কন্নড় ভাষার আলোচিত সিনেমা ‘কানতারা’। ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ঋষভ শেঠি পরিচালিত ও অভিনীত এই সিনেমা। মুক্তির পর বক্স অফিস দাপিয়ে বেড়ায় এটি। নির্মিত হয়েছে এই সিনেমার প্রিকুয়েল। যার নাম রাখা হয়েছে—‘কানতারা লিজেন্ড: চ্যাপ্টার ওয়ান’ বা ‘কানতারা টু’। মুক্তির পর সিনেমাটি বক্স অফিসে ঝড় তুলেছে।  

হোম্বেল ফিল্মস প্রযোজিত ‘কানতারা টু’ সিনেমার চিত্রনাট্য রচনা, পরিচালনা ও প্রধান দুই চরিত্রে অভিনয় করেছেন ঋষভ শেঠি। সিনেমাটির অন্যতম প্রধান ‘রাজকন্যা কঙ্কাবতীর’ চরিত্রে অভিনয় করে নজর কেড়েছেন রুক্মিণী বসন্ত। 

আরো পড়ুন:

তামান্নাকে নিয়ে আন্নু কাপুরের ‘অশ্লীল’ মন্তব্য

কানতারা টু: ১০ দিনে আয় ৭৫৮ কোটি টাকা

১৯৯৬ সালের ১০ ডিসেম্বর কর্নাটকের বেঙ্গালুরুতে জন্মগ্রহণ করেন রুক্মিণী বসন্ত। তার বাবা বসন্ত বেনুগোপাল ভারতীয় সেনা বাহিনীর কর্নেল পদে চাকরি করতেন। ২০০৭ সালে জম্মু-কাশ্মীরের উরি বর্ডারে মারা যান তিনি। রুক্মিণী পড়াশোনা করেছেন আর্মি স্কুল, এয়ার ফোর্স স্কুলে। পরবর্তীতে যুক্তরাজ্যের র‌য়্যাল একাডেমি অব ড্রামাটিক আর্টস থেকে উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেন।

 

২০১৯ সালে কন্নড় ভাষার ‘বারবল ট্রিলজি’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে রুক্মিণীর। এতে তার বিপরীতে অভিনয় করেন এম.

জি. শ্রীনিবাস। একই বছর ‘আপস্টার্টস’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে পা রাখেন এই অভিনেত্রী। এ সিনেমা দুটো মুক্তির পর নিজেকে খুব একটা আলাদাভাবে পরিচয় করাতে পারেননি রুক্মিণী। 

 

কয়েক বছর বিরতি নিয়ে অর্থাৎ ২০২৩ সালে কন্নড় ভাষার ‘সপ্তা সাগরদাছে এলো’ সিনেমায় অভিনয় করেন রুক্মিণী। এ সিনেমা দুই পার্টে নির্মিত হয়। তবে প্রথম পার্ট মুক্তির পর বেশ সাড়া ফেলেন এই অভিনেত্রী। একই সঙ্গে দর্শক-সমালোচকদের প্রশংসা কুড়ান রুক্মিণী। এ সিনেমার জন্য ফিল্মফেয়ারে ‘ক্রিটিক্স অ্যাওয়ার্ড ফর বেস্ট এক্ট্রিস’ বিভাগে পুরস্কার জিতে নেন তিনি।

 

২০২৪ সালে কন্নড় ভাষার আরো দুটো সিনেমায় অভিনয় করেন রুক্মিণী। একই বছর ‘আপুডু ইপুডু এপুডু’ সিনেমার মাধ্যমে তেলেগু সিনেমায় পা রাখেন। চলতি বছরে ‘এইস’ সিনেমার মাধ্যমে তামিল ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে অভিষেক ঘটে রুক্মিণীর। তার অভিনীত তামিল ভাষার ‘মাদারাসি’ সিনেমাও চলতি বছরে মুক্তি পায়। তবে খুব একটা আলোর মুখ দেখেননি এই অভিনেত্রী। 

 

