‘বরিশালের ভাইজান’ খ্যাত ইকবাল সীমান্তে গ্রেপ্তার
Published: 17th, October 2025 GMT
ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সীমান্তে গ্রেপ্তার হয়েছেন ‘বরিশালের ভাইজান’ খ্যাত হাফিজুর রহমান ইকবাল (৫৭)। দিনাজপুরের বিরামপুর সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তার করা ইকবাল কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের বরিশালের উজিরপুর উপজেলা শাখার সহ-সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি উজিরপুর উপজেলার ওটরা ইউনিয়নের কেশবকাঠি গ্রামের বাসিন্দা রফিজ উদ্দিন মৃধার ছেলে।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সকালে গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করেছেন উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.
তিনি জানিয়েছেন, হাফিজুর রহমান ইকবালের বিরুদ্ধে ঢাকার রমনা থানায় চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে দায়ের করা একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা ও উজিরপুর মডেল থানায় দায়ের করা দুটি মামলা আছে। এসব মামলায় তিনি পলাতক আসামি।
দিনাজপুরের বিরামপুর থানার ওসি মো. মমতাজুল হক মোবাইল ফোনে জানিয়েছেন, বিরামপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালানোর সময় হাফিজুর রহমান ও মাহমুদুল আজাদ নামের দুই আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ঢাকার রমনা থানায় একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা ছাড়াও নিজ থানায় দুটি মামলা আছে।
ওসি আরো জানান, ধারণা করা হচ্ছে, তারা দুজনই গ্রেপ্তার এড়াতে নিরাপদ রুট মনে করে বিরামপুরের কাটলা সীমান্তপথে চোরাকারবারিদের সহযোগিতায় ভারতে পালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
ওসি বলেন, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের দিনাজপুরের আদালতে পাঠানো হবে।
একই সময়ে গ্রেপ্তার করা অপর ব্যক্তি মাহমুদুল আজাদ ওরফে রিপন (৪৮) বরগুনা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের চর কলোনি মহল্লার বাসিন্দা। তিনি বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৮টার দিকে দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার ভেলারপাড়া গ্রামে পাকা সড়কের একটি কালভার্টের কাছে দুজন ব্যক্তিকে ইজিবাইকে যেতে দেখেন স্থানীয় কয়েকজন যুবক। তাদের কথাবার্তা সন্দেহজনক মনে হলে যুবকরা জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদে ওই দুই ব্যক্তি কখনো বলেন, তারা চিকিৎসার জন্য ভারতে যাচ্ছেন; আবার কখনো জানান, জরুরি কাজে এলাকায় এসেছেন। তাদের আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে স্থানীয় যুবকরা বিরামপুর থানা পুলিশকে খবর দেন। পরে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের থানায় নিয়ে আসে।
হাফিজুর রহমান ইকবালের বিরুদ্ধে বরিশালের উজিরপুরের হারতা ইউনিয়নের জনপ্রিয় সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির খানকে অপহরণ করে গুমের অভিযোগ রয়েছে।
হুমায়ুন কবির খানের ভাই মঞ্জু খান অভিযোগ করেছেন, ২০১০ সালের ২৩ নভেম্বর হাফিজুর রহমান ইকবালের নেতৃত্বে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা রাজধানীর মালিবাগ চৌধুরী পাড়া থেকে হুমায়ুন কবিরকে অপহরণ করে। এখন পর্যন্ত হুমায়ুন কবিরের খোঁজ পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগসহ মামলা দায়ের করায় একাধিকবার প্রকাশ্যে মামলার বাদী মঞ্জু খানের ওপর হামলা চালিয়েছেন হাফিজুর রহমান ইকবাল ও তার ক্যাডার বাহিনী।
মঞ্জু খান জানিয়েছেন, হাফিজুর রহমান ইকবালের বিরুদ্ধে হারতা এলাকায় গণডাকাতিসহ পতিত সরকারের সময় উজিরপুরে সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের অভিযোগ আছে।
ভুক্তভোগীরা প্রতিটি অভিযোগের তদন্ত করে হাফিজুর রহমান ইকবালের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
ঢাকা/পলাশ/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হ ফ জ র রহম ন ইকব ল র বর শ ল র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
স্ত্রীসহ সাবেক মেয়র তাপসের আয়কর নথি জব্দের আদেশ
দুর্নীতির অভিযোগের অনুসন্ধান চলমান থাকায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ও তাঁর স্ত্রী আফরিন তাপসের আয়কর নথি জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
দুদকের পৃথক দুই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ রোববার ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ সাব্বির ফয়েজের আদালত এই আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রিয়াজ হোসেন জানান, দুদকের সহকারী পরিচালক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. ফেরদৌস রহমান সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস ও তাঁর স্ত্রী আফরিন তাপসের আয়কর নথি জব্দ চেয়ে আবেদন করেন। এরপর আদালত আবেদনগুলো মঞ্জুর করেন।
মেয়র তাপসের আবেদনে বলা হয়, মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাপস দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ৭৩ কোটি ১৯ লাখ ৬৭ হাজার টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন। তাঁর নামে ২৭টি ব্যাংক হিসাবে ৫৩৯ কোটি ১৬ লাখ ২৫ হাজার ২৭৮ টাকা ও ৫ লাখ ১৭ হাজার ৫২৭ মার্কিন ডলারের সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।
দুদক বলছে, অবৈধ অর্থ জ্ঞাতসারে হস্তান্তর ও স্থানান্তর করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় তাপসের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
মামলার তদন্তের স্বার্থে আসামি শেখ ফজলে নূর তাপসের নামে এ পর্যন্ত সব আয়কর নথির স্থায়ী অংশ ও বিবিধ অংশসহ সংশ্লিষ্ট যাবতীয় রেকর্ডপত্র জব্দ করে পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন।
আফরিন তাপসের নথি চেয়ে করা আবেদনে বলা হয়, পরস্পর যোগসাজশে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে তিনি অসংগতিপূর্ণ ৬ কোটি ৪০ লাখ ৮৯ হাজার টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। ৯টি ব্যাংক হিসাবে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ৭০ কোটি ৮৯ লাখ ৯৩ হাজার ৬৬৯ টাকা ও ৩ লাখ ৯৫ হাজার ৯৬৩ মার্কিন ডলারের অস্বাভাবিক সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন।
দুদক বলছে, অবৈধ অর্থ জ্ঞাতসারে হস্তান্তর ও স্থানান্তর করে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় আফরিন তাপসের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আফরিন তাপসের নামে সব আয়কর নথির স্থায়ী অংশ ও বিবিধ অংশসহ সংশ্লিষ্ট যাবতীয় রেকর্ডপত্র জব্দ করে পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন।