Samakal:
2025-05-01@00:02:34 GMT

‘দেখা হবে, কথা হবে, গান তো হবেই’

Published: 20th, April 2025 GMT

‘দেখা হবে, কথা হবে, গান তো হবেই’

যিনি সত্যিকারের শিল্পী, অসুস্থতা তাকে কখনও দমিয়ে রাখতে পারে না। তারই নজির মিলছে আবারও। অসুস্থতার বিরতি কাটিয়ে খানিক সুস্থ হতেই কানাডা সফরে যাচ্ছেন কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমীন।

কানাডার টরন্টোতে অষ্টম বাংলাদেশ ফেস্টিভ্যালের কনসার্টে প্রবাসীদের গান শোনাবেন দেশের বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন। টরন্টো প্যাভিলিয়নে আগামী ১৭ মে অনুষ্ঠিত হবে এ কনসার্ট। ওই আয়োজনে সাবিনাকে দেওয়া হবে বিশেষ সম্মাননা।

ফেস্টিভ্যাল নিয়ে এক ভিডিও বার্তায় সাবিনা ইয়াসমিন দর্শকদের আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেছেন, ‘১৭ মে আপনারা সবাই আসবেন, দেখা হবে, কথা হবে, গান তো হবেই। অপেক্ষায় রইলাম আপনাদের সঙ্গে দেখা হওয়ার।’

আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, টরন্টোতে সাবিনা ইয়াসমিন গাইবেন দ্বিতীয়বারের মতো। এর আগে ২০১৭ সালে তিনি সেখানে কনসার্ট করেছিলেন। কনসার্টের দুদিন আগে কানাডায় পৌঁছাবেন তিনি।  উৎসবে টরন্টোর মেয়র উপস্থিত থাকবেন। আয়োজনে বাংলাদেশি বিভিন্ন পণ্যের স্টলও স্থান পাবে। 

গত বছর দীর্ঘ সময় গায়িকা বিদেশে থেকেছেন চিকিৎসার জন্য। কারণ তাঁর শরীরে ক্যান্সার ফিরে এসেছিল। চিকিৎসা আর রেডিওথেরাপি শেষে সুস্থ হয়ে আবার গানে ফেরার ঘোষণা দিয়েছিলেন চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে।

সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৩১ জানুয়ারির সন্ধ্যায় বনানীর একটি হোটেলে ‘আমাদের সাবিনা ইয়াসমিন : আমি আছি থাকব’ অনুষ্ঠানে গাইছিলেন এ শিল্পী। গান গাইতে গাইতে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। সেখান থেকে হাসপাতালে নেওয়া হয় তাঁকে। তবে সুস্থ হওয়ার পর ঢাকায় আর কোনো অনুষ্ঠান গান করেননি তিনি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কনস র ট টরন ট

এছাড়াও পড়ুন:

আজও আছে পরতে পরতে সৌন্দর্য

কারুকার্যখচিত বিশাল ভবন। দেয়ালের পরতে পরতে মনোহর সৌন্দর্য। মনোরম পরিবেশে ভবনের চারপাশে দাঁড়িয়ে সুন্দরী পরীর আবক্ষ মূর্তি। ছবির মতো সাজানো ‘পাকুটিয়া জমিদারবাড়ি’ এখন কালের সাক্ষী।

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থেকে ১২ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে টাঙ্গাইলের নাগরপুরের কলমাই নদীতীরে ১৫ একর জমিতে জমিদারবাড়িটি। ঢুকতেই চোখে পড়ে পুরোনো মন্দির। লোকমুখে প্রচলিত, শরতের দিনে দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরিতে এখানে ব্যস্ত থাকতেন ভারতবর্ষের নামকরা কারিগররা। কালের বিবর্তনে স্থানটি এখন নির্জন। নেই আগের গৌরব-আভিজাত্যের ছাপ, এমনকি প্রতিমা তৈরির ব্যস্ততাও।

