দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়িয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। এরই অংশ হিসেবে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ চাষে উৎপাদন বাড়াতে কৃষকদের মাঝে ৫০ টন উন্নতমানের পেঁয়াজ বীজ বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে। সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে ডিএপি ও এমওপি সারও।

এবার আগেভাগেই কৃষকের হাতে বীজ তুলে দেওয়ায় চাষাবাদে বিলম্ব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, তিনটি বীজ আমদানিকারক কোম্পানির মাধ্যমে আনা এসব বীজ ইতিমধ্যে দেশের ৩৭টি উপজেলায় বিতরণ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ১৩টি উপজেলাতেও দ্রুত সময়ের মধ্যে বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে। সব বীজ দেশে পৌঁছেছে এবং কাস্টমস ছাড়পত্র পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তা সরাসরি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কৃষকদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে।

প্রতিবছর নিত্যপণ্যের বাজারে পেঁয়াজ নিয়ে ওঠে বেশ আলোচনা। দামবৃদ্ধি ও প্রণোদনার পেঁয়াজের বীজে অনিয়মের অভিযোগ থাকে প্রায়ই। গত বছরও প্রণোদনার পেঁয়াজে চারা না গজানোর ঘটনা ঘটেছিল। তবে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড.

মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ানের তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা উন্নত বীজ কৃষকদের সরবরাহ করা হয়, যা বাম্পার ফলনের মাধ্যমে বাজার স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করেছে।

চলতি বছরও সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে গ্রীষ্মকালীন চাষে প্রস্তুতি আরও জোরদার করা হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ছাইফুল আলম বলেন, পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে কৃষি মন্ত্রণালয় একাধিক উদ্যোগ নিয়েছি। এর মধ্যে রয়েছে—বীজ সরবরাহ বাড়ানো, চাষের জমির পরিমাণ বৃদ্ধি, হিমাগার নির্মাণ, বাজার ব্যবস্থাপনায় উন্নয়ন এবং গ্রীষ্মকালীন উৎপাদনে গবেষণা জোরদার করা। কৃষক এবার সঠিক সময়ে পেঁয়াজের বীজ হাতে পেয়েছেন। এতে বীজ নিয়ে হাহাকার কিংবা কোনো অনিয়মের আশঙ্কা নেই। উৎপাদিত পেয়াজ সঠিকভাবে সংরক্ষণে সারাদেশে চার হাজার এয়ার-ফ্লো মেশিন বসানো হচ্ছে।

প্রোগ্রাম অন অ্যাগ্রিকালচারাল অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন অন্ট্রাপ্রেনারশিপ রেসিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশের (পার্টনার) প্রকল্পের কর্মসূচি সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, আগামী ১৫ জুলাই থেকে পেঁয়াজের বীজতলা তৈরি শুরু হবে এবং সেপ্টেম্বর নাগাদ ফসল সংগ্রহ করা যাবে।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. হাফিজুল হক খান জানান, গ্রীষ্মকালীন চাষ বাড়াতে পারলে দেশে পেঁয়াজের চাহিদার বড় একটি অংশ জোগান দেওয়া সম্ভব। তখন বাজারে দামও তুলনামূলক বেশি থাকে, ফলে কৃষক লাভবান হবেন। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উৎপ দ

এছাড়াও পড়ুন:

৩৮ মিলিয়ন ডলার কিনল বাংলাদেশ ব্যাংক

দেশের ব্যাংকগুলোতে ডলার সরবরাহ বেড়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাজার স্থিতিশীল রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৬টি ব্যাংক থেকে নিলামে ৩৮ মিলিয়ন ডলার কিনেছে।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য জানিয়েছেন।

আরো পড়ুন:

