এইচএসসি পরীক্ষার ১৬৭ ‘ভেন্যু কেন্দ্র’ বাতিল
Published: 6th, May 2025 GMT
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড। গতকাল সোমবার এখানে আসেন লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার হাজিরহাট উপকূল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ জামাল উদ্দিন তালুকদার। ওয়েবসাইটে এইচএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র তালিকা দেখে উদ্বিগ্ন ছিলেন তিনি। বোর্ডের উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে নতুন কেন্দ্র স্থাপনের আবেদন জানিয়ে অধ্যক্ষ বলেন, আগে একই এলাকায় ভেন্যু কেন্দ্রে তাঁর কলেজের পরীক্ষা নেওয়া হয়। এখন অনেক দূরে সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ কলেজ কেন্দ্রে প্রায় ৬০০ পরীক্ষার্থীর অনেকেই যাবেন না।
এ সময় বোর্ড থেকে তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়, এবার কমলনগরে নতুন কেন্দ্র স্থাপন সম্ভব নয়। চূড়ান্ত তালিকা মন্ত্রণালয় ও বিজি প্রেসে পাঠানো হয়েছে। বোর্ড সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ বছর ১৬৭টি ভেন্যু কেন্দ্র বাতিল হয়েছে। এ খবরে বোর্ডের অধীন ছয় জেলার বিভিন্ন উপজেলার কেন্দ্র বিন্যাস ও আপত্তি সমাধান করতে গিয়ে গলদঘর্ম অবস্থা তাদের। অধ্যক্ষ জামাল উদ্দিনের মতো অনেকে পছন্দের কেন্দ্র পেতে তদবির ও বোর্ডে দৌড়ঝাঁপ করছেন। তাদের কেউ পেয়েছেন নিজের পছন্দের কেন্দ্র। অনেক প্রতিষ্ঠান গেছে পাশের জেলায়।
বোর্ড থেকে জানা গেছে, কলেজের শিক্ষার্থীদের নিজস্ব তত্ত্বাবধানে নিকটবর্তী অন্য প্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ রেখে পরীক্ষা নেওয়ার বিতর্কিত ও সমালোচিত পদ্ধতি ছিল 'ভেন্যু কেন্দ্র' পদ্ধতি। সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ড এসব কেন্দ্র বাতিল করে। এতে কুমিল্লা বোর্ডের অধীন কুমিল্লা, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালী, ফেনী ও লক্ষ্মীপুর জেলায় কেন্দ্র চূড়ান্ত করতে গিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। এক সপ্তাহে চূড়ান্ত করেছে ১৯৩টি কেন্দ্র। গত বছর এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল, এমন ১৬৭টি ভেন্যু কেন্দ্র বাতিল হয়েছে।
গত ২৮ এপ্রিল বোর্ডের ওয়েবসাইটে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়। এর আগে খসড়া তালিকার কিছু কলেজের নাম প্রত্যাহার করে সংযুক্ত করা হয় অন্য কেন্দ্রে। খসড়া তালিকায় দেখা যায়, দেবিদ্বারের সুজাত আলী সরকারি কলেজ কেন্দ্রে এবিএম গোলাম মোস্তফা আদর্শ ডিগ্রি কলেজ ও মোহাম্মদপুর সেরাজুল হক কলেজের নাম ছিল। চূড়ান্ত তালিকায় যাতায়াতে কুমিল্লা বোর্ড কম দূরত্ব হলেও সেরাজুল হক কলেজের শিক্ষার্থীদের একই উপজেলার রাজামেহার ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী কলেজ কেন্দ্রে দেওয়া হয়েছে। আর বড়শালঘর গোলাম মোস্তফা কলেজের শিক্ষার্থীদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবার মিয়া আবদুল্লাহ ওয়াজেদ মহিলা কলেজে স্থানান্তর করা হয়।
বড়শালঘর থেকে কসবার কলেজের দূরত্ব প্রায় ২২ কিলোমিটার। বিষয়টি নিয়ে কলেজের দায়িত্বশীল কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি। বোর্ড সূত্র বলছে, দুটি কলেজই (শালঘর ও মোহাম্মদপুর) দেবিদ্বার সরকারি কলেজে থাকতে অপারগতা প্রকাশ করায় জটিলতা তৈরি হয়। দেবিদ্বার জোবেদা খাতুন মহিলা কলেজ কেন্দ্র থেকে জামরগঞ্জ মীর আবদুল গফুর কলেজের মানবিক ও বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থী সংযুক্ত করা হয় বানিজী বিভাগ রাখা হয় জোবেদা খাতুন মহিলা কলেজে।
পরীক্ষার্থীদের আপত্তি ও স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশে সরকারি কলেজ কেন্দ্রেই জাফরগঞ্জ কলেজের তিন বিভাগের ছয় শতাধিক পরীক্ষার্থীকে একসঙ্গে রাখা হয়েছে। সোমবার বোর্ডের উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সালাহউদ্দিন এ তথ্য জানান। দেবিদ্বার উপজেলার মোহনপুর পাবলিক কলেজ কেন্দ্র রাখা হয়েছে পাশের উপজেলা চান্দিনা রেদোয়ান আহমেদ ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে। অথচ পাশেই মোহাম্মদপুর সেরাজুল হক কলেজ কেন্দ্র। মুরাদনগরের বাঁশকাইট ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া কলেজের কেন্দ্র রাখা হয়েছিল প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরের শামছুল হক কলেজে। পরে পরিবর্তন করে আনা হয় কোম্পানীগঞ্জ বদিউল আলম ডিগ্রি কলেজে।
আগামী ২৬ জুন এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। শেষ হবে ১০ আগস্ট। এবার কুমিল্লা বোর্ডে পরীক্ষায় লক্ষাধিক পরীক্ষার্থীর অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক রুনা নাছরীন বলেন, এবারই প্রথম ১৬৭টি ভেন্যু কেন্দ্র বাতিল করা হয়েছে। নতুন করে কেন্দ্র বিন্যাস করতে গিয়ে কিছু অভিযোগ আসায় এগুলো নিষ্পত্তি করে চূড়ান্ত তালিকা করা হয়েছে। ২০২৬ সালের পরীক্ষার আগে নতুন কেন্দ্র বিন্যাস হবে। এসব সমস্যাগুলো আর থাকবে না।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কল জ ক ন দ র পর ক ষ র থ র পর ক ষ উপজ ল র র উপজ ল ক কল জ কল জ র নত ন ক সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
এইচএসসি পরীক্ষায় কোন ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে পরীক্ষার্থীরা, জানাল শিক্ষা বোর্ড
এ বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় নির্ধারিত কয়েকটি মডেলের সায়েন্টিফিক নন প্রোগ্রামেবল ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবেন পরীক্ষার্থীরা। এছাড়া সাধারণ ক্যালকুলেটরও ব্যবহার করা যাবে। ক্যালকুলেটরের নির্দিষ্ট মডেল উল্লেখ করে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের এক সংশোধিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে,
কোন ধরনের ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে শিক্ষার্থীরা। এফএক্স- ১০০এমএস, এফএক্স-৯৯১ইএস, এফএক্স-৫৭০এমএস, এফএক্স-৮২এমএস, এফ এক্স-৯৯১ইএক্স, এফএক্স-৯৯১এমএস, এফএক্স-৯৯১ইএস প্লাস মডেলের ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে শিক্ষার্থীরা।
উল্লেখিত মডেল ছাড়াও শিক্ষার্থীরা সাধারণ ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবেন।
আগামী ২৬ জুন থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে।