আবদুল্লাহপুর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচল করা ২১টি কোম্পানির বাস একক কোম্পানির অধীনে পরিচালনা করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল আলম। তিনি বলেন, আগামী বৃহস্পতিবার একক কোম্পানির অধীনে টিকিট কাউন্টারভিত্তিক বাস পরিচালনা কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হবে। বাসগুলোর রঙ হবে গোলাপি।

রাজধানীর কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউয়ে সংগঠনটির কার্যালয়ে আজ মঙ্গলবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। 

এতে বলা হয়, আবদুল্লাহপুর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন গন্তব্যে প্রায় ২ হাজার ৬১০টি বাস চলাচল করবে। এসব বাসে টিকিট ছাড়া কেউ উঠতে পারবেন না। যত্রতত্র বাসে ওঠানামাও করা যাবে না।

সংবাদ সম্মেলনে সাইফুল আলম বলেন, নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ১৬ বছর ধরে ঢাকা শহরে বাস-মিনিবাস চুক্তিতে যাত্রী পরিবহন করছে। এতে গণপরিবহন চলাচলে অসম প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হয়। যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা করার কারণে সড়কে যানজট ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি এবং দুর্ঘটনা ঘটছে। গত ১৯ ডিসেম্বর সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সভাপতিত্বে সড়ক পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা জোরদারকরণ, ঢাকা মহানগরে যানজট নিরসন এবং বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ–সংক্রান্ত এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাসের মালিকেরা চালকদের সঙ্গে যাত্রাভিত্তিক (ট্রিপ) চুক্তি না করে পাক্ষিক বা মাসিক ভিত্তিতে চুক্তি সম্পাদন করতে বলা হয়েছে। তাই আগামী বৃহস্পতিবার প্রাথমিকভাবে গাজীপুর থেকে ঢাকার বিভিন্ন গন্তব্যে টিকিট কাউন্টার ভিত্তিতে চালকেরা বাস চালাবেন। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় আবদুল্লাহপুর থেকে এই সেবার উদ্বোধন করা হবে।

মালিক সমিতির এই নেতা আরও বলেন, চলতি মাসের মধ্যেই মিরপুর, গাবতলী, মোহাম্মদপুরে চলাচল করা বাসগুলোকে একইভাবে কাউন্টারের মাধ্যমে পরিচালনা করা হবে। এখন থেকে বাস কাউন্টার পদ্ধতিতে চালাতে হবে এবং যাত্রীদের নির্দিষ্ট কাউন্টার থেকে টিকিট সংগ্রহ করে বাসে যাতায়াত করতে হবে। 

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি এম এ বাতেন, কোষাধ্যক্ষ এ এস এম আহম্মেদ খোকন, দপ্তর সম্পাদক কাজী মো.

জোবায়ের মাসুদ প্রমুখ।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

আল্লাহকে নিয়ে বাউলের করা ‘কটূক্তি’র অভিযোগের প্রতিবাদ দ্য রেড জুলাইয়ের

আল্লাহকে নিয়ে ‘বাউলের করা কটূক্তি’র অভিযোগে প্রতিবাদ জানিয়েছে দ্য রেড জুলাই নামের একটি প্ল্যাটফর্ম। একই সঙ্গে মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে কোরআন তেলাওয়াতের আয়োজন করে প্ল্যাটফর্মটি। এরপর সেখানে বক্তব্য দেন প্ল্যাটফর্মটির সাধারণ সম্পাদক মো. সজীব হোসাইন। তিনি বলেন, ‘এই বাউল আল্লাহকে নিয়ে কটূক্তি করেছে, কোনোভাবেই যেন তাঁকে মুক্তি দেওয়া না হয়। যদি মুক্তি দেওয়া হয়, তাহলে সারা দেশের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের নিয়ে আমরা মাঠে নামব।’

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উদ্দেশে মো. সজীব হোসাইন বলেন, ‘আপনারা আপনাদের ভুল স্বীকার করবেন কি না, তা জানান।’ প্রতিবাদী বাউল সন্ধ্যা আয়োজন নিয়ে তিনি বলেন, ‘ছাত্রদলের একজন সেখানে এসে গান গেয়েছেন এবং পক্ষ নিয়েছেন। আমরা তাঁর কাছে জানতে চাই, কোন উদ্দেশ্যে তিনি ওনার পক্ষ নিয়েছেন।’

