৪৩তম বিসিএসের গেজেটবঞ্চিত ক্যাডার অফিসারদের গেজেটভুক্ত করে যোগদান নিশ্চিতকরণ ও ‘সরকারি চাকরি ভ্যারিফিকেশন নীতিমালা’ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের দাবিতে আমরণ অনশন করছেন গেজেটবঞ্চিতরা। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে শুরু হওয়া এই অনশনের ৭৬ ঘণ্টা ইতিমধ্যে পার হয়েছে।

অনশনরত তমা রায় ৪৩তম বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে গেজেটবঞ্চিত হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বিগত ৪ মাস ধরে ৪৩তম বিসিএসের দ্বিতীয় গেজেট থেকে বাদ পড়া ২২৭ জন একটি গেজেটের জন্য অপেক্ষা করছি। সরকারের বিভিন্ন দায়িত্বশীল মহল থেকে আমাদের বারবার আশ্বস্ত করা হয়েছে। সিনিয়র সচিব স্যার ৯ জানুয়ারি বলেছিলেন, ২ কর্মদিবসের মধ্যে গেজেট প্রকাশ করা হবে, কিন্তু আজ প্রায় ৪ মাস হয়ে যাওয়ার পরেও আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত গেজেটটি পাইনি।’

তমা রায় আরও বলেন, ‘আমরা আশা করছি, খুব দ্রুতই আমাদের গেজেটটি প্রকাশিত হবে। চূড়ান্তভাবে আমাদের ৪৩তম বিসিএসের গেজেটটি প্রকাশিত হওয়ার আগপর্যন্ত আমরা এই অনশন চালিয়ে যাব।’

৪৩তম বিসিএস কৃষি ক্যাডারে গেজেটবঞ্চিত মোহাম্মদ আলী নেওয়াছ বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়েই ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে প্রথম গেজেটটি প্রকাশিত হয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ২২৭ জনকে বাদ দিয়ে আবার গেজেট প্রকাশ করা হয়। আমাদেরকে কেন গেজেটভুক্ত করা হচ্ছে না, তার আসল কারণ সুস্পষ্টভাবে জানানো হোক। আর যদি কোনো যৌক্তিক কারণ না থাকে, তাহলে আমাদের সবাইকে গেজেটভুক্ত করা হোক।’

গেজেটভুক্ত হওয়া ছাড়া তাঁদের আর কোনো উপায় নেই উল্লেখ করে আলী নেওয়াছ আরও বলেন, ‘কেননা, ৪৩তম বিসিএসের নিয়োগের একটা তারিখ দেওয়ার ফলে আমরা অনেকে যারা চাকরিতে ছিলাম, তারা চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলাম। সে ক্ষেত্রে আমরা আগের চাকরি হারিয়েছি আবার নতুন চাকরিতেও যোগদান করতে পারছি না।’

অনশনরত পাঁচজন হলেন মো.

ফয়সাল চোকদার (বিসিএস সাধারণ শিক্ষা), মো. মতিউর রহমান (বিসিএস সাধারণ শিক্ষা), এম এ হান্নান সরকার (বিসিএস সাধারণ শিক্ষা), দেবাশীষ ঘোষ (বিসিএস সাধারণ শিক্ষা) ও সমরজিত চক্রবর্তী (বিসিএস সাধারণ শিক্ষা)।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম দ র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

তিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৫ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ

সম্পূরক বৃত্তি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণাসহ তিন দফা দাবিতে অনশনে বসা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীর মধ্যে দুজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।

গতকাল মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন তাঁরা।

এর আগে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়।

তিন দফা দাবির অন্যটি হলো ক্যাফেটেরিয়ায় ভর্তুকি প্রদান ও স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করা এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা চালু।

আজ বুধবার দুপুরে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে তিন দফা দাবিতে অনশন চালিয়ে যেতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনশনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে তাঁদের খোঁজখবর নিতে দেখা যায়।

অনশনে বসা পাঁচ শিক্ষার্থী হলেন উদ্ভিদবিজ্ঞানের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ফয়সাল মুরাদ ও ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ফেরদৌস শেখ, ইতিহাস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শাহীন মিয়া এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের অপু মুন্সী।

অনশনকারীদের মধ্যে ফয়সাল মুরাদ ও এ কে এম রাকিব অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের পেটে ব্যথা, রক্তচাপ কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে।

অনশনকারী অপু মুন্সী বলেন, পারিবারিক কারণে তাঁকে গ্রামে চলে যেতে হয়েছে। তাই গতকাল রাতে তিনি অবস্থান করতে পারেননি।

আজ অনশনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা।

এদিকে অনশনকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল করবেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ কারণে শিক্ষার্থীদের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে উপস্থিত হতে আহ্বান জানানো হয়েছে।

অনশনে অংশ নেওয়া শাহীন মিয়া বলেন, প্রশাসন আগের মতোই বাহানা করে যাচ্ছে। হচ্ছে, হবে এ বক্তব্য থেকে বের হতে পারেনি প্রশাসন। আর কোনো টালবাহানা তাঁরা শুনবেন না। তাঁদের দাবি অবশ্যই মানতে হবে। তা না হলে প্রশাসনকে দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হবে।

আরেক অনশনকারী ফয়সাল মুরাদ বলেন, প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে অনশন চলছে, কিন্তু প্রশাসন এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। ইতিমধ্যে তিনিসহ আরও একজন অনশনকারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

অনশনকারী এ কে এম রাকিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা অবস্থানসহ বেশ কিছু কর্মসূচি পালন করেছি, কিন্তু তাতে প্রশাসন কর্ণপাত করেনি। তাই অনশনে যেতে বাধ‍্য হয়েছি। এ ছাড়া আমাদের উপায় ছিল না। এই নখদন্তহীন প্রশাসন হয়তো আমাদের দাবি মেনে নেবে, নয়তো তাদের নিজেদের রাস্তা মাপতে হবে।’

আরও পড়ুনসম্পূরক বৃত্তি ও জকসু নির্বাচনের রূপরেখাসহ তিন দাবিতে অনশনে ৫ শিক্ষার্থী১৯ ঘণ্টা আগে

যতক্ষণ তিন দফা দাবি আদায় না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত অনশন চলবে জানিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যতক্ষণ শরীরে শেষ রক্তবিন্দু আছে ততক্ষণ তাঁরা অনশন চালিয়ে যাবেন। ক্লাস-পরীক্ষা শেষ করে অনেকেই এসে সংহতি প্রকাশ করছেন। সকাল থেকে এ সংখ্যা বাড়ছে।

এদিকে গতকাল রাতে অনশনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে উপস্থিত হন। এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম ডিসেম্বরের মধ্যে জকসু নির্বাচন আয়োজনের এবং জানুয়ারি মাস থেকে সম্পূরক বৃত্তি দেওয়ার আশ্বাস দেন।

তবে সুস্পষ্ট রূপরেখা ছাড়া ও প্রশাসন থেকে লিখিত না পাওয়া পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে উপাচার্যকে জানিয়েছেন অনশনকারী শিক্ষার্থীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জকসুসহ তিন দফা দাবি মেনে নিল প্রশাসন, ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা
  • ৩ দাবিই পূরণ চান অনশনরত জবি শিক্ষার্থীরা
  • টানা ৩০ ঘণ্টা অনশনে তিন জবি শিক্ষার্থী অসুস্থ
  • তিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৫ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ
  • তিন দাবিতে অনশনে জবি শিক্ষার্থীরা
  • ডিসেম্বর মধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আশ্বাস জবি উপাচার্যের
  • জকসুর রোডম্যাপসহ ৩ দাবিতে অনশনে জবি শিক্ষার্থীরা
  • সম্পূরক বৃত্তি ও জকসু নির্বাচনের রূপরেখাসহ তিন দাবিতে অনশনে ৫ শিক্ষার্থী