৫ম দফায় জুলাই যোদ্ধাদের দাবির প্রতিফলন ঘটানো হয়েছে: আলী রীয়াজ
Published: 17th, October 2025 GMT
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, “জুলাই বীর যোদ্ধাদের সাথে গতকালের আলোচনা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ এর অঙ্গীকারনামার ৫ নম্বর দফার পরিবর্তন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে জুলাই বীর যোদ্ধাদের দাবির প্রতিফলন ঘটিয়ে প্রয়োজনীয় জরুরি সংশোধন করা হয়েছে।”
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় আন্দোলনরত এসব কথা বলেন তিনি। এসময় কমিশনের সদস্যদের মধ্যে বিচারপতি মো.
এসময় অধ্যাপক আলী রীয়াজ অঙ্গীকারনামার ৫ নম্বর দফার সংশোধিত ভাষ্যটি পাঠ করেন। এতে বলা হয়েছে, “গণঅভ্যুত্থানপূর্ব বাংলাদেশে ১৬ বছরের আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রামে গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় সদস্যদের দ্বারা সংঘটিত সকল হত্যাকাণ্ডের বিচার, শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান ও শহীদ পরিবারকে এবং জুলাই আহতদের রাষ্ট্রীয় বীর, আহত জুলাই বীর যোদ্ধাদের যথোপযুক্ত সহায়তা প্রদান যেমন মাসিক ভাতা, সুচিকিৎসা, পুনর্বাসন ব্যবস্থা এবং শহীদ পরিবার ও আহত বীর যোদ্ধাদের আইনগত দায়মুক্তি, মৌলিক অধিকার সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করব।”
কমিশন এই অঙ্গীকারনামা বাস্তবায়নের ব্যাপারে সরকারকে সুস্পষ্ট এবং সুনির্দিষ্টভাবে উপস্থাপন করবে। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দল এবং ঐকমত্য কমিশনের কোনো মত পার্থক্য নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ঢাকা/এএএম/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বড় চ্যালেঞ্জ নির্বাচনের মাধ্যমে পিসফুল ট্রানজিশন: নাহিদ ইসলাম
জাতীয় ঐক্য ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হলে আসন্ন নির্বাচনের মাধ্যমেই একটি পিসফুল ট্রানজিশন ঘটাতে হবে বলে মনে করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, “সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হলে দেশ ও বিশ্ব বুঝবে—বাংলাদেশ স্থিতিশীলতার পথে যাচ্ছে। আর নির্বাচন শান্তিপূর্ণ না হলে অস্থিরতা থেকে যাবে, যা দেশের ভবিষ্যতের জন্য বড় ঝুঁকি।”
শনিবার (২৯ নভেম্বর) ঢাকার একটি হোটেলে ‘চতুর্থ বাংলাদেশ অর্থনীতি সম্মেলন ২০২৫’-এ বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “গত ১৬ বছরে দেশের অর্থনৈতিক যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা রাতারাতি বদলানো সম্ভব নয়। এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে কর্মসংস্থান সৃষ্টি বা বড় ধরনের অর্থনৈতিক পরিবর্তনও বাস্তবসম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা। তবে সমাজকে ইতিবাচক সংকেত দিতে হবে যে সরকার সেই পথেই এগোচ্ছে। শিক্ষা সংস্কারে দক্ষতাভিত্তিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারলে তরুণদের কর্মসংস্থানের জটিলতা অনেকটাই সমাধান হবে।”
তিনি বলেন, “২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে জনগণ—বিশেষত তরুণরা—অর্থনৈতিক অনুপ্রেরণা ও আকাঙ্ক্ষা থেকেই রাস্তায় নেমেছিল। গণঅভ্যুত্থানের মূল প্রেক্ষাপট বুঝতে হলে এর আগের ফ্যাসিবাদী সময়ের অর্থনৈতিক কাঠামো—লুটতরাজ, ব্যাংক লোপাট, অর্থ পাচার এবং অলিগার্ক-চক্রের উত্থান—এসব আলোচনা করতে হবে। এই বৈষম্যই গণঅভ্যুত্থানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্লোগানকে জনপ্রিয় করেছে।”
কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “আন্দোলনটি চাকরির দাবিতে হলেও এর পেছনে বৈষম্যের দীর্ঘ পটভূমি ছিল। তাই আন্দোলনের নাম রাখা হয় ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’, যাতে বৃহত্তর জনগণের সঙ্গে সংযোগ তৈরি হয়। সে সময় শ্রমিক মজুরি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, কর্মসংস্থানের মতো বৃহত্তর দাবিও ছিল আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত।”
তিনি আরো বলেন, “ফ্যাসিবাদী সময়ের বৈষম্যমূলক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার কারণে তরুণরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পড়াশোনা শেষে উপযুক্ত বা মর্যাদাপূর্ণ চাকরি না পাওয়া এবং সরকারি চাকরিতে কোটানির্ভর বৈষম্য—এসব থেকেই তাদের ক্ষোভ জমতে থাকে, যার বিস্ফোরণ ঘটে গণঅভ্যুত্থানে।”
নাহিদ ইসলাম বলেন, “গত এক দশকের তিনটি বড় ছাত্র আন্দোলন—প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাটবিরোধী আন্দোলন, ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং নিরাপদ সড়ক আন্দোলন—গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। অর্থনৈতিক চাপ ও বৈষম্যই এসব আন্দোলনের ভিত্তিকে আরো শক্ত করেছে।”
ঢাকা/রায়হান/ইভা