সিএমএসএমই ঋণ সহজ করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা

ব্যাংকের কার্ড থেকে নগদ, বিকাশে টাকা পাঠানোর নতুন সুবিধা

তিনি জানান, বাজারে বর্তমানে ডলারের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি। এ কারণে রিজার্ভ থেকে বিক্রি না করে বাজার থেকেই ডলার কিনছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ভবিষ্যতেও এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ব্যাংকগুলো থেকে মাল্টিপল অকশন পদ্ধতিতে ৩৮ মিলিয়ন ডলার কেনা হয়েছে। নিলামের বিনিময় হার ছিল ১২১ টাকা ৮০ পয়সা পর্যন্ত। আর এই প্রাইসেই ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক নিলামে ডলার কেনার ফলে বাজারে তারল্য বাড়ছে, আর রিজার্ভে যোগ হচ্ছে নিলামে কেনা ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০২৫-২৬ অর্থবছরে মোট দুই হাজার ১২৬ মিলিয়ন ডলার ক্রয় করেছে। এসব ডলার দেশের ব্যাংকগুলো থেকে মাল্টিপল অকশন পদ্ধতিতে কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৯ দফায় ডলার কিনেছিল। এর মধ্যে গত ৬ অক্টোবর ৮টি ব্যাংক থেকে নিলামে ১৪০ মিলিয়ন ডলার কিনেছে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর ২৬টি ব্যাংক থেকে নিলামে ৩৫৩ মিলিয়ন ডলার কিনেছে। গত ৪ সেপ্টেম্বর ১২১ টাকা ৭৫ পয়সা দরে ১৩৪ মিলিয়ন ডলার কিনেছে,  ২ সেপ্টেম্বর একই দরে বাংলাদেশ ব্যাংক ৮ ব্যাংক থেকে ৪৭.৫০ মিলিয়ন ডলার কিনেছে, ১৩ জুলাই ১৮টি ব্যাংকের কাছ থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সা দরে,  একই দরে গত ১৫ জুলাই ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া গত ২৩ জুলাই ডলার কিনেছে ১২১ টাকা ৯৫ পয়সা দরে। গত ৭ আগস্ট ১২১ টাকা ৩৫  পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সায় এবং  গত ১০ আগস্ট ১১টি ব্যাংকের কাছ থেকে ১২১ টাকা ৪৭ পয়সা থেকে ১২১ টাকা ৫০ পয়সায় ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, দেশে প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) ও রপ্তানি আয়ের প্রবাহ বাড়ায় ডলারের বাজারে স্থিতিশীলতা এসেছে। দেশের ব্যাংকগুলোতে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে, চাহিদা কমেছে। এ কারণে ডলারের দাম কিছুটা কমে গেছে। আর ডলারের দাম আরও কমে গেলে রপ্তানিকারকরা একদিকে সমস্যায় পড়বে অপরদিকে রেমিট্যান্স আয় বৈধ পথে আসা কমে যাবে। এমন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। যা খুবই যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত। তাতে ডলারের বাজার স্থিতিশীল থাকবে ও চাহিদার ভারসাম্য রক্ষা করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তারা।

গত ১৫ মে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর সঙ্গে আলোচনার পর ডলারের বিনিময় মূল্য নির্ধারণে নতুন পদ্ধতি চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তখন থেকে ব্যাংক ও গ্রাহক নিজেরাই ডলারের দর নির্ধারণ করছে।

ঢাকা/নাজমুল/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইসরায়েলকে আবার যুদ্ধ শুরুর অনুমতি দেওয়া হতে পারে: ট্রাম্প
  • ত্বক সতেজ রাখতে এই ফল খান
  • রাকিবের রঙিন মাছের খামার, মাসে আয় ৪৫ হাজার টাকা
  • যুদ্ধবিরতির পরও শান্তি ফিরছে না গাজায়
  • বিশ্ব অর্থনীতিতে ট্রাম্পের শুল্কের প্রভাব এখনো তেমন একটা পড়েনি: আইএমএফ
  • এক ছাতার নিচে ৪৮ ব্র্যান্ডের ফার্নিচার, ৫-১৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড়
  • ৩৮ মিলিয়ন ডলার কিনল বাংলাদেশ ব্যাংক
  • নবম-দশম শ্রেণির সাড়ে পাঁচ কোটি পাঠ্যবই ছাপাবে সরকার
  • কুষ্টিয়ায় দুই দিনে ১৪ কোটি টাকার কারেন্ট জাল জব্দ
  • পুতিন যুদ্ধ না থামালে ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দেবেন ট্রাম্প