ট্রাম্প-পুতিন দীর্ঘ ফোনালাপ, হাঙ্গেরিতে হবে বৈঠক
Published: 17th, October 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। বৃস্পতিবার দুই নেতার মধ্যে দীর্ঘ ফোনালাপ হয়। এতে ‘বড় ধরনের অগ্রগতি’ হয়েছে দাবি করে হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। তবে বৈঠকের বিষয়ে নির্দিষ্ট দিনক্ষণ জানাননি তিনি।
শুক্রবার ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করতে হোয়াইট হাউসে যাওয়ার কথা ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির। এতে যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহে ট্রাম্পকে রাজি করানোর চেষ্টা করতে পারেন তিনি।
এই বৈঠকের ঠিক এক দিন আগে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসার ঘোষণা দিলেন ট্রাম্প। জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর পুতিনের সঙ্গে এটি হবে তাঁর দ্বিতীয় বৈঠক। এর আগে গত আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কায় দুই নেতা বৈঠকে বসেন। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ওই বৈঠকে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ ট্রাম্প লিখেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আজকের টেলিফোন আলাপে দারুণ অগ্রগতি হয়েছে।’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও জানান, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে এই ‘অগৌরবজনক’ যুদ্ধ বন্ধ করা যায় কি না, তা দেখতে তিনি এবং পুতিন হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে বৈঠক করবেন। সেখানে বৈঠকের বিষয়ে উভয়ে সম্মত হয়েছেন।
ট্রাম্প আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওসহ যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার শীর্ষ কর্মকর্তারা আগামী সপ্তাহে ‘প্রাথমিক বৈঠক’ করবেন। তবে এই বৈঠক কোথায় হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি।
শান্তিচুক্তিতে পৌঁছাতে রাশিয়া রাজি না হওয়ায় ট্রাম্প সম্প্রতি পুতিনের প্রতি ক্রমেই হতাশা প্রকাশ করে আসছিলেন। এরপর ট্রাম্পের এই ঘোষণা পুতিনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের সর্বশেষ নাটকীয় পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এদিকে ফোনালাপের বিষয়ে ক্রেমলিনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পুতিন ও ট্রাম্পের মধ্যে ‘দ্বিধাহীন ও আস্থাপূর্ণ’ আলোচনা হয়েছে। দুই নেতার বৈঠক আয়োজনে কাজ শুরু করেছে ক্রেমলিন।
আরও পড়ুনপুতিন যুদ্ধ না থামালে ইউক্রেনকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দেবেন ট্রাম্প১৩ অক্টোবর ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র ইউক র ন
এছাড়াও পড়ুন:
‘প্রতিদিন মনে হয়, আজ বুঝি ম্যাডামকে নিয়ে ভালো খবর পাব’
‘প্রতিদিন এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে আসি। প্রতিদিন মনে হয়, আজ বুঝি ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা নিয়ে ভালো কোনো খবর পাব।’
দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তাঁকে নিয়ে কথাগুলো বলেন মীর জসিম।
আজ রোববার সকালে এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে কথা হয় মীর জসিমের সঙ্গে। তিনি নিজেকে বিএনপির একজন সমর্থক হিসেবে পরিচয় দেন।
এভারকেয়ার হাসপাতালের পাশের একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন বলে জানালেন মীর জসিম। তিনি বলেন, প্রতিদিন আশুলিয়া থেকে ঢাকায় আসেন। অফিসে ঢোকার আগে এক বার হাসপাতালের সামনে আসেন।
মীর জসিম বলেন, তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ততা নন। তবে খালেদা জিয়ার কারণে তিনি ছোটবেলা থেকে বিএনপিকে সমর্থন করেন।
মীর জসিম বলেন, ‘প্রতিদিন এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে আসি। প্রতিদিন মনে হয়, আজ বুঝি ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা নিয়ে ভালো কোনো খবর পাব। গণমাধ্যমে যেসব খবর প্রচার হয়, সেগুলো দেখি ঠিকই। কিন্তু মনকে বোঝাতে পারি না। তাই এখানে ছুটে আসি। না এলে ভালো লাগে না। মনের ভেতরে কেমন জানি করে।’
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিতে আজ এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে লোকজন ভিড় করেছেন। তাঁদের মধ্যে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা ছাড়াও সাধারণ মানুষ আছে। তাঁরা এখানে এসে দোয়া করছেন। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার খবর নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
যারা এখানে আসছেন, তাঁরা বলছেন, তাঁদের প্রত্যাশা একটাই—খালেদা জিয়া যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন।
বিএনপির আরেক সমর্থক আনোয়ার হোসেন। তিনি এসেছেন নেত্রকোনা থেকে। আনোয়ার হোসেন বলেন, গত দুদিন ধরে তিনি ঢাকায় আছেন। তিনি মূলত খালেদা জিয়ার খোঁজ নিতেই এসেছেন। তিনি জানেন, খালেদা জিয়াকে দেখার সুযোগ হবে না। তারপরও এসেছেন মনের টানে।
সকাল নয়টা থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালের সামনে অবস্থান করে দেখা যায়, ধীরে ধীরে নেতা-কর্মী-সমর্থকেরা এখানে জড়ো হচ্ছেন। তাঁরা পরস্পরের সঙ্গে কথা বলছেন। খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা বোঝার চেষ্টা করেছেন।
গত ২৩ নভেম্বর রাতে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের অধীনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা কার্যক্রম চলছে।
আরও পড়ুনএখনো বিদেশে নেওয়ার মতো অবস্থায় নেই খালেদা জিয়া ১০ ঘণ্টা আগেখালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখনো স্থিতিশীল নয়। এ কারণে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নেওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্তে আসা যায়নি বলে চিকিৎসক ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত আছে। তবে বিদেশে চিকিৎসার বিষয়টি নির্ভর করছে তাঁর শারীরিক অবস্থার অর্থাৎ দীর্ঘ যাত্রার ধকল নিতে শারীরিকভাবে উপযোগী কি না, সেটার ওপর।
আরও পড়ুনখালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ড সিদ্ধান্ত নিলেই ঢাকায় আসবে কাতারের এয়ার অ্যাম্বুলেন্স২০ ঘণ্টা আগেসাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যদের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র গতকাল শনিবার রাতে প্রথম আলোকে জানিয়েছে, খালেদা জিয়ার নানা শারীরিক জটিলতার মধ্যে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদ্যন্ত্র ও ফুসফুসের সমস্যা ওঠানামা করছে। এর কিছু কিছু কখনো নিয়ন্ত্রিত, আবার হঠাৎ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, কিডনির সমস্যার কারণে খালেদা জিয়ার শরীরে হিমোগ্লোবিন কমে গিয়েছিল, সেটি বেড়েছে। কিডনির কার্যকারিতা সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে, ফুসফুসেরও উন্নতি আছে। তবে তিনি এখনো আশঙ্কা মুক্ত নন।
আরও পড়ুনখালেদা জিয়ার জন্য জার্মানির প্রতিষ্ঠান থেকে ভাড়া করে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠাচ্ছে কাতার০৫ ডিসেম্বর ২০২৫