ছাত্রশিবির ও জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের উদ্দেশে করে মো. সজীব হোসাইন বলেন, ‘আপনারা ধর্মভিত্তিক রাজনীতি করেন। অথচ আল্লাহকে নিয়েই গালি দেওয়া হলো, কিন্তু আপনারা পক্ষেও গেলেন না, বিপক্ষেও গেলেন না। আপনারা যাবেন কোন দিকে?’ তিনি আরও বলেন, ‘যে ব্যক্তি অভিযুক্ত তাদের শাস্তি দিন। অন্যদের ওপর মব করবেন না। একজনের শাস্তি আরেকজনকে দেবেন না।’

পরে দ্য রেড জুলাইয়ের পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি যে মহান আল্লাহর শানে জঘন্য শব্দ ব্যবহার করে ধর্ম অবমাননার সুস্পষ্ট অভিযোগে আবুল সরকার নামক এক বাউলকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গ্রেপ্তারের ঘটনায় এক শ্রেণির লোক পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করছে।’

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা করছি, এটি কেবল ফৌজদারি অপরাধ নয়, বরং বাংলাদেশের কোটি কোটি ধর্মপ্রাণ মুসলিমের হৃদয়ে আঘাত হানার শামিল। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের এই গুরুতর অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ আইনি শাস্তি নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের অপরিহার্য দায়িত্ব। আমরা আরও উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি যে মূল অপরাধকে আড়াল করে “কথিত ধর্ম অবমাননার অভিযোগে গ্রেপ্তার” এমন শিরোনাম ব্যবহার করে মিডিয়ায় পরিকল্পিত বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিষয়টিকে “সংস্কৃতি”, “বাক্‌স্বাধীনতা” বা “শিল্প ও শিল্পীর ওপর আঘাত” হিসেবে দেখানোর অপচেষ্টা চলছে। একই সঙ্গে অভিযুক্ত ব্যক্তি ও তাঁর সমর্থকেরা ‘ভিক্টিম কার্ড’ ব্যবহার করে অপরাধ ঢাকতে এবং জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কিছু প্রভাবশালী মিডিয়া ও গোষ্ঠী এ ধরনের অপপ্রয়াসে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করছে, যা ন্যায়বিচারের পথে বড় বাধা তৈরি করছে। আমরা এই দায়িত্বহীনতা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচারণার তীব্র নিন্দা জানাই।’

এতে আরও বলা হয়, ‘দ্য রেড জুলাই সুস্পষ্টভাবে জানাচ্ছে, আমরা কোনোভাবেই আইন হাতে নেওয়ার প্রবণতাকে সমর্থন করি না। যদি কোথাও বিচ্ছিন্নভাবে এমন কোনো ঘটনা ঘটে থাকে, তা–ও রাষ্ট্রের সুশাসনের ঘাটতির কারণে ঘটেছে। আমাদের অবস্থান হলো, রাষ্ট্রে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার পাশাপাশি অপরাধীর বিরুদ্ধে দ্রুত যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অপরাধীকে রক্ষা করা, তার দোষ লঘু করা কিংবা জনতার ন্যায়সংগত ক্ষোভকে উল্টো দোষারোপ করার চেষ্টা—এসবই ন্যায়বিচার থেকে সরে আসার শামিল।’

এতে বলা হয়, ‘আমরা রাষ্ট্রের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি, সমস্ত বিভ্রান্তি ও ভ্রান্ত প্রচারণার অবসান ঘটিয়ে, কোনো রাজনৈতিক, সামাজিক বা সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর চাপ বিবেচনা না করে মহান আল্লাহর অবমাননাকারীর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী দৃষ্টান্তমূলক, কঠোর ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে অত্যন্ত সংবেদনশীল এই বিষয়কে কেন্দ্র করে সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর যেসব অপপ্রয়াস চলছে, তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