মন্দির ঘুরে দেখা যায়, এর কোথাও কোথাও ইট খসে পড়েছে। পুরোনো দিনের নকশা হারাচ্ছে তার সৌন্দর্য। মন্দিরের পেছনে বিশাল তিনটি মহল, যা সেকালে তিন তরফ নামে পরিচিত ছিল। মহলগুলোর আলাদা কোনো নাম পাওয়া যায়নি। সবচেয়ে বড় মহলে বর্তমান পাকুটিয়া বিসিআরজি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ পরিচালিত হচ্ছে।

দোতলা ভবনের নির্মাণশৈলী মুগ্ধ করবে সবাইকে। যদিও সংস্কারের অভাবে ভবনটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে। পাশেই অপূর্ব লতাপাতার কারুকার্যখচিত বিশাল আরেকটি ভবন, যার মাথায় ময়ূরের মূর্তি। এ ছাড়া কিছু নারী মূর্তিরও দেখা মেলে। জমিদার আমলের টিনের চৌচালা ঘরে অস্থায়ীভাবে সরকারি তহশিল অফিস স্থানান্তর হলেও, সেটি এখন স্থায়িত্ব পেয়েছে।

লতাপতায় আচ্ছন্ন ভবনের একাংশ বর্তমানে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং আরেকাংশে একটি বেসরকারি দাতব্য সেবা সংস্থা কার্যক্রম চালাচ্ছে। ভবনটির পিলারের মাথায় এবং দেয়ালেও অসাধারণ নকশা মুগ্ধ করে।

দোতল আরেকটি মহল, যার সামনে বিশাল শান বাঁধানো সিঁড়ি। অন্য সব ভবনের সঙ্গে এটির নকশার যথেষ্ট মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ভবনটির বারান্দা ও পুরোনো কাঠের দরজা সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলেছে কয়েক গুণ। ভবনটির মাথায় ময়ূরের সঙ্গে দুই পাশে দুই নারী মূর্তির দেখা মেলে। সিঁড়ি বেয়ে ছাদে গেলে গাছগাছালির সবুজে ঘেরা পুরো জমিদারবাড়ির সৌন্দর্য বিমোহিত করতে বাধ্য। যদিও ভবনের ভিন্ন অংশ খসে পড়ছে, হারাচ্ছে রূপ-লাবণ্য।

জমিদারবাড়ির পেছনে রয়েছে দীঘি ও দুটি পরিত্যক্ত কূপ। এ ছাড়া জমিদারবাড়ির বিশাল মাঠের এক কোণে নাটমন্দির। জানা যায়, নাগরপুরের সঙ্গে কলকাতার একটি বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে আসেন ধনাঢ্য ব্যক্তি রামকৃষ্ণ সাহা মণ্ডল। তিনিই ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে ব্রিটিশদের কাছ থেকে বিপুল অর্থের বিনিময়ে জমি কিনে জমিদারি শুরু করেন।

রামকৃষ্ণ সাহার দুই ছেলে বৃন্দাবন ও রাধাগোবিন্দ। রাধা নিঃসন্তান। তবে বৃন্দাবনের তিন ছেলে– ব্রজেন্দ্র মোহন, উপেন্দ্র মোহন ও যোগেন্দ্র মোহন দীর্ঘকাল রাজত্ব করেন। এভাবে পাকুটিয়া জমিদারবাড়ি তিন ভাইয়ের তরফে বিভক্ত থাকলেও, জমিদাররা সবাই ছিলেন প্রজানন্দিত। বৃন্দাবনের মেজ ছেলে উপেন্দ্রকে কাকা রাধাগোবিন্দ দত্তক নেন। ফলে উপেন্দ্র কাকার জমিদারির পুরো সম্পত্তি লাভ করেন।

দৃষ্টিনন্দন পাকুটিয়া জমিদারবাড়িতে প্রতিনিয়ত পর্যটকের ভিড় বাড়ছে। ইতিহাসের সাক্ষী বাড়িটি সংস্কার না হওয়ায় একদিকে যেমন সৌন্দর্য হারাচ্ছে, অন্যদিকে তরুণ প্রজন্মের কাছে অজানা থেকে যাচ্ছে ইতিহাস। জমিদারবাড়িটি পুরাকীর্তি হিসেবে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে নিয়ে সংস্কার ও সংরক্ষণের দাবি জোরালো হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