরা ধারাবাহিকভাবে মেলাটি আয়োজন করে থাকব।”
ঢাকা/আকাশ/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এই ম ল বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
‘মানুষ যদি শেখ মুজিবকে সম্মান জানাতে চায়, সেটা তাদের অধিকার’
চব্বিশের ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ঘিরে তৈরি হওয়া মতপার্থক্য এখনো দূর হয়নি। শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আদর্শিক দ্বন্দ্ব আরো গাঢ় হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়াতেও চলছে জোর চর্চা।
এ হাওয়া লেগেছে দেশের শোবিজ অঙ্গনের তারকাদের মাঝেও। এ নিয়ে নিজের জোরোলো অবস্থান জানান দিলেন গণঅভ্যত্থানে অংশ নেওয়া অন্যতম অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন।
রবিবার (১৭ আগস্ট) বাঁধন তার ফেসবুকে দীর্ঘ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তাতে এই অভিনেত্রী বলেন, “মানুষের পছন্দ-অপছন্দ নিয়ন্ত্রণ করার অধিকার আপনাকে কে দিয়েছে? শেখ হাসিনার মতো আচরণ করার চেষ্টা করবেন না। তার কী পরিণতি হয়েছে, তা আপনি দেখেছেন। তার পতনের পর ভেবেছিলাম মানুষ অন্তত একটা শিক্ষা নেবে। কিন্তু না, ঔদ্ধত্য এখনো থামেনি!”
আরো পড়ুন:
‘মুজিব’ সিনেমা থেকে বাদ পড়ে হাউমাউ করে কেঁদেছিলেন বাঁধন
৫ আগস্ট চিরদিনের জন্য আমার স্মৃতিতে খোদাই হয়ে গেছে: বাঁধন
১৫ আগস্ট উপলক্ষে শোবিজ অঙ্গনের অনেক তারকা শ্রদ্ধা জানিয়েছে। এ নিয়েও চর্চা কম হয়নি। ইঙ্গিতপূর্ণভাবে এ বিষয়ে বাঁধন বলেন, “মানুষ কাকে সমর্থন করবে বা করবে না, সেটা ঠিক করার আপনি কে? এটা একান্তই তাদের নিজের ব্যাপার, মানুষকে বাধ্য করা আপনার কাজ না। মানুষের হৃদয় আছে, তারা যদি শেখ মুজিবুর রহমানকে সম্মান জানাতে চায়, সেটা তাদের অধিকার, আপনি সেটা নির্ধারণ করার কেউ নন। শুধু আপনার মতের সঙ্গে মিলছে না বলে, মানুষকে খারাপ বানানোর চেষ্টা বন্ধ করুন।”
টাকার বিনিময়ে শোবিজ অঙ্গনের বেশ কজন তারকা শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। এমন অভিযোগ এনে কে বা কারা ব্যাংক স্টেটমেন্টের একটি কপি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়।
এ বিষয়ে বাঁধন বলেন, “এই ব্যাপারটা নিয়ে হাসি পায়। আপনারা এতটাই সস্তা যে সেটা খুবই লজ্জাজনক। প্রথমে গুজব রটে, আমি জুলাই বিদ্রোহের সময় ছাত্রদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ২০০ কোটি টাকা নিয়েছি। এখন আবার নতুন গুজব উড়ছে, আমরা শেখ মুজিব সম্পর্কে পোস্ট দেওয়ার জন্য মাত্র ২০ হাজার টাকা নিয়েছি! ২০০ কোটি থেকে ২০ হাজার— এটা সত্যি? এই সামান্য টাকার জন্য কেউ কি এমন ঝুঁকি নেয়? এটি একেবারেই সার্কাস।”
খানিকটা পরামর্শ দিয়ে বাঁধন বলেন, “একটি বিষয় ভালো করে বুঝে নেন, এখন আর মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। না মিথ্যা দিয়ে, না সস্তা গুজব দিয়ে, না ফাঁকা হুমকি দিয়ে। সময় বদলেছে। সোশ্যাল মিডিয়া আছে। বিশ্বায়ন হয়েছে। মানুষ এখন এসব নাটক খুব ভালোভাবেই বুঝতে পারেন।”
মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করার অনুশীলন থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বাঁধন বলেন, “সত্যিকারের একজন নেতা মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করে না, তারা অনুপ্রাণিত করেন। সত্যিকারের একজন নেতা কারো কণ্ঠরোধ করেন না—তারা শোনেন। সত্যিকারের একজন নেতা ভিত্তিহীন অপবাদ ছড়ান না—তারা বিশ্বাস গড়ে তোলেন। তাই আপনারা সেই ক্ষমতার ভ্রান্ত ধারনা থেকে বেরিয়ে আসেন। আপনি মানুষকে পুতুলের মতো নাড়াবেন, এই ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসেন। সেই সুতা তো অনেক আগেই ছিঁড়ে গেছে। ইতিহাস যতটা জোরে চড় মেরেছে, তার চেয়ে আরো বেশি জোরে থাপ্পড় মারার আগেই জেগে উঠুন।”
“সত্যিকারের একজন নেতা হোন। সত্যিকারের মানুষ হোন। না হলে আপনি শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনার আরেকটা ব্যর্থ কপি হিসেবেই ইতিহাসে থেকে যাবেন। বিশ্বাস করুন, আরেকটি ট্র্যাজেডি কেউ চায় না।” বলেন বাঁধন।
ঢাকা/শান্ত