জামায়াতে ইসলামীর ডা. শফিকুর রহমান আমির বলেছেন, ৫ আগস্টের পর শহীদের রক্তের প্রতি সম্মান দেখানো উচিত ছিল। কিন্তু কোন কোন দল সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে নিজেদের সহকর্মীদের সামাল দিতে। যেখানেই যাই,  শুনতে হয় রেট (চাঁদাবাজির) আগের চেয়ে বেশি। কেন রেট বেশি হবে? রেটই তো থাকবে না। চিহ্নিত অপরাধীদের ধরে পুলিশ থানায় নেওয়ার আগেই তদবির থানায় চলে আসে। এই ধারা বন্ধ করতে হবে। জামায়াতের লোকেরাও যদি এটা করে, মানুষ জামায়াতকে ঘৃণা করবে। এ কাজ যারাই করবে, তাদেরকেই ঘৃণা করবে।

শনিবার রাজধানীর মগবাজারে আল-ফালাহ মিলনায়তনে দুই দিনব্যাপী জেলা ও মহানগর জামায়া‌তের আমির সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে তিনি এসব কথা বলেন। 

আবারও আনুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি করে শফিকুর রহমান বলেছেন, প্রচলিত পদ্ধতিতে লেখাপড়া না জানা লোকজনও সংসদ সদস্য হয়ে গেছে। তারা কী আইন রচনা করবে! তারা কোন আইন সংস্কারের যোগ্যতা রাখেন? তাই যে দল যত শতাংশ ভোট পাবে, তত আসন পাবে। এতে দল যত ছোটই হোক, কারও দয়ার পাত্র হবে না। 

রমজান এবং আবহাওয়া বিবেচনায় আগামী ফেব্রুয়ারি কিংবা এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচন হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন জামায়াত আমির।  আগামী ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড.

মুহাম্মদ ইউনূস। 

শ‌ফিকুর রহমান ব‌লেন, সংস্কার কার্যক্রম যদি আক্ষরিকভাবেই গতিশীল করা হয় এবং অংশীজনরা সহযোগিতা করেন, তবে সরকার ঘোষিত সময়ের মধ্যে সংস্কার করে নির্বাচন সম্ভব। 

নির্বাচনের আগে জুলাই গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান করার দাবি করে তিনি বলেন, বুঝি স্বল্প সময় সব বিচার সম্ভব নয়। কিছু বিচার তো করতে হবে, যেন জাতির আস্থা তৈরি হয়। যদি  বিচার হয়, তবে আগামী নির্বাচনে কালো টাকা এবং পেশী শক্তির প্রভাব খাটাতে পারবে না। বিচার যদি না হলে আশঙ্কা থেকেই যাবে। 

দেশে অস্থিরতা থাকলে অর্থনীতি ভেঙে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে সতর্ক করে জামায়াত আমির বলেন,  অবশ্যই সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে। এজন্য অবশ্যই সংস্কার  করতে হবে।

জামায়াত আমির আবারও নারী সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদের না‌কি ফ্যাসিবাদীদের পতন হ‌য়ে‌ছে চিন্তা করতে হচ্ছে। সরকার জন-আকাঙ্ক্ষার মাধ্যমে গঠিত হয়েছে। তাদের সহযোগিতা করছি। তবে সরকারের কিছু উপদেষ্টা অনাকাঙ্ক্ষিত কাজ করছেন। 

আমির সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জামায়া‌তের সে‌ক্রেটা‌রি জেনা‌রেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম, ড. হামিদুর রহমান আযাদ, মাওলানা আবদুল হালিমসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ম য় ত আম র জ ম য় ত আম র র রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

৩০ ঘণ্টা পরও খোলা হয়নি শাহ আমানত হল প্রাধ্যক্ষের কক্ষের তালা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আমানত হলের প্রাধ্যক্ষের কক্ষে আবাসিক শিক্ষার্থীরা তালা দেওয়ার ৩০ ঘণ্টা পর আজ সোমবার দুপুরেও তা খোলা হয়নি। উল্টো আজ শিক্ষার্থীরা প্রধ্যক্ষের কক্ষের নামফলকও সরিয়ে ফেলেন। গতকাল রোববার সকালে আর্থিক অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীরা প্রাধ্যক্ষের কক্ষে তালা দেন। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অধ্যাপক চৌধুরী মোহাম্মদ মনিরুল হাসান আলোচনার প্রস্তাবও দিলেও শিক্ষার্থীরা তা ফিরিয়ে দিয়েছেন। নতুন প্রাধ্যক্ষ নিয়োগ ও অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়া আলোচনায় বসবেন না বলে হল সংসদের নেতারা জানিয়েছেন।

আজ দুপুর ১২টার দিকে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক চৌ ধুরী মোহাম্মদ মনিরুল হাসান হলের গৃহশিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সঙ্গে নিয়ে হলে যান। তিনি হল সংসদের প্রাকর্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তবে আবাসিক শিক্ষার্থী ও হল সংসদের নেতারা সেখানে উপস্থিত হননি।

প্রাধ্যক্ষ দেখা করতে চাইলেও হল সংসদের সদস্যরা তাতে রাজি হননি বলে জানান শাহ আমানত হল সংসদের ভিপি জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, অভিযোগগুলো তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত আগের মতো সম্পর্ক বজায় রাখা সম্ভব নয়। তিনি আরও জানান, দাপ্তরিক কাজ যাতে ব্যাহত না হয়—এ জন্য হলের আরেকটি অফিস কক্ষ খোলা রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মনিরুল হাসান বলেন, ‘আমি গৃহশিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে হলে গিয়েছিলাম আলোচনায় বসতে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আসেননি। পরে সহউপাচার্যের (একাডেমিক) সঙ্গে দেখা করতে গেলে তিনি আমাকে দাপ্তরিক কাজ চালিয়ে যেতে বলেন এবং উপাচার্য চীন সফর শেষে দেশে ফিরলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খান বলেন, গতকাল হল সংসদের প্রতিনিধিরা তাঁর কাছে একটি স্মারকলিপি দেন। তিনি সময় চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আজ প্রাধ্যক্ষ এসে জানিয়েছেন, তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করেছেন এবং ভবিষ্যতেও করতে চান। কিন্তু উপাচার্য ও সহউপাচার্য (প্রশাসনিক) অনুপস্থিত থাকায় আপাতত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে না। উপাচার্য দেশে ফিরলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

গতকাল আবাসিক শিক্ষার্থীদের সম্মতিতে হল সংসদের প্রতিনিধিরা প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, দায়িত্বে অবহেলা, অসৌজন্যমূলক আচরণ, অনিয়ম ও আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তাঁর কক্ষে তালা দেন। অভিযোগে বলা হয়—হল স্টোরের মালামাল নিয়মবহির্ভূতভাবে বিক্রি করা হয়েছে, দরজা-জানালার মেরামত হয়নি, দ্বিতীয় ডাইনিং চালু হয়নি এবং সাইকেল স্ট্যান্ডসহ মৌলিক সুবিধা নিশ্চিত করা হয়নি। এসব অভিযোগ তাঁরা সহ–উপাচার্যের কাছে লিখিতভাবে জমা দিয়েছেন। তবে প্রাধ্যক্ষ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অনেক কাজই বাজেট ও প্রশাসনিক অনুমোদনের ওপর নির্ভরশীল এবং তিনি নিয়মিতভাবে উন্নয়ন কার্যক্রম এগিয়ে নিতে চেষ্টা করছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