গত ২ অক্টোবর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘কানতারা টু’ সিনেমা। এতে ‘রাজকুমারী কঙ্কাবতীর’ চরিত্রে অভিনয় করে ভূয়সী প্রশংসা কুড়াচ্ছেন রুক্মিণী বসন্ত। সিনেমাটিতে তার উপস্থিতি দর্শকদের যেমন নজর কেড়েছে, তেমনি সমালোচকদেরও মুগ্ধ করেছেন ২৮ বছর বয়সি রুক্মিণী। 

 

‘কানতারা টু’ সিনেমার অংশ হতে পেরে দারুণ উচ্ছ্বসিত রুক্মিণী। তার ভাষায়—“ঋষভ স্যার আমার অভিনীত প্রথম ‘সপ্তা সাগরদাছে এলো’ সিনেমা দেখে আমার প্রশংসা করেছিলেন। তার মুখে প্রশংসাসূচক শব্দ শোনা আমার জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। কখনো ভাবিনি, সেই সিনেমার কারণে এত বড় প্রজেক্টে সুযোগ পাব। আমাকে যখন এই সিনেমার প্রস্তাব দেন, তখন একেবারেই স্বপ্নের মতো মনে হয়েছিল। চরিত্রটি যেমন বড়, কাহিনিতেও এর গুরুত্ব অনেক। শুরুতে অবশ্য একটু ভীত ছিলাম। কিন্তু ঋষভ স্যারের ভরসা আমার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছিল।”

 

‘রাজকুমারী কঙ্কাবতী’ হয়ে ওঠা মোটেও সহজ ছিল না। এ বিষয়ে রুক্মণী বলেন, “এমন সিনেমায় কাজ করার সময় করাবলি সংস্কৃতির মধ্যে পুরোপুরি নিমজ্জিত হওয়াটা জরুরি। কারণ কানতারা শুধু কাহিনি নয়, করাবলি অঞ্চলের পরম্পরা ও বিশ্বাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। আমার চরিত্রের কারণে ভূতপ্রেত ও দেব–দেবীর পূজা সম্পর্কে বিশদভাবে জানতে হয়েছে। লেখক ও ঋষভ স্যার এ ক্ষেত্রে আমাকে সাহায্য করেছেন। তবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল, শারীরিক ভাষা আয়ত্ত করা। কঙ্কাবতীকে সঠিকভাবে জীবন্ত করে তুলতে তা শেখা জরুরি ছিল।”

 

কন্নড় সিনেমার জনপ্রিয় তারকা অভিনেতা যশের পরবর্তী সিনেমা ‘টক্সিক’। তারকাবহুল এ সিনেমায়ও অভিনয় করছেন রুক্মিণী। সিনেমাটিতে সহশিল্পী হিসেবে পেয়েছেন নয়নতারা, কিয়ারা আদভানি, হুমা কুরেশি, তারা সুতারিয়া, বিবেক ওবেরয়ের মতো শিল্পীদের। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৬ সালের ১৯ মার্চ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে সিনেমাটি। তাছাড়া তেলেগু ভাষার ‘ড্রাগন’ সিনেমার কাজও রুক্মিণীর হাতে রয়েছে।

 

রুক্মিণী তার পরবর্তী দুই সিনেমা প্রসঙ্গে বলেন, “গত অক্টোবর থেকে আমি যেসব সিনেমায় কাজ করেছি, সেগুলো একেবারেই ভিন্ন ধারার। এই ভ্রমণে ক্রমাগত নিজেকে নিজে চ্যালেঞ্জ করছি। এর মধ্যে আমি আমার দুটো জিনিস চিনেছি। এক. আমার শক্তি। দুই. আমার দুর্বলতা। সেই সঙ্গে ক্রমান্বয়ে নিজেকে উন্নত করছি।”

ঢাকা/শান্ত

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম ক ত র পর চর ত র কর ছ ন ক নত র বসন ত

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদে স্বাক্ষর করার সুযোগ পরেও থাকবে, সংবাদ সম্মেলনে আলী রীয়াজ

কোনো রাজনৈতিক দল আগামীকাল শুক্রবার জুলাই জাতীয় সনদে স্বাক্ষর না করলে পরবর্তী সময়ে সই করার সুযোগ থাকবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আলী রীয়াজ এ কথা বলেন।

কাল শুক্রবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে উপস্থিত থাকবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিক জানতে চান, আগামীকাল যদি কোনো দল জুলাই সনদে সই না করে, তাহলে পরবর্তী সময়ে তারা চাইলে কি স্বাক্ষর করতে পারবে?

