বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি বাদ দিয়ে নতুন ডিজাইনের নোট বাজারে আসতে পারে আগামী মে মাসে। এরই মধ্যে সব নোটের ডিজাইন ঠিক করে কালি ও কাগজ কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সাধারণভাবে সব প্রক্রিয়া শেষ করে নতুন নোট বাজারে আসতে ১৮ মাস সময় লাগে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি বাদ দিয়ে দ্রুততম সময়ে নতুন ডিজাইনের নোট বাজারে ছাড়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে বর্তমান সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা জানান, টাকা ছাপানো একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া। এ জন্য কালি, কাগজ আগেই কিনে রাখা হয়। নিলাম প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেশের বাইরে থেকে যা আনা হয়। এরই মধ্যে ডিজাইন চূড়ান্ত হওয়ায় পরবর্তী ধাপ শেষ করে আগামী মে পর্যন্ত লাগতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান সমকালকে বলেন, এবার ঈদের আগে বিশেষ কাউন্টার থেকে আগের ডিজাইনের ৫, ২০ ও ৫০ টাকা বাজারে ছাড়া হবে। আগামী এপ্রিলের শেষ কিংবা মে মাসের শুরুর দিকে নতুন ডিজাইনের নোট পাওয়া যাবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, একটি নোটের ডিজাইন ঠিক করার পর প্রিন্টিংয়ের জন্য প্লেট তৈরি হয়। নিলাম প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাগজ, কালি আমদানি করা হয়। এ ক্ষেত্রে কাগজে জলছাপের ছবি কী হবে তা ঠিক করে দিতে হয়। সেই অনুযায়ী কাগজ প্রস্তুত করে পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে দেওয়া হয়। সব ঠিক থাকলে চূড়ান্ত থাকা বিষয়টি জানালে চাহিদামতো ছাপানো শুরু করে। বর্তমানে ইউরোপের কয়েকটি দেশ এবং ইন্দোনেশিয়া থেকে বেশির ভাগ কাগজ আসে। কাগজ, কালি পাওয়ার পর পুরো প্লেট ধরে নোট ছাপা হয়। বিশেষ প্রক্রিয়ায় তা শুকানো হয়। এর পর কাটিং করে প্রতিটি নোট পরীক্ষা করে বাজারে দেওয়া হয়। এভাবে একটি নোট ছাপানো শুরুর দিন থেকে বাজারে আসতে অন্তত ২৭-২৮ দিন লাগে। এসব প্রক্রিয়া শেষ করে আগামী এপ্রিলের শেষ দিকে অথবা মে মাসের প্রথম দিকে নতুন ডিজাইনের নোট বাজারে ছাড়া হবে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

’৭১-কে ’২৪-এর মুখোমুখি না দাঁড় করানোর আহ্বান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের

’৭১ ও ’২৪— বাংলাদেশের ইতিহাসে দুটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। কিন্তু এ দুটি ঘটনাকে পরস্পরের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করিয়ে বিভাজনের রাজনীতি চালানোর অপচেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি এ ধরনের অপচেষ্টার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বলেছে, ’৭১ ও ’২৪ কখনোই একে অপরের পরিপন্থী নয়। বরং ১৯৪৭ সালে ভূখণ্ড অর্জন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা এবং ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দীর্ঘ ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তি— এই তিনটি অধ্যায় একই ধারাবাহিক মুক্তিসংগ্রামের অংশ।

সংগঠনটি বলেছে, ‘মুজিববাদী সংবিধানের ফলে সৃষ্টি ফ্যাসিবাদের কবর রচিত হয়েছে ২০২৪-এর অভ্যুত্থানে। তাই ’৭১ ও ’২৪— উভয়ই আমাদের গৌরবের অংশ। এই সংগ্রামগুলোর প্রত্যেকটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শ্রদ্ধাভরে স্বীকার করে ও সমভাবে সম্মান করে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মনে করে, ’৭১ ও ’২৪-কে মুখোমুখি দাঁড় করানোর প্রয়াস আসলে ‘শাপলা ও শাহবাগের বাইনারি’ ফিরিয়ে আনার অপচেষ্টা, যার মাধ্যমে আবারও আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক করে তোলার সুযোগ সৃষ্টি হয়। অথচ ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান ছিল মুজিববাদী শাসনব্যবস্থা ও বাহাত্তরের ত্রুটিপূর্ণ সংবিধানের ভিত্তিতে গঠিত দুর্বল রাষ্ট্র কাঠামোর বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভ।

হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে সংগঠনটি বলেছে, ‘এ ধরনের অপরাজনীতি ছাত্র-জনতা কখনই মেনে নেবে না। আমরা জাতীয় স্বার্থ ও জনকল্যাণের পক্ষে রাজনীতির আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায়, কেউ যদি আওয়ামী লীগকে প্রাসঙ্গিক করার লক্ষ্যে এমন অপচেষ্টা চালায়, তাহলে ছাত্র-জনতার সঙ্গে নিয়ে তার বিরুদ্ধে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।’

আরও পড়ুনবাম সংগঠনগুলোর ঘৃণা মিছিল, ছাত্রশিবিরের সংবাদ সম্মেলন১ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