আব্বাস উদ্দীনের ছেলে এই পরিচয়ের গণ্ডিতে নিজেকে আটকে রাখেননি তিনি
Published: 10th, May 2025 GMT
সেদিন। ভরা পূর্ণিমা। চারপাশে মন উথাল-পাথাল করা জ্যোৎস্না। চাঁদের আলোয় যেন ভেসে যাচ্ছে গোটা গ্রাম। বইছে মৃদুমন্দ বাতাস। গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন গোটা গ্রাম। ঘুম নেই শুধু একটি বাড়ির মানুষজনের চোখে। বারান্দায় হারমোনিয়াম নিয়ে বসেছেন সেই বাড়ির কর্তা মানুষটি। সুর মিলিয়ে তিনি গান গেয়ে চলেছেন একের পর এক। সুরের আবেশে জলে ভেসে যাচ্ছে তার দুই চোখ। তাকে ঘিরে বসেছে পরিবারের সবাই। মন্ত্রমুগ্ধ মানুষের দৃষ্টি সবার চোখে। বাইরে রহস্যময় চাঁদের আলো। আর ঘরে দরাজ কণ্ঠ। সব মিলিয়ে মন কেমন করা এক অনুভূতি। ঘুম কী আর আসে কারো চোখে? সুরের মায়ায় মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে ঘুমানোর কথা আর মনে থাকে না ছেলে-বুড়ো কারোরই।
বহুদিন আগের স্মৃতি সেসব। তখন সবে আট কী সাত বছর বয়স মুস্তাফা জামান আব্বাসীর। কিন্তু কুচবিহারের গ্রামে বসে বাংলার সঙ্গীত জগতের কিংবদন্তি বাবা আব্বাস উদ্দীনের কণ্ঠে সে গান শোনার স্মৃতি এখনো দিব্যি মনে আছে তার। এখনো চোখ বন্ধ করলে পরিষ্কার কানে বাজে বাবার দরাজ কণ্ঠ। বাবা বিগত হয়েছেন অনেক দিন। কিন্তু তার বিখ্যাত বাবার দরাজ কন্ঠের মতো এখনো সঙ্গীতের মোহ ছেড়ে যায়নি ছেলে আব্বাসীকে। ৭০ ছুঁই ছুঁই বয়সে এসেও আজ দেশের সঙ্গীত জগতের একটা দিক অনেকখানি আলোকিত করে রেখেছেন তিনি। কেবল আব্বাস উদ্দীনের ছেলে এই পরিচয়ের গণ্ডিতে নিজেকে আটকে রাখেননি তিনি। নিজে বড় মাপের একজন শিল্পী আব্বাসী। সেই মাপের কাজও করেছেন অনেক। বাবা ছেলের মধ্যে বপন করে গিয়েছিলেন সঙ্গীত প্রেমের যে বীজ, সেটা দিনে দিনে ডালপালা ছড়িয়ে হয়ে উঠেছে রীতিমতো মহীরুহ। কেবল দেশে নয়, বাংলাদেশের গানকে তিনি পরিচয় করিয়ে দিতে চেয়েছেন বিশ্ব সঙ্গীত পরিমণ্ডলে। ভিনদেশে প্রতিনিধিত্ব করেছেন বাংলাদেশের নিজস্ব সংস্কৃতির। বাংলার গানের কত রত্ন ছড়িয়ে আছে গ্রামবাংলার পথেঘাটে। গভীর মমতায় তিনি কুড়িয়ে এনেছেন সেসব মণি-মানিক্য। ছুটে গেছেন বাউল-ফকিরদের দরজায় দরজায়। সংগ্রহ করেছেন তাদের গান।
সুর সাধনায় মগ্ন মুস্তাফা জামান আব্বাসী, ২০০৬.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঝালকাঠিতে রাতের আঁধারে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের পোস্টার
ঝালকাঠিতে ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ঝালকাঠি জেলা শাখার সদস্যরা শহরের বিভিন্ন স্থানে পোস্টার লাগিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) রাতে ঝালকাঠি জেলা ছাত্রলীগের পক্ষে বরিশাল-ঝালকাঠি আঞ্চলিক মহাসড়কের নলছিটি থানার বিসিক, প্রতাপ, বরইতলা, ভৈরবপাশা, ষাটপাকিয়া, শ্রীরামপুর, আমিরাবাদসহ সড়কের পাশে থাকা বিভিন্ন মাইলফলকে এসব পোস্টার লাগানো হয়।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সকালে বিষয়টি সকলে নজরে আসে।
একাধিক সূত্র জানায়, রাতের আঁধারেই এসব পোস্টার লাগানো হয়। ঘটনার পরপরই ঝালকাঠি-পিরোজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি পেট্রোল পাম্প মোড়সহ শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট বসানো হয়। পাশাপাশি টহলে রয়েছে জেলা পুলিশের বিভিন্ন টিম। পুলিশের বিশেষ নজরদারি ও সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদও চলছে।
জেলা বিএনপির সদস্য (দপ্তরের দায়িত্বে) অ্যাডভোকেট মো. মিজানুর রহমান মুবিন বলেন, ‘‘নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ রাতের আঁধারে পোস্টারিং করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। গণঅভ্যুত্থানের পর তাদের সাহস নেই প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মসূচি করার, তাই চোরের মতো রাতের আঁধারে পোস্টার লাগিয়েছে।’’
এদিকে, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ঝালকাঠি জেলা শাখার সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মাসুদ মধু তার ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে পোস্টারের ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘‘১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঝালকাঠি জেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ঝালকাঠির বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার লাগানো হয়েছে। যারা পোস্টার লাগিয়েছে, তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।’’
নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুস ছালাম বলেন, “পোস্টারগুলো কারা লাগিয়েছে, সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। বিষয়টি অনুসন্ধান করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘মহাসড়কে টহল পুলিশ কর্তব্য পালন করছে। হয়তো রাতের আঁধারে কেউ চোখ ফাঁকি দিয়ে পোস্টার লাগিয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। একই সঙ্গে যারা এ কাজ করেছে, তাদের শনাক্তেরও চেষ্টা চলছে।”
ঢাকা/অলোক/এস