জবাবে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘আগামীকাল সব দলের স্বাক্ষর নিতে পারলে ভালো। তবে যদি কোনো দল পরবর্তীতে স্বাক্ষরের কথা বলে...তারা তো সনদ প্রক্রিয়ার অংশীদার। শরিক হিসেবে তারা সেটা করতে পারবে। তবে কমিশন আশা করে, সকলে একসঙ্গে বসে উৎসবমুখর পরিবেশে স্বাক্ষর করবে।’

‘আইনি ভিত্তি ছাড়া এবং আদেশের ব্যাপারে নিশ্চয়তা ছাড়া’ জুলাই সনদে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সই করবে না—দলটির নেতাদের এমন বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, এনসিপির বক্তব্য কমিশন গভীরভাবে পর্যালোচনা ও পর্যবেক্ষণ করেছে। দলটির নেতারা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অগ্রগামী সৈনিক ছিলেন। তাঁরা নেতৃত্ব দিয়েছেন। এর বাইরে সনদ প্রক্রিয়ায় তাঁরা অংশ নিয়েছেন। ফলে তাঁদের অবদান সনদ তৈরির ক্ষেত্রে একাধিকভাবে আছে।

আলী রীয়াজ বলেন, কমিশনও মনে করে, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দেওয়া প্রয়োজন এবং দ্রুততার সঙ্গে সেটা করার জন্যই কমিশনের মেয়াদকালে তাঁরা একটি পূর্ণাঙ্গ সুপারিশ দেবেন। তিনি বলেন, কমিশন আশা করছে এনসিপিসহ সব রাজনৈতিক দল সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দেবে, সনদে স্বাক্ষর করবে এবং বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে।

সংবাদ সম্মেলনে ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি বলেন, কমিশনের মেয়াদ ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে, যাতে কমিশনের মেয়াদকালেই একটি পূর্ণাঙ্গ সুপারিশ তাঁরা দিতে পারেন এবং সেগুলো বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া যায়। তিনি বলেন, সনদ বাস্তবায়নের জন্য বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলা অব্যাহত আছে। বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলা হবে। সনদ বাস্তবায়নে যেন কোনো রকম ব্যত্যয় না ঘটে, তার দায়িত্ব কমিশনের।

সংবাদ সম্মেলনে সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, সবচেয়ে বড় আয়োজন জুলাই সনদ নিজে। কারণ, এই সনদ বাস্তবায়ন করা গেলে রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে বড় পরিবর্তন আসবে। তিনি বলেন, আগামীকাল স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সনদ তৈরির প্রেক্ষাপট এবং এর ভবিষ্যৎ কার্যকারিতা বিষয়ে ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হবে। পাশাপাশি আগামী দুই মাসে এটা নিয়ে আরও কাজ করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান বিচারপতি এমদাদুল হক এবং দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সংস্কার কমিশনের প্রধান ইফতেখারুজ্জামান প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাতের ব্যথা বাড়লে করণীয়
  • জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা এনসিপির
  • জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অংশ নেবে না এনসিপি, গভীর রাতে জানাল দলটি
  • জুলাই সনদে স্বাক্ষর করার সুযোগ পরেও থাকবে: আলী রীয়াজ
  • জুলাই সনদে স্বাক্ষর করার সুযোগ পরেও থাকবে, সংবাদ সম্মেলনে আলী রীয়াজ
  • এই সংস্কারের কোনো আইনগত বৈধতা নেই, মানুষের সমর্থন নেই: জি এম কাদের
  • গাজায় যেভাবে ইসরায়েলের পরাজয় আর ফিলিস্তিনের পুনর্জন্ম হলো
  • হামাসকে নিরস্ত্র করার প্রতিশ্রুতি ট্রাম্পের, কিন্তু কীভাবে তা বললেন না
  • শেখ হাসিনাসহ পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