যশোরে মশাল মিছিলের দু’দিন পর আটক উদীচীর দু’কর্মী, ছাড়া পেলেন একজন
Published: 5th, July 2025 GMT
যশোরে মশাল মিছিল ও সমাবেশের দু’দিন পর শুক্রবার মধ্যরাতে নিজবাসা থেকে দুই সাংস্কৃতিক কর্মীকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় সাংস্কৃতিক কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে কর্মসূচি দিলে শনিবার বিকেলে পুলিশ একজনকে ছেড়ে দেয়।
আটকরা হলেন- উদীচী যশোরের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য রিয়াদুর রহমান ও সাধারণ সদস্য আব্দুর রহমান মৃধা। তাদের মধ্যে শনিবার রিয়াদুর রহমান ছাড়া পেয়েছেন। আর আব্দুর রহমান মৃধাকে বিএনপি দলীয় কার্যালয় পোড়ানো মামলায় আটক দেখিয়ে আদালতে হাজির করলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এদিকে দুই সাংস্কৃতিক কর্মীকে হেনস্তা ও আটকের ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে সাংস্কৃতিক কর্মীদের মধ্যে।
সাংস্কৃতিক কর্মীরা জানান, গত ২ জুলাই সন্ধ্যায় যশোরে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় সম্পদ রক্ষা আন্দোলন কমিটির উদ্যোগে প্রতিবাদী সমাবেশ ও মশাল মিছিল হয়। বিভিন্ন স্থানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধের প্রতিবাদ, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা, বিদেশি কোম্পানিকে বন্দর ইজারা না দেওয়া, ‘মব সন্ত্রাস’ বন্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে বামদলের নেতাকর্মী, সাংস্কৃতিক কর্মী, মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। এই কর্মসূচির অগ্রভাগে ছিলেন উদীচী যশোরের কর্মী রিয়াদুর রহমান। আর এ কর্মসূচিতে যোগদান না করলেও উদীচীর সক্রিয়কর্মী আব্দুর রহমান মৃধা।
সাংস্কৃতিক কর্মীদের অভিযোগ, ওই কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার অপরাধে তাদের আটক করে পুলিশ। আটকের পর যশোরের সাংস্কৃতিক কর্মীরা প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনের কর্মসূচি দেন। এমন পরিস্থিতিতে শনিবার বিকেলে রিয়াদুর রহমানকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আবুল হাসনাত বলেন, আব্দুর রহমান ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট জেলা বিএনপি কার্যালয়ে হামলায় জড়িত। তাকে ওই মামলায় আদালতে চালান করা হয়েছে। অন্যদিকে, রিয়াদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরিবারের জিম্মায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
উদীচী যশোর সংসদের সভাপতি অ্যাডভোকেট আমিনুর রহমান হিরু বলেন, ‘আমাদের দুই কর্মীকে হেনস্তা ও আটকের প্রতিবাদে নিন্দা জানাচ্ছি। তাদের যে কারণে আটক দেখানো হয়েছিলো; সে ঘটনার সঙ্গে তারা জড়িত নন। একজনকে ছেড়ে দিলেও আরেকজনকে এখনও ছাড়া হয়নি। আমরা আইনিভাবেই লড়ব।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: যশ র আটক র য় দ র রহম ন স ক ত ক কর ম
এছাড়াও পড়ুন:
চিকিৎসায় আর্থিক সহায়তা নয়, সবার কাছে দোয়া চাইলেন ফরিদা পারভীনের ছেলে
বাংলা লোকসংগীতের প্রবাদপ্রতিম শিল্পী, লালনসাধনার অঙ্গনে এক উজ্জ্বল তারকা ফরিদা পারভীন আজ অসুস্থ। তাঁর এই অসুস্থতা যেন কেবল একজন শিল্পীর শরীরের দুর্বলতা নয়-এ যেন বাংলা গানের এক প্রিয় কণ্ঠের স্তব্ধ হয়ে যাওয়া। কিন্তু তবুও, এই দুঃসময়ে আর্থিক সহায়তার কথা উচ্চারণ করেননি তিনি। বরং হাত জোড় করে চেয়েছেন-সবাই যেন তার জন্য দোয়া করে।
যদিও ইতোমধ্যে ফরিদা পারভীনের অনেক শুভাকাঙ্খীই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে জানিয়ে আসছিলেন, আর্থিক সঙ্কটের কারণে ফরিদা পারভীনের চিকিৎসা হচ্ছিল না। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়ে। তবে বিষয়টি একেবারেই অস্বাীকার করেছেন শিল্পীর ছেলে ইমাম জাফর। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভ্রান্তিকর তথ্যকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, আমরা আমাদের মায়ের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে সক্ষম। প্রয়োজন হলে তার নিজস্ব সঞ্চয় দিয়েই চিকিৎসা সম্ভব। তাই কেউ যেন ভেবে না বসেন, মা আর্থিক সংকটে আছেন।’
একজন শিল্পী, যিনি সারাজীবন আমাদের হৃদয়ে গেয়েছেন আত্মার গান, মানবতার গান, আজ তার পাশে দাঁড়ানোর সময়। আর তিনি চেয়েছেন শুধু একটি জিনিস-প্রার্থনা।
ইমাম জানান, ‘আম্মার কিডনির সমস্যাটা ২০১৯ সাল থেকেই চলছে। এখন ডায়ালাইসিস শুরুর পর শরীর আরও দুর্বল হয়ে গেছে। আমাদের সবাই—আমি, আমার ভাইবোন, তাদের জীবনসঙ্গীরা-নিজ হাতে আম্মার সেবা করছি। এই সময়ে সরকার থেকেও জানতে চাওয়া হয়েছে, কোনো সহায়তা দরকার কি না। কিন্তু মা স্পষ্ট জানিয়েছেন, তিনি তা নিতে চান না।’
এই প্রজ্ঞাময় শিল্পীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা রেখে ইমাম জাফর সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন-গুজব নয়, দোয়া ছড়ান।
তিনি আরও বলেন, ‘আমার মা যেন আবার গানে ফিরতে পারেন, আবার মঞ্চে দাঁড়িয়ে গেয়ে ওঠেন-এই প্রার্থনা করি। আপনারাও তার জন্য দোয়া করবেন।’
বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গনে ফরিদা পারভীনের অবদান অনস্বীকার্য। নজরুলসংগীত ও দেশাত্মবোধক গান দিয়ে শুরু করে সাধক মোকসেদ আলী শাহের কাছে তালিম নেওয়া লালনের গান দিয়ে যিনি পৌঁছে গেছেন বাংলার হৃদয়ে। আজ সেই শিল্পীর জন্যই আমাদের প্রার্থনা দরকার।