বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, “টিসিবি ৬৩ লাখ পরিবারকে ভর্তুকিমূল্যে পণ্য সরবরাহ করে থাকে। স্মার্ট কার্ড রূপান্তরের কাজে খুলনা অঞ্চলের সাফল্যের হার সবচেয়ে বেশি। এ মাসের ২৪ তারিখের মধ্যে বাকি কার্ড এক্টিভেশন সম্পন্ন হবে, এর মাধ্যমে সুবিধাভোগীর সংখ্যাও বাড়বে। এই সংখ্যাকে আরো বাড়াতে অতিরিক্ত ১২ লাখ পরিবারের জন্য রমজান মাসের শেষ দিন পর্যন্ত ট্রাকসেল কার্যক্রম চালু থাকবে।”

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে খুলনার শিববাড়ী মোড়ে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে টিসিবির পণ্য বিক্রয় কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। 

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা ড.

মুহাম্মদ ইউনূসের নির্দেশনায় সকল বিভাগীয় সদর ও পাঁচটি দারিদ্র্যপীড়িত এলাকাসহ মোট ১৩টি এলাকার ১২ লাখ পরিবারের মাঝে ট্রাকসেলের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু করেছি। এর বিনিময়ে বাজারে পণ্যমূল্য আরো সহনশীল হবে। অতিরিক্ত নয় হাজার মেট্রিকটন পণ্য ট্রাকে সেল করা হবে। এই কার্যক্রমের মাধ্যমে বাজার নিম্নগামী হবে, বাজার সহনশীল হবে। প্রান্তিক মানুষের জীবনে স্বস্তি আসবে।” 

তিনি আরো বলেন, “আমরা এমন দিনের স্বপ্ন দেখি যেদিন টিসিবির কার্যক্রম আর চালাতে হবে না। সম্পদের সুষম বণ্টনের মাধ্যমে আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে চাই। সেটা হয়তো একটু দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা। তার পরও আমরা সেটা অর্জন করতে চাই।”

খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ ফয়সল আজাদ, খুলনার পুলিশ সুপার টি এম মোশাররফ হোসেন এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (মানব সম্পদ) নূরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ। 

উল্লেখ্য, কার্ডধারী যে কোনো ভোক্তা লাইনে দাঁড়িয়ে ট্রাক থেকে পণ্য কিনতে পারবেন। একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ দুই লিটার সয়াবিন তেল, দুই কেজি করে মসুর ডাল ও ছোলা, এক কেজি চিনি এবং ৫০০ গ্রাম খেজুর কিনতে পারবেন। 

এর মধ্যে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের দাম রাখা হবে ১০০ টাকা। প্রতি কেজি চিনি ৭০ টাকা, মসুর ডাল ও ছোলা ৬০ টাকা এবং খেজুর ও চিনি ১৫৬ টাকা দরে বিক্রি করবে টিসিবি।

ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল খ পর ব র উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

জলবায়ু সহনশীল কৃষিতে নতুন দিগন্ত: কিনোয়া ও চিয়া সিড চাষে কৃষকের সাফল্য উদযাপন

বাংলাদেশের কৃষি খাতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনার সাক্ষী গত ২৯ জুন। আমাল ফাউন্ডেশন ও ইউএনডিপির যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত LoGIC প্রকল্পের অধীনে, ‘কৃষকের সক্ষমতা উন্নয়ন ও মার্কেট লিংকেজ’ প্রকল্পের বাস্তবায়ন উপলক্ষে এক বিশেষ আয়োজন অনুষ্ঠিত হয় শের-এ- বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চলা এ আয়োজনে দেশের কৃষি খাতে জলবায়ু সহনশীলতা ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের একটি নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়।

গত এক বছরে কুড়িগ্রাম ও বাগেরহাট অঞ্চলের কৃষকদের নিয়ে এই প্রকল্পে প্রশিক্ষণ, পরিকল্পিত চাষাবাদ, উন্নত পরবর্তী সংগ্রহ ব্যবস্থাপনা ও বীজ সংরক্ষণ প্রক্রিয়া চালু করা হয়। এর মাধ্যমে কিনোয়া ও চিয়া সিড—এই দুটি উচ্চমূল্যের ও জলবায়ু সহনশীল ‘সুপার-ক্রপ্স’ উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য সাফল্য এসেছে। কেবল কুড়িগ্রামেই প্রায় ২৮৬০ কেজি কিনোয়া এবং ১৭৬০ কেজি চিয়া সিড উৎপাদন হয়েছে, যার মাধ্যমে কৃষকেরা ৮.৫ লাখ টাকারও বেশি আয় করেছেন।

অনুষ্ঠানে ‘সোয়িং সাস্টেইনেবল ফিউচার উইথ সুপার-ক্রপ্‌স’ শীর্ষক মূল থিমের ওপর ভিত্তি করে দুইটি প্যানেলে আলোচনা হয়, যেখানে অংশগ্রহণ করেন সরকারি প্রতিনিধি, নীতিনির্ধারক, বেসরকারি খাতের নেতৃবৃন্দ ও কৃষি বিশেষজ্ঞরা। প্রথম প্যানেলে আলোচনা হয় ‘কৃষক ও বাজারের মধ্যে সংযোগ শক্তিশালীকরণ: মূল্য শৃঙ্খলা ও বিপণন ব্যবস্থার উন্নয়ন’ নিয়ে। কৃষকদের বাজারে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করতে বেসরকারি খাতের সঙ্গে পার্টনারশিপ, ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করা হয়।

দ্বিতীয় প্যানেলে ‘উদ্ভাবন থেকে বাস্তব প্রভাব: জলবায়ু সহনশীল কৃষি-বাজার মডেলের সম্প্রসারণ ও স্থায়িত্ব’ শীর্ষক আলোচনায় কৃষি নীতিমালা, বিনিয়োগ সম্ভাবনা ও প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তার মাধ্যমে প্রকল্পটি কীভাবে জাতীয় পর্যায়ে সম্প্রসারণ করা যায় তা নিয়ে বিশদ আলোচনা করা হয়।

অনুষ্ঠানটির চেয়ারপার্সন হিসেবে শুভ সূচনা করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের  যুগ্ম সচিব মো. ফজলে আজিম এবং LoGIC প্রকল্পের জাতীয় প্রকল্প পরিচালক। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল লতিফ। এছাড়া বক্তব্য রাখেন ইউএনডিপি ও লজিক প্রজেক্টের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর এ কে এম আজাদ রহমান, শের-এ-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এর প্রতিনিধি, আমাল ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক সারাহ জাবীন কৃষ্টি এবং বেনেফিশিয়ারি কৃষকেরা, যারা নিজেদের বাস্তব অভিজ্ঞতা ও সাফল্য তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠান শেষে প্রশ্নোত্তর পর্ব ও সার্বিক অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে আয়োজন শেষ হয়। এই উদ্যোগের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে, সঠিক প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তিগত সহায়তা ও বাজার সংযোগের মাধ্যমে জলবায়ু সহনশীল কৃষি ব্যবস্থাকে টেকসই ও লাভজনক করা সম্ভব। আমাল ফাউন্ডেশন ও ইউএনডিপির এই যৌথ উদ্যোগ ভবিষ্যতের জন্য একটি কার্যকর ও অনুকরণীয় মডেল হয়ে থাকবে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জলবায়ু সহনশীল কৃষিতে নতুন দিগন্ত: কিনোয়া ও চিয়া সিড চাষে কৃষকের সাফল্য উদযাপন