কুমিল্লায় ৯ লাশ উদ্ধার, জনমনে আতঙ্ক
Published: 4th, February 2025 GMT
কুমিল্লায় বিভিন্ন এলাকা থেকে গত সপ্তাহে ৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একটি শিশু, দুইজন যুবক, পাঁচজন মধ্যবয়স্ক পুরুষ ও একজন বৃদ্ধা রয়েছে। ৯টির মধ্যে ৮টি-ই হত্যাকাণ্ড বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গত সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ২৪ ঘণ্টায় দুই উপজেলা থেকে ৪টি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। চৌদ্দগ্রাম উপজেলার পূর্ব ধনুসারা গ্রামের বসতঘরের টয়লেটের সেপটিক ট্যাংক থেকে সাহেদা আক্তার (৭৫) নামে বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের স্বামী মাওলানা আব্দুল মমিন জানান, তিনি ভোরে মসজিদে ইমামতি করতে গেলে তার স্ত্রীকে হত্যা করা হয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
একই দিন কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার চন্ডিমুড়া পাহাড় থেকে মো.
আরো পড়ুন:
বিদ্যালয়ে ছাত্রীকে জখম
গ্রেপ্তার হয়নি ৬ আসামি, আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা
উঠে যাচ্ছে শেখ হাসিনা সেতুর কার্পেটিং
গত সোমবার (২৮ জানুয়ারি) একই দিনে কুমিল্লার তিন উপজেলায় তিনটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে খাল থেকে অজ্ঞাতনামা পুরুষের ভাসমান লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। একই দিন লাকসাম উপজেলার হোটেল ড্রিমল্যান্ড থেকে প্রগতি ইন্সুরেন্সের কর্মী আলতাফ হোসেনের (৩৭) লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ এখনও নিশ্চিত নয় কীভাবে তিনি সেখানে এলেন বা কীভাবে তার মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। একইদিন মনোহরগঞ্জ উপজেলার বান্দুয়াইন গ্রামের সড়কের পাশে এক নারীর লাশ পাওয়া যায়। তিনি ওই গ্রামের মৃত আয়ুব আলীর স্ত্রী এবং বাড়িতে একাই থাকতেন। তার মৃত্যু কীভাবে হলো বা তিনি এত রাতে কেন বাইরে ছিলেন, তা স্পষ্ট নয়। তদন্তের জন্য লাশ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) কুমিল্লার পাঁচথুবিতে যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে তুলে নিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ অসুস্থ অবস্থায় তাকে হাসপাতালে আনলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরিবারের দাবি, জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে তৌহিদকে হত্যা করা হয়েছে। বিএনপি এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে।
একের পর এক লাশ উদ্ধারের ঘটনায় জনমনে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ রাতে চলাফেরা করতে অনিরাপদ বোধ করছে। বিশেষ করে প্রত্যন্ত ও নির্জন এলাকার বাসিন্দারা নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত। বাজার, রাস্তা এবং সামাজিক জমায়েতে মানুষ কম উপস্থিত হচ্ছে। কেউ কেউ বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
মানবাধিকার সংগঠক ও সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) কুমিল্লার সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর মাসুম বলেন, ‘‘প্রতিনিয়ত গলাকাটা লাশ উদ্ধার হচ্ছে। মানুষের মনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। প্রশাসনের উচিত এটা নিয়ে কাজ করা, কেন প্রতিনিয়ত এসব হত্যাকাণ্ড হচ্ছে।’’ প্রতিটা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার দাবি করেন তিনি।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন), কুমিল্লার সভাপতি শাহ মো. আলমগীর খান বলেন, ‘‘এভাবে হত্যাকাণ্ড ঘটলে মানুষের মধ্যে আতস্ক বিরাজ করবে। এ সব বিষয় প্রশাসনের নজর দেওয়া উচিত। এভাবে একের পর গলাকাটা লাশ ও হত্যাকাণ্ড সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে।’’
সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধা গবেষক শাহজাদা এমরান বলেন, ‘‘প্রশাসনের উচিত এসব বিষয়ে নজর দেওয়া, না হলে জেলার পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে।’’
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরাফাতুল ইসলাম জানান, প্রতিটি হত্যার রহস্য উন্মোচনের চেষ্টা চলছে। বেশ কিছু আসামি ধরা হয়েছে। অপরাধী যেই হোক না কেন তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আতঙ ক তদন ত র উপজ ল র র জন য ঘটন র
এছাড়াও পড়ুন:
বিহারে যা করেছেন, বাংলায় হবে না: বিজেপির প্রতি মমতার হুঁশিয়ারি
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, তাঁর রাজ্যে এনআরসি হবে না। ডিটেনশন ক্যাম্পও হবে না। মমতা বলেন, ‘মনে রাখবেন, আমি ভোট চাইতে আসিনি। নিশ্চিন্তে থাকুন, কাউকে তাড়াতে দেবো না।’
এ সময় বিজেপির প্রতি মমতা হুঁশিয়ারি দেন, ‘বিহারে যা করেছেন, বাংলায় হবে না’। বৃহস্পতিবার নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে এক সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসব কথা বলেন।
সভায় দেওয়া বক্তব্যে নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে মমতা বলেন, ‘ইলেকশন এখনও ডিক্লেয়ার হয়নি। তুমি ডিএমদের ভয় দেখাচ্ছো কেন? মানুষকে বন্ডেড লেবার বানাতে চাইছো। আমরা তো বলেছিলাম, সময় নিয়ে এসআইআর করো, তাড়াহুড়ো কেন? হোয়াই সো হাঙ্গরি? ভোটের জন্য?’
বিজেপির প্রতি তোপ দেগে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিজেপির আইটি সেল ভোটার লিস্ট তৈরি করে দেবে। সেই লিস্ট ধরে ভোট করবেন? এটাই ইচ্ছা তো। বিহারে যা করেছেন, বাংলায় হবে না। এজেন্সি দিয়েও নয়।’
আরও পড়ুনভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো হচ্ছে: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়০৯ ডিসেম্বর ২০২৫সম্প্রতি ব্রিগেডে গীতাপাঠের সভাস্থলে মাংসযুক্ত প্যাটিস বিক্রি করার অভিযোগে বিক্রেতাদের হেনস্থা ও মারধর করার ঘটনার প্রতিবাদ জানান মমতা। তিনি বলেন, ‘প্যাটিস বিক্রেতাদের মারধর করা হয়েছে। কাল সবকটাকে গ্রেপ্তার করেছি। এটা বাংলা, উত্তরপ্রদেশ নয়।’
‘লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ’ কর্মসূচিকে বিঁধে মমতা আরও বলেন, ‘গীতাপাঠ আমরা সবাই করি। তার জন্য পাবলিক মিটিং করার কী আছে?’ তাঁর মতে, ধর্মাচারণ ব্যক্তিগত, তা রাজনৈতিক প্রদর্শনের বিষয় হওয়া উচিত নয়।’
আসন্ন নির্বাচনের আগে রাজ্যে সড়ক পরিকাঠামো উন্নয়নের লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার কৃষ্ণনগর থেকে ‘পথশ্রী’ ও ‘রাস্তাশ্রী’ প্রকল্পের চতুর্থ পর্বে প্রায় ২০ হাজার কিলোমিটার সড়কের কাজের সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুনপশ্চিমবঙ্গে এসআইআর–আতঙ্কে ২৮ জনের মৃত্যু, দাবি মমতার১৯ নভেম্বর ২০২৫