ছেঁউড়িয়ায় লালন স্মরণোৎসব শুরু শুক্রবার
Published: 17th, October 2025 GMT
কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) থেকে শুরু হচ্ছে বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ এর ১৩৫তম তিরোধান স্মরণে তিনদিনের স্মরণোৎসব। এবারই প্রথম এ আয়োজন হবে রাষ্ট্রীয়ভাবে। এ নিয়ে খুশি সাধু-ভক্ত ও লালন অনুষারীরা।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ায় রাষ্ট্রীয়ভাবে এ আয়োজনের শুভ উদ্বোধন করা হবে। এ উপলক্ষ্যে ইতিমধ্যে জাকজমকপূর্ণ আয়োজনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সাধু-ভক্তরা ছুঁটে এসেছেন লালন আঁখড়াবাড়ি ও মাজার প্রাঙ্গণে।
আরো পড়ুন:
পটুয়াখালীতে চলছে প্রবারণা উৎসব
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে হিন্দু মহাজোট নেতৃবৃন্দের শুভেচ্ছা বিনিময়
আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এবারে বড় আকারে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা হবে লালন স্মরণোৎসব, এ উপলক্ষ্যে তিনদিনের মেলার আয়োজন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে সব ধরনের প্রস্ততি সম্পন্ন করা হয়েছে।
তিনদিনের এ স্মরণোৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে সংস্কৃতি-বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী থাকবেন বলে জানিয়েছেন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শুক্রবার সাধুদের রীতিতে অনুষ্ঠান শুরু হলেও গ্রামীণ মেলা চলবে তিনদিন ধরে। সেই সাথে আলোচনা সভা ও বসবে গভীর রাত অবধি লালনের গানের আসর। মেলা শেষ হবে ১৯ অক্টোবর রোববার।
সাধু ভক্তরা জানান, তোকাল পরে এসে আধ্যাত্মিক চিন্তার দার্শনিক মহামতি লালনের সংগীত ও ধর্ম-দর্শন নিয়ে দেশ-বিদেশে মুক্ত চিন্তক গবেষকদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। যদিও এর আগে কার্যত বাউল সাধক ফকির লালন শাহের জীবদ্দশা থেকে চলে আসা দোল উৎসব এবং তিরোধান দিবস স্মরণে তার ভক্ত অনুসারীরা একেবারেই নিজস্ব ঘরানার রীতিতে আচার অনুষ্ঠানে পালন করতে এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ভক্তদের আগমনে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে সাঁইজির তীর্থধাম।
দর্শনাথী জেরিন বলেন, “প্রতি বছরই আমি এখানে আসি। এবারে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালনের উদ্যোগ নেওয়ায় দর্শনার্থীরা আগেই আশা শুরু করেছে। প্রতি বছরের তুলনায় আরো বেশি মানুষের সমাগম হবে এবার।”
লালন শাহের ১৩৫তম স্মরণোৎসব ঘিরে লালন একাডেমী, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানান কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক ও লালন একাডেমীর সভাপতি আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন।
লালন মেলাকে কেন্দ্র করে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। পুলিশ, র্যাব, আনসারের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ এবং সেনাবাহিনী মোতায়েন থাকবে। সেই সঙ্গে বিদের্শী দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানান কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান।
বৃটিশ শাসকগোষ্ঠির নির্মম অত্যাচারে গ্রামের সাধারণ মানুষের জীবনকে যখন বিষিয়ে তুলেছিল, ঠিক সেই সময়ই সত্যের পথ ধরে, মানুষকে গুরুর দিক্ষা দিতেই মানবতার পথ প্রদর্শক হিসেবে লালন শাহ এর আবির্ভাব ঘটে কুষ্টিয়া কুমারখালির ছেঁউড়িয়াতে। ছেঁউড়িয়ার আঁখড়া স্থাপনের পর থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত শিষ্য-ভক্তদের নিয়ে পরিবৃত থাকতেন। লালন সাঁইয়ের সৃষ্টির কৃর্তি বিশ্বে সর্বাজনীন হয়ে উঠেছে, তাকে নিয়ে চলছে নিরন্তর গবেষণা।
লালন সাঁই জাত-ধর্মের সিমাবদ্ধতার বাইরে মানুষকে সবার উপর তুলে ধরেছেন। লালন শাহ’র অমরত্বের জন্যই কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়া এখন বিশ্ব মরমীর তীর্থ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। তার গানের মাঝেই লুকিয়ে আছে সৃষ্টির রহস্য। সৃষ্টিকর্তার সাথে আত্মিক সম্পর্ক তার গানের মূলমন্ত্র। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষকে একই স্রোতধারায় আনার জন্য আমরণ কাজ করেছেন এই মরমী সাধক।
ঢাকা/কাঞ্চন/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উৎসব স মরণ ৎসব শ ক রব র ত নদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবি মেনে নিন: জিএম কাদের
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে তিনি এ আহ্বান জানান।
আরো পড়ুন:
জাপার কর্মী সমাবেশ পণ্ড, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ার শেল-সাউন্ড গ্রেনেড
নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি জিএম কাদেরের
জিএম কাদের বলেন, “জাতি হিসেবে শিক্ষকদের প্রতি আমাদের যথাযথ মর্যাদা ও সন্মান জানানো উচিত। জীবন ধারণের জন্য ন্যুনতম সম্মানি না দিয়ে শুধু শুধু সন্মান জানানোর ব্যাপারটা আরো বেশি অসম্মানজনক।”
তিনি বলেন, “এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের দাবিগুলো শুধু যৌক্তিকই না, মানবিকও বটে। আন্দোলনরত শিক্ষক-কর্মচারীদের ৩টি দাবি হলো, মূল বাড়ি ভাড়া ২০ শতাংশ (৩ হাজার টাকা), চিকিৎসা ভাতা দেড় হাজার টাকা এবং উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশ করা। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, মুদ্রাস্ফীতির এই সময়ে তাদের দাবিগুলো অত্যন্ত যৌক্তিক।”
এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, “আমি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনে দাবি করেছিলাম যে, ১৭ বছর ধরে চলমান ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতার পরিবর্তে শতভাগ উৎসব ভাতা প্রদান করা ও এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ করা।”
“আমি আশা করব, বর্তমান সরকার তাদের রাজপথ থেকে আলোচনার টেবিলে নিয়ে এসে দাবিগুলো মেনে নেবেন।”
ঢাকা/নইমুদ্দীন/সাইফ